Calcutta High Court,আইএএস-এর স্ত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টার ঘটনায় কলকাতা পুলিশের তদন্তে গাফিলতি, উষ্মা প্রকাশ হাইকোর্টের – calcutta high court rebuked police negligence in investigation of a crime case


অমিত চক্রবর্তী
একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্ত্রী, এক আইএএস অফিসারের স্ত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টার ঘটনায় কলকাতা পুলিশের তদন্তে গাফিলতিতে কলকাতা হাইকোর্ট উষ্মা প্রকাশ করেছে। হাইকোর্টে রাজ্য জানিয়েছে, এ ক্ষেত্রে লেক থানার পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা চরম গাফিলতির অভিযোগ নিয়ে লালবাজার তদন্ত করছে।

নতুন ফৌজদারি আইনে এমন গুরুতর অভিযোগে রুজু হওয়া মামলায় কোনও মহিলা পুলিশ অফিসারকে তদন্তকারী অফিসার অর্থাৎ আইও করার কথা থাকলেও ওই ঘটনায় পুরুষ অফিসারকে তদন্তের দায়িত্ব দেন থানার ওসি। আরও মারাত্মক অভিযোগ, নির্যাতিতা মহিলা গোটা ঘটনা নিয়ে অভিযোগ দায়ের করার পর সেই অভিযোগপত্রের সব চেয়ে গুরুতর অংশ আংশিক বদলে তুলনায় আইনের লঘু ধারা প্রয়োগ করা হয় মামলায়। অভিযুক্তকে আলিপুর আদালতে হাজির করানো হলে তাকে সে দিনই জামিন দেন বিচারক।

তদন্তে ওই ত্রুটির কথা জানিয়ে লালবাজারের কর্তাদের হাইকোর্ট সতর্ক করেছে। বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ পুলিশের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগে বিস্ময় প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে আদালত এই তদন্তে এক জন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনারকে নজরদারি করার নির্দেশ দিয়েছে। আগামী ২৩ অগস্ট পরবর্তী শুনানি, সে দিন তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্ট জমা দিতে হবে হাইকোর্টে।

একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার ওই কর্ত্রীর বাড়িতে গত ১৫ জুলাই সকালে মদ্যপ অবস্থায় হাজির হন, তাঁদেরই পারিবারিক বন্ধু, বছর ৫৩-র ওই অভিযুক্ত। পেশায় কন্ট্রাক্টর ওই ব্যক্তি কয়েক জন প্রভাবশালীর ঘনিষ্ঠ, এমনটাও সূত্রের খবর। মহিলার স্বামী আইএএস অফিসার এখন কর্মসূত্রে মুম্বইয়ে। অভিযোগ, মদ্যপ অবস্থায় বাড়িতে ঢুকে একা থাকা ওই মহিলাকে ভয় দেখিয়ে বিবস্ত্র করে তাঁর উপর শারীরিক অত্যাচার করা হয়। ওই মহিলা শেষ পর্যন্ত চিৎকার করে কোনও ভাবে রেহাই পান ওই ব্যক্তির হাত থেকে।

ঘটনার দিনই ওই মহিলা লেক থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। কিন্তু অভিযোগ, লেক থানার পুলিশ তাঁর লিখিত অভিযোগ নেওয়ার পর তাঁকে কী কী ভাবে শারীরিক অত্যাচার করা হয়, অভিযোগপত্রের সেই অংশ মূল এফআইআরে নথিভুক্ত না-করে তুলনায় হালকা ধারা প্রয়োগ করে মামলায়। বিষয়টি মহিলার কাছে বেমালুম চেপে যাওয়া হয়, এমনটাও অভিযোগ। সে দিনই সন্ধ্যায় অভিযুক্তকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে পর দিন পুলিশ আলিপুর আদালতে হাজির করায়।

পুলিশের গাফিলতির অভিযোগে ২৩ জুলাই হাইকোর্টে মামলা হয়। নির্যাতিতার আইনজীবী অন্তরীক্ষ বসুর অভিযোগ, হাইকোর্টে মামলা হওয়ার আগে মহিলার মেডিক্যাল টেস্ট করানো হয়নি। এমন অভিযোগের ক্ষেত্রে নতুন ফৌজদারি আইনে মহিলা পুলিশ অফিসারকে দিয়ে তদন্ত বাধ্যতামূলক হলেও পুরুষ অফিসারকে দিয়ে তদন্ত করানো হয়। এ দিন হাইকোর্টে নির্যাতিতার আইনজীবী বলেন, ‘হাইকোর্টে মামলার জেরে ঘটনার ২৭ দিন পর মহিলার মেডিক্যাল টেস্ট করানোর জন্য তাঁকে পুলিশ ডাকে। তখন এক জন মহিলা অফিসারই তদন্তকারী অফিসার বা আইও হন।’

এ দিন হাইকোর্টে রাজ্যের তরফে অমিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় লেক থানার পুলিশের তদন্তে আংশিক ত্রুটির কথা মেনে নিয়ে জানান, তদন্তকারী অফিসারকে শোকজ় করা হয়েছে, মহিলা পুলিশ অফিসারের অধীনে এখন তদন্ত হচ্ছে। অভিযুক্তর জামিন খারিজের জন্য আবেদন করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *