পিয়ালী মিত্র ও প্রসেনজিত্ মালাকার: নকল দূতাবাসই নয়, নকল থানাও খুলে বসেছিলেন বিভাস অধিকারী। এখানেই শেষ নয় কলকাতার বেলেঘাটায় খুলে বসেছিলেন ইন্টারপোলের অফিস। বীরভূমের নলহাটির বিভাসের সাহস দেখে তাজ্জব হচ্ছেন অনেকে। বেলেঘাটা থানা থেকে এক কিলোমিটারের মধ্যে নকল থানা খুলে চলছিল জালিয়াতি। দুটি ফ্ল্যাট বাড়া নিয়ে অফিস চলছিল। নীলবাতির গাড়িতে চড়ে অফিসে আসতেন বহিস্কৃত ওই তৃণমূল নেতা। সঙ্গে থাকত ৪ নিরাপত্তারক্ষী।
সিআইটি রোডের একটি বাড়িতে বিভাস অধিকারী দুটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে অফিস চালাতেন। ওই দুই ফ্ল্যাটের দরজায় লাগানো রয়েছে দুটি বোর্ড। একটিতে লেখা ইনভেস্টেগশন অব সোশ্যাল জাস্টিস, কোথাও লেখা ইন্টারপোল, কোথায় লেখা পুলিস। কর্মচারীরা নিয়মিত অফিসে যাতায়াত করত। প্রায়ই সেখানে বিভাস আসতেন বাতি লাগানো গাড়ি ও রক্ষী নিয়ে। কারও নজরে পড়ল না! পুলিসও জানতে পারল না!
স্থানীয়দের দাবি, মাসখানেক আগে থেকে তারা ওই অফিসটা দেখছিলেন। বিভাসের কেলেঙ্কারি যখন সংবাদমাধ্যমে আসে তখন স্থানীয়রা বিভাসকে চিনতে পারেন। ওর সঙ্গে ৪ জন অস্ত্রধারী নিরাপত্তা রক্ষী থাকত। গতকাল পুরনো বোর্ডগুলি বাড়ির বাইরে ঝুলছিল। আজ তা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ফলে নয়ডায় বিভাস গ্রেফতার হওয়ার পর তার সঙ্গীরা এখনও কলকাতাতেও সক্রিয়।
কে এই বিভাস অধিকারী? বছর পনের আগে বীরভূমের নলহাটি ২ এর তৃণমূল ব্লক সভাপতি ছিলেন। ২০২১ এর ভোটের আগে তাকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এরপরই নিজের একটি রাজনৈতিক দল তৈরি করেন বিভাস। বিধানসভা ভোটে ৭ জন প্রার্থীও দিয়েছিল তার দল। বিপুল সম্পত্তির মালিক বিভাস। সিউড়িতে বিভাসের একটি আয়ুর্বেদিক কলেজ রয়েছে। কৃষ্ণপুরে বিশাল বাড়ি এ বিএড কলেজ রয়েছে। কলকাতা ও দিল্লিতে তার বাড়ি রয়েছে।
দল থেকে বহিস্কৃত এই নেতা তাঁর বাড়ি কৃষ্ণপুরে। ন্যাশনাল ব্যুরো অব সেশ্যাল ইনভেস্টেগশন অ্যান্ড সোশ্যাল জাস্টিস-এর নামে লেটার হেডে নেটিস দিয়ে সাধারণ মানুষকে ডেকে পাঠাতেন। কৃষ্ণপুরে তার আশ্রমের ভেতরে তার অফিস। জমি মামলা-সহ অন্যান্য কেসে তিনি বিভিন্ন লোককে ডেকে পাঠাতেন। তাকে নিয়ে এলাকার মানুষের একটা আতঙ্ক কাজ করত।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)