Bardhaman Medical College: ‘তা হলে কি ফিরিয়ে নেব অঙ্গীকারপত্র?’ – people are thinking of withdrawing the pledge of body donation from bardhaman medical college


এই সময়, বর্ধমান: অ্যানাটমি বিভাগ থেকে পাচার হচ্ছে বেওয়ারিশ লাশ। সেই ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠেছে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তনী প্রভাবশালী চিকিৎসক অভীক দে’র দিকে। শনিবার ‘এই সময়’-এ সেই প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর দেহদানের ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন বহু মানুষ। এমনকী কেউ কেউ দেহদানের অঙ্গীকার ফিরিয়ে নেওয়ার কথাও ভাবতে শুরু করেছেন। চিকিৎসক মহলের বক্তব্য, এই ঘটনায় দেহদানের দীর্ঘ আন্দোলনে ব্যাঘাত ঘটবে।দেহদানের অঙ্গীকার করেছিলেন জীবনবিমার অবসরপ্রাপ্ত অফিসার দেবাশিস ভট্টাচার্যর স্ত্রী আরাধনা ভট্টাচার্য। ২০১৮-র ১৭ অক্টোবর তিনি প্রয়াত হন। স্ত্রীর ইচ্ছা অনুযায়ী মেডিক্যাল কলেজে দেহদান করেছিলেন দেবাশিস। শনিবার তিনি বলেন, ‘জানি না সেই দেহ নিয়ে এমন কিছু হয়েছে কিনা! এ রাজ্যে মরেও তো শান্তি নেই। চিকিৎসা বিজ্ঞানের কাজে কি সত্যিই লেগেছে আমাদের প্রিয়জনের দেহ? নাকি ওর দেহও পাচার হয়ে গিয়েছে?’

তিনিও দেহদানের অঙ্গীকার করেছিলেন জানিয়ে বলেন, ‘এ সব দেখে এখন ভাবছি, সেই অঙ্গীকার ফিরিয়ে নেব কিনা। মানুষের মৃত্যুকেও এরা সম্মান দিতে জানে না।’ দেহদানের অঙ্গীকার করেছেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন সহ-রেজিস্ট্রার দেবমাল্য ঘোষ। তাঁর কথায়, ‘ডাক্তারি শাস্ত্রে কাজে লাগবে বলে দেহদানের অঙ্গীকার করেছিলাম। এখন আমি সত্যিই এটা নিয়ে ভাবছি।’

চিকিৎসা বিজ্ঞানে অগ্রগতির জন্য এক সময়ে দেহদান আন্দোলন গড়ে ওঠে রাজ্যে। মৃত্যুর পরে দাহ না করে গবেষণার জন্য দেহদানের আবেদন করেছিলেন চিকিৎসক, সমাজকর্মী থেকে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। পরে বিষয়টি একটি সামাজিক আন্দোলনের রূপ নেয়। ধারাবাহিক প্রচারে বহু মানুষ দেহদান করতে এগিয়ে আসেন। সেখানে অ্যানাটমি বিভাগ থেকে দেহ পাচারের ঘটনায় তাঁরা ব্যথিত।

Bardhaman Medical College: শববাহী শকটের দোতলায় দেহ, নীচে পাচারের বেওয়ারিশ লাশ
বিশিষ্ট শল্য চিকিৎসক সৈকত সরকার বলেন, ‘অ্যানাটমি বুঝতে এমবিবিএস কোর্সে ক্যাডাভেরিক ডিসেকশন পড়ানো হয়। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের ঘটনায় আমরাও চিন্তিত।’ লেখক মানব বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, ‘এ বার দেহদানের অঙ্গীকারপত্রে সই করার সময়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কাছে আমরা লিখিত ভাবে জানতে চাইব যে, মৃত্যুর পরে দেহ পাচার হবে না।’

এ নিয়ে সরকারের কঠোর পদক্ষেপ করা উচিত বলে জানিয়েছেন অ্যাসোসিয়েশন অফ হেল্‌থ সার্ভিসের যুগ্ম সম্পাদক সুবর্ণ গোস্বামী। তিনি বলেন, ‘এমন ঘটনার কথা মানুষ যত জানতে পারছেন, স্বাভাবিক ভাবেই তাঁরা দেহদান নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেছেন। আমাকেও আজ সকাল থেকে অনেকে ফোন করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে মেডিক্যাল ছাত্রদের পড়াশোনার সুবিধার্থে দেহদানের আন্দোলন চালিয়ে এসেছি আমরা। এমন ঘটনায় সেই আন্দোলন বাধাপ্রাপ্ত হবে। মানুষকে ফের নতুন করে বোঝাতে হবে। কঠোর পদক্ষেপ করে মানুষকে জানানো উচিত সরকারের।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *