নিয়মিত ডায়েরি লিখতেন মেয়ে। সেটা জানতেন বাবা-মা। এমনকী ওই তরুণী চিকিৎসক যে দিন খুন, ধর্ষণের শিকার হন, সেই অকুস্থল থেকে উদ্ধারও হয় একটি ডায়েরি।সূত্রের খবর, সেই ডায়েরির কয়েকটি পাতা ছেঁড়া ছিল। সে রাতে ঠিক কী ঘটেছিল, তার ইঙ্গিত ডায়েরির পাতায় লেখা থাকতে পারে — এমনই সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন নিহত চিকিৎসকের বাবা-মা। ঘটনাচক্রে তদন্তভার নেওয়ার পরই একটি ডায়েরি সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেন সিটের তদন্তকারী অফিসাররা।
সূত্রের খবর, নিহত ওই চিকিৎসকের দেহের পাশ থেকে উদ্ধার হয় ডায়েরিটি, যার কিছু পাতা ছেঁড়া ছিল। সেই ডায়েরি এবং ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া ওই তরুণীর ল্যাপটপ আগেই বাজেয়াপ্ত করেছিল পুলিশ। লালবাজার সূত্রে খবর, সেই ডায়েরিতে এই ঘটনা সম্পর্কিত তেমন কোনও তথ্য পাননি সিটের তদন্তকারী অফিসাররা।
শনিবার সোদপুরের বাড়িতে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন নিহত চিকিৎসকের বাবা-মা। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তাঁরা বলেন, ‘এখন দেখতে পাচ্ছি, এই ঘটনার পিছনে অনেক বড় চক্র আছে। সেটা প্রত্যেকেই বুঝতে পেরেছে। হাসপাতালে অবৈধ কাজকর্ম নিশ্চয় হতো। যদিও এ ব্যাপারে মেয়ে আমাদের কিছু বলেনি। আমরা চিন্তা করব ভেবে কোনও টেনশন দিতে চাইত না। তবে মাঝে মধ্যে মেয়ে বলত, আরজি করে যেতে আর ভালো লাগে না। যে দিন ও মারা গিয়েছে, সে দিনের অনেক কথা অবশ্য ডায়েরিতে লিখে গিয়েছে। সব কিছু ডায়েরিতে আছে। পুলিশ তা সিজ় করেছে।’
ডায়েরিটিতে ঠিক কী লেখা আছে, তদন্তের স্বার্থে সে ব্যাপারে তাঁর বাবা-মা কিছু বলতে চাননি। একটি সূত্রে খবর, ওই তরুণী নিয়মিতই ডায়েরি লিখতেন। ওই দিনের ঘটনা সম্পর্কে তিনি আদৌ কিছু লিখে যেতে পেরেছিলেন কি না, তা জানতে কলকাতা পুলিশের পরিবর্তে সিবিআইয়ের উপরেই ভরসা রাখছে নির্যাতিতার পরিবার।
তাঁরা এ দিন স্পষ্ট বলেছেন, ‘প্রথমে পুলিশকে ভরসা করেছিলাম। পরে কিছু গাফিলতি নজরে আসায় সিবিআই চেয়েছিলাম।’ এ দিন আরজি করের সেমিনার হল লাগোয়া দেওয়াল ভাঙা নিয়েও মুখ খুলেছেন নির্যাতিতার বাবা-মা। তাঁরা জানান, সিবিআই বিষয়টি দেখছে। মহিলা কমিশনেরও বিষয়টি নজরে এসেছিল। নিশ্চয়ই কিছু চাপার চেষ্টা করা হয়েছিল।
একই সঙ্গে তাঁরা এ দিন জানিয়েছেন, আদৌ সেমিনার রুমে অত্যাচার করে তাঁদের মেয়েকে খুন করা হয়েছিল কি না, তা নিয়ে তাঁদের সন্দেহ আছে। তাঁদের কথায়, ‘হতে পারে, অন্য ঘরে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। তাই প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করা হয়েছিল।’ আরজি কর কর্তৃপক্ষকে এ দিনও কাঠগড়ায় তুলেছেন তাঁরা।
অভিযোগ, আট দিন হয়ে গেল, আরজি কর কর্তৃপক্ষ তাঁদের সঙ্গে কোনও কথা বলেননি। প্রথম দিন কলেজের অধ্যক্ষ বলেছিলেন, কথা বলতে হলে তাঁর অফিস ঘরে যেতে হবে।