দেশের বিভিন্ন হাইকোর্টে মামলার পাহাড় জমে থাকা নিয়ে বিভিন্ন সময়ে সমালোচনা হয়। খোদ দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ও বিচারব্যবস্থার দীর্ঘসূত্রতা নিয়ে একাধিক বার প্রশ্ন তুলেছেন। তার পরেও মামলার পাহাড় কমে না। আইনজীবীদের একাংশ বলছেন, বিভিন্ন সময়ে প্রধান বিচারপতিরা কিছু পুরোনো মামলা তুলে তার শুনানির চেষ্টা করেন।
কিন্তু তখন দেখা যায়, সেই মামলার প্রয়োজনীয়তাই ফুরিয়ে গিয়েছে। বছর তিনেক আগে এই হাইকোর্টই ৪০ বছর ধরে জেলে থাকা এক নেপালের বাসিন্দাকে মুক্তি দিয়েছিল এমনই এক তামাদি হয়ে যাওয়া মামলা সামনে এনে। সেই আবহে বাঁকুড়ার বাসিন্দা পেশায় রেস্তোরাঁ-কর্মী বৈদ্যনাথকে মামলা থেকে মুক্তি দেওয়াকে একটা উদাহরণ হিসেবে দেখছেন আইনজীবীরা। মামলাকারীরর আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘আদালতও এই মামলার নিষ্পত্তি করতে গিয়ে বিচারব্যবস্থার দীর্ঘসূত্রতার কথাই মনে করিয়ে দিয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত ১৯৯৫ সালে। খাবারের দোকানে খাদ্যের মান পরীক্ষার জন্য এসেছিলেন স্থানীয় পুরসভার কর্মীরা। তাঁরা রেস্তোরাঁগুলির খাবারের গুণমান মেশিন দিয়ে গুণমান পরীক্ষা শুরু করতেই এলাকায় তাঁদের ঘিরে বিক্ষোভ শুরু হয় বলে অভিযোগ। তাঁরা পুরকর্মী কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে হুমকি দেওয়া হয়। ভিড়ের মধ্যে থেকে কেউ পুরকর্মীদের গায়েও হাত তোলেন বলে অভিযোগ।
ওই রেঁস্তোরার কর্মী বৈদ্যনাথই পুরকর্মীদের মারধর করেন— এই অভিযোগে থানায় মামলা রুজু হয়। সেই মামলায় বাঁকুড়া জজ কোর্ট অভিযুক্ত বৈদ্যনাথকে এক বছরের জেলের সাজা দেয়। হাইকোর্টে রায় চ্যালেঞ্জ করেন তিনি। ২০০৪ সালে সেই মামলা দায়ের হলেও তা কার্যত ঠান্ডা ঘরে চলে যায়। এত বছর বাদে মামলাটি উঠলে টানা শুনানি করে আদালত ওই অভিযুক্তকে শুধু আর্থিক জরিমানা করেই মামলার ভার থেকে তাঁকে মুক্তি দেয়।