অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর সম্পত মীনার নেতৃত্বাধীন ২৫ জনের টিম বর্তমানে আরজি করের ঘটনার তদন্ত চালাচ্ছে। সামগ্রিকভাবে নজরদারি চালাচ্ছে এই টিম। আর গ্রাউন্ড স্তরে তদন্ত করছে সীমা পাহুজার দল।
এই সীমা পাহুজাই হিমাচলপ্রদেশের দশম শ্রেণির ছাত্রীর গুড়িয়ার ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার কিনারা করেছিলেন। একটি ব্লাইন্ড কেস অনায়াসে সমাধান করে বাহবা কুড়োন এই দুঁদে অফিসার।
গুড়িয়া কাণ্ড
২০১৭ সালের এই গুড়িয়া কাণ্ড নাড়িয়ে দিয়েছিল গোটা দেশকে। স্কুল থেকে ফেরার পথে নিখোঁজ হয়ে যায় দশম শ্রেণির ছাত্রীটি। দু’দিন পর একটি জঙ্গল থেকে মেয়েটির দেহ উদ্ধার হয়। ধর্ষণের মামলা রুজু হয়। ২০২১ সালে এই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয় অনীল কুমার নামে এক কাঠুরে। তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা হয়।
এই মামলাটি কী ভাবে সমাধান হয় তা ২০১৮ সালে প্রকাশ্যে আনে CBI। ২৫০ জনের DNA নমুনা মিলিয়ে, প্রায় হাজারখানেক মানুষকে জিজ্ঞাসাবাদ করে অবশেষে অপরাধী ধরা পড়ে CBI-এর জালে।
উন্নাওয়ে ধর্ষণ
২০১৭ সালে ঠিক একইভাবে উন্নাওয়ের ধর্ষণের মামলাটিও ‘ক্র্যাক’ করে CBI-এর এই নারী ব্রিগেড। ১৭ বছরের এক দলিত কিশোরীকে ধর্ষণের অপরাধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয় প্রাক্তন BJP বিধায়ক কুলদীপ সিং সেঙ্গারের। জেল হেফাজতে থাকাকালীন নির্যাতিতার বাবার মৃত্যুর জন্যও দোষী সাব্যস্ত হয় এই প্রাক্তন BJP নেতা। সেই মর্মেও তার ১০ বছরের জেল হয়।
হাথরসের ঘটনা
২০২০ সালের হাথরসের ঘটনা চাঞ্চল্য ফেলে দিয়েছিল দেশে। তথাকথিত উচ্চবর্ণের চার ব্যক্তির লালসার শিকার হয় ১৯ বছরের এক নিম্নবর্ণের তরুণী। ১৫ দিন ধরে লড়াই করার পর দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে মৃত্যু হয় নির্যাতিতার। পরিবারের অনুমতি ছাড়াই তড়িঘড়ি উন্নাওয়ের নির্যাতিতার দেহ সৎকার করে দেওয়ার অভিযোগে উত্তাল হয়ে ওঠে দেশ। এরপর চারজনের মধ্যে তিন অভিযুক্তকেই মুক্তি দেওয়া হয়। চতু্র্থ জন সাজা পেলেও তার বিরুদ্ধে খুন কিংবা ধর্ষণের কোনও ধারা রুজু হয়নি।
উন্নাওয়ের ধর্ষিতার বয়ান কিছুটা হলেও রেকর্ড করতে পেরেছিল পুলিশ। যদিও সেই বয়ানের সঙ্গে ফরেন্সিক তথ্যপ্রমাণ মেলেনি। আদালতে পুলিশ দাবি করেছিল, ধর্ষণের কোনও চিহ্ন মেলেনি। গলায় আঘাতের জন্য মৃত্যু হয়েছে তরুণীর।
মামলার পরতে পরতে ছিল নাটকীয় মোড়। FIR দায়ের করতে বিলম্ব, ধর্ষণের অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া, তাড়াহুড়ো করে সৎকারের মতো পর পর ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলিতে উত্তেজিত হয়ে ওঠে জনতা। ২০২০ সালের ৩ অক্টোবর উত্তরপ্রদেশ সরকার পাঁচজন পুলিশ আধিকারিককে সাসপেন্ড করে।