উলটপুরাণ! বাঘের আতঙ্কে সবাই যখন ঘরে, তখন খোলা আকাশের নীচে স্কুল করছে কচিকাঁচারা…।Tiger in Purulia people scared and confined themselves but children are under the sky reading in school


মনোরঞ্জন মিশ্র: বাঘিনীর আতঙ্ককে সঙ্গী করেই রাইকা পাহাড়ের কোলে খোলা আকাশের নীচে চলছে পঠনপাঠন। ঘটনা পুরুলিয়ার বান্দোয়ানের উদলবনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। গত দুদিন ধরে বাঘিনীর উপস্থিতি রয়েছে বান্দোয়ানের রাইকা পাহাড়ের জঙ্গলে। বাঘিনীকে খাঁচাবন্দি করতে হিমসিম খেতে হচ্ছে বন দফতরকে। আতঙ্কে গৃহবন্দি থাকছেন পাহাড় কোলের গ্রামের বাসিন্দাদের। এদিকে, রাইকা পাহাড়তলির গ্রাম উদলবনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই বাধ্য হয়ে খোলা আকাশের নীচে পঠনপাঠন চালাচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা।

আরও পড়ুন: Tiger in Purulia: পুরুলিয়ার জঙ্গল দাপিয়ে বেড়াচ্ছে যমুনা! বাঘিনীকে ধরতে কালঘাম ছুটছে বন দফতরের…

এমনিতে এখন বাঘিনীর আতঙ্কে ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাতে চাইছেন না গ্রামের অভিভাবকেরা। ফলে, পড়ুয়াদের উপস্থিতি একেবারেই কম। প্রায় পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে এই স্কুল বিল্ডিংয়ের অবস্থা ভগ্নপ্রায় হয়ে রয়েছে। বাধ্য হয়ে বছরের পর বছর স্কুল বিল্ডিংয়ে তালা ঝুলিয়ে খোলা আকাশের নীচে পঠনপাঠন চালান শিক্ষক-শিক্ষিকারা। বৃষ্টি হলে আশ্রয় নিতে হয় বারান্দায়। বিদ্যালয়ে রয়েছে ৪৫ জন ছাত্র-ছাত্রী, দুজন শিক্ষক।

এখন বাঘিনীর ভয়, আর তার মধ্যেই পাহাড়ের কোলে থাকা স্কুলে খোলা আকাশের নীচে পঠনপাঠন চলাচ্ছেন অভিভাবক থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকা সকলেই। তবে সকলেই আতঙ্কিত রয়েছেন। স্কুল বিল্ডিংয়ের জন্য বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা বার বার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা দফতরে আবেদন জানিয়েছন। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি বলে অভিযোগ। বাধ্য হয়েই এভাবেই খোকা আকাশের নীচে চলছে পঠনপাঠন। এই বিদ্যালয়-লাগোয়া রাইকা পাহাড়েই বর্তমানে রয়েছে বাঘিনী। ফলে বাঘিনীর আতঙ্ককে সঙ্গী করেই চলছে পঠনপাঠন।

গত ১৫ ডিসেম্বর ওড়িশার সিমলিপাল রির্জাভ ফরেস্ট থেকে চলে আসে একটি বাঘ। ঝাড়খণ্ডের গোটাশিলা পাহাড় ও সংলগ্ন জঙ্গল অতিক্রম করে সেটি পশ্চিমবঙ্গের জঙ্গলে ঢুকে পড়ে। শুরু হয় জঙ্গলঘেরা গ্রামে সাধারণ মানুষের আতঙ্কের দিন। বাঘ ধরতে নাজেহাল অবস্থা বন দফতরের। ওড়িশার সিমলিপাল রিজার্ভ ফরেস্টের একটি বিশেষ দল বাঘটির খোঁজে এক জঙ্গল থেকে আরেক জঙ্গলে অভিযান শুরু করেছিল। পরে পুরুলিয়ায় বাঘ ঢুকে পড়ার খবর শোনা যায়। সেখানেও চলছে বাঘের সন্ধান-অভিযান। টোপ দেওয়া হয়েছে। টোপ বাঘের পেটে যায়নি, বাঘও ধরা পড়েনি। তবে দু-একটি জায়গায় ছাগলের গায়ে বাঘের আঁচড় মিলেছে। তাই আতঙ্ক বাড়ছে।

আরও পড়ুন: Deadliest Day in Human History: বীভৎস! হাড়হিম! মুহূর্তে মৃত্যু প্রায় ১০ লক্ষ মানুষের! ইতিহাসের ভয়ংকরতম বিপর্যয়…

গুরুতর জখম অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে টোপের ছাগলগুলিকে। এছাড়া গ্রামের বাসিন্দাদের বেশ কয়েকটি ছাগল এখনও নিখোঁজ। ফলে পুরুলিয়ার রাইকা পাহাড়-লাগোয়া রাহামদা গ্রামে ছড়াল বাঘিনীর আতঙ্ক। গ্রামবাসীরা জানান, প্রতিদিনের মতো এদিনও ছাগলগুলিকে জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। তারপরই দেখা যায় ছাগলের পাল নেমে আসছে পাহাড় থেকে। কী ব্যাপার? কাছে এলে দেখা যায়, বেশ কয়েকটি ছাগল রক্তাক্ত অবস্থায় রয়েছে, আর বেশ কয়েকটি ছাগল নিখোঁজ। বাঘের কামড়েই এই ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি গ্রামবাসীদের। খবর পেয়ে বনকর্মীরাও ঘটনাস্থলে আসেন। মৃত অবস্থায় একটি ছাগলকে উদ্ধার করা হয়। এলাকায় জারি হল লাল সতর্কতা। গ্রামবাসীদের জঙ্গলে যেতে নিষেধ বন দফতরের।  

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)





Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *