অনাড়ম্বর ভাবে পুজোর জন্য সল্টলেকের ইই ব্লকের কমিটির কাছে এলাকার সাধারণ মহিলারা পিটিশন দিয়েছিলেন বলে সূত্রের খবর। সেই দাবি মেনে এই পুজোয় এ বার অযথা বাড়াবাড়ি হচ্ছে না। সেখানে চতুর্থী-পঞ্চমী হয়ে গেলেও এখনও বাজছে না মাইক। পুজো কমিটির কালচারাল সাব-কমিটির অন্যতম কনভেনর শঙ্কর সেন মজুমদার বলছেন, ‘যে ভাবে উৎসব হয়, এ বার সে ভাবে হচ্ছে না। আমার মতো অনেক মানুষকেই যন্ত্রণা কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে।’
সল্টলেকেরই এডি ব্লকেও এ বার পুজো জৌলুসহীন। প্রতি বছর এই পুজোর অন্যতম আকর্ষণ পাড়ার মানুষদের নিয়ে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা। এ বার রিহার্সাল শুরু হয়েছিল, কিন্তু অনেকেরই মন চায়নি পারফর্ম করতে। তাই এ বার সমস্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বাতিল হয়েছে। পুজোর উদ্যোক্তাদের অন্যতম নীলাঞ্জনা দে বলছেন, ‘আমি নিজে গান করি। রিহার্সালও শুরু করেছিলাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মনে হলো পারব না। তাই অনুষ্ঠান করছি না। মঞ্চটাই আর বাঁধা হয়নি।’
নিউ টাউনের বিসি ব্লকে মঞ্চ একটা তৈরি হয়েছে ঠিকই। কিন্তু নাম রাখা হয়েছে ‘তিলোত্তমা মঞ্চ।’ আনন্দ-অনুষ্ঠান নয়, এই মঞ্চকে নাগরিকরা ব্যবহার করবেন সাংস্কৃতিক প্রতিবাদের জন্যই। হচ্ছে না অন্য কোনও হুল্লোড়। পুজো কমিটির সম্পাদক সৌম্যদীপ মাইতি বলছেন, ‘এ বার মাইকও মণ্ডপের কাছে থাকবে। প্রয়োজন ছাড়া ব্যবহার করা হবে না। আলোও সীমিত থাকবে মণ্ডপের মধ্যেই। চতুর্দিকে আলো থাকছে না।’
দমদম পার্কের বাসিন্দা পায়েল ঘোষ থাকেন দুটো বড় পুজোর একেবারে সংযোগস্থলে। পায়েলের কথায়, ‘অন্য বার মহালয়া কাটলেই মাইক বাজে, গান হয়, ঘোষণা হয় পুজো মণ্ডপে এই সেলিব্রেটি ওই নেতা এসেছেন। এ বার এখনও পর্যন্ত সে সবের কিছুই শুনছি না।’
সেলিমপুর পল্লির পুজোয় এ বার অষ্টমী-নবমীতে আর পাড়ার লোকেরা একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করবেন না। গড়িয়ার শ্রীরামপুর কল্যাণ সমিতি সাধারণ সম্পাদক অশোক কর্মকার জানাচ্ছেন, এ বার জৌলুসহীন উদ্বোধন হয়েছে। পুজোর দিনগুলোয় মাইকে শুধু জরুরি ঘোষণা হবে। কোনও গান বাজবে না। বিসর্জনেও ব্যবহার করা হবে না কোনও বাদ্যযন্ত্র। অষ্টমীর ভোগ বিতরণ ছাড়া খাওয়া-দাওয়ার সব প্ল্যান বাতিল করা হয়েছে।