জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ট্রেলার লঞ্চের পর থেকেই দ্য বেঙ্গল ফাইলস (The Bengal Files) নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে। এই ছবিতে একটি মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty)। এবার এই ছবি থেকে তৈরি বিতর্ক ও সমালোচনা নিয়ে মুখ খুললেন মেগাস্টার। বর্ষীয়ান অভিনেতা বলেন, ‘যে মুহূর্তেই আপনি সত্যিটা তুলে ধরেন, তখনই তা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে যায়।
মিঠুন চক্রবর্তী জানান: “আপনি যখনই বাস্তবকে তুলে ধরবেন, তখন তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে যায়। এটা আশ্চর্যের যে কেউ বাস্তবতার মুখোমুখি হতে চায় না। আপনারা কি জানেন নোয়াখালিতে কী হয়েছিল? – এটা আমার জন্মের আগে হয়েছিল। যা জানা যায় তা হলো ‘অনেক মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল’ – ব্যস, এটুকুই। গ্রেট ক্যালকাটা কিলিং-এর ক্ষেত্রেও একই ব্যাপার ছিল। কীভাবে এবং কেন এটি হয়েছিল তা কেউ জানতে চায় না, কিন্তু বিবেক অগ্নিহোত্রী বলছেন, ‘দয়া করে সত্যিটা জানুন’।” মিঠুন আরও বলেন, “নোয়াখালীতে প্রায় ৪০,০০০ হিন্দুকে হত্যা করা হয়েছিল। গ্রেট ক্যালকাটা কিলিং-এর ক্ষেত্রেও তাই, এবং মানুষ এর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করবে। এটাই সত্য, এবং যখনই কেউ সত্য নিয়ে কথা বলে, তখনই তা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে যায়। আমরা এর কী করতে পারি?”
আরও পড়ুন- The Bengal Files Row: ‘বেঙ্গল ফাইলস নিয়ে কেন এত বিতর্ক? অভিনেতাকে কেন জবাবদিহি করতে হবে?’
সম্প্রতি কলকাতায় বাতিল করা হয়েছে এই ছবির ট্রেলার। কেন বন্ধ করা হল ট্রেলার লঞ্চ? সেই প্রশ্ন তুলে পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের তীব্র সমালোচনা করে তাঁদের “ফ্যাসিস্ট” বলে অভিহিত করেন। ‘দ্য বেঙ্গল ফাইলস’-এর বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গে একাধিক এফআইআর-ও দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগ, ছবিতে সাম্প্রদায়িকতায় প্ররোচনা দেওয়া হয়েছে। এবার এই ছবির পাশে দাঁড়ালেন মিঠুন চক্রবর্তী।
এই ছবিতে অভিনয় করার জন্য তোপের মুখে পড়েছেন সৌরভ দাস ও শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমি শুধু একজন অভিনেতা। আমার একটি চরিত্র ভালো লেগেছে এবং আমি সেটি অভিনয় করেছি। কী ঘটছে বা ইতিহাস বিকৃত করা হচ্ছে কি না, তা নিয়ে ভাবার জন্য আমি কোনো ঐতিহাসিক নই। এটা আমার কাজ নয়। যাদের এটি দেখার কাজ, যদি তারা মনে করেন যে বাংলাকে ছোট করা হচ্ছে, তাহলে তারা তথ্য-প্রমাণ নিয়ে আদালতে যেতে পারেন। শুধু শোরগোল করে কোনো লাভ নেই।”
শাশ্বত আরও বলেন, “আজকাল এটা একটা রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে যে পুরো গল্প কাউকে জানানো হয় না। আপনাকে কেবল আপনার চরিত্রটি সম্পর্কে জানানো হয়। যখন আমাকে ‘দ্য বেঙ্গল ফাইলস’-এর চরিত্রটি সম্পর্কে বলা হয়েছিল, তখন আমার এটি দুর্দান্ত মনে হয়েছিল। এটি একটি খলনায়কের চরিত্র, এবং এমন চরিত্র খুব কম অভিনেতাই পান। শুটিং চলার সময় ছবির নাম ছিল ‘দ্য দিল্লি ফাইলস’। শুটিং শেষ হওয়ার পর জানতে পারলাম যে এর নাম পরিবর্তন করে ‘দ্য বেঙ্গল ফাইলস’ করা হয়েছে। এটা আমার হাতে ছিল না।”
এই ছবি প্রসঙ্গে সৌরভ বলেন, ‘আমি সত্যি বলছি আমাকে যে চরিত্রটা দেওয়া হয়েছে, তার বাইরে আমি কিছু জানি না। কারণ এভাবেই কাজ হয়। আমি শুধু গোপাল পাঠা (সৌরভের চরিত্রের নাম)-র ব্যাপারে জানি। আমি যদি কখনো হিটলারের চরিত্র পাই, আর তাতে কাজ করি, তাহলে নিশ্চয়ই আমি নাৎসি সমর্থক হব না! সেরকমই এই ছবিতে কাজ সম্পূর্ণ অভিনয়ের জায়গা থেকে করা। ওরকম একটা শক্তিশালী চরিত্র আমায় দেওয়া হয়েছে, আবার বম্বের মতো একটা ইন্ডাস্ট্রিতে। সেই কারণে লুফে নিয়েছি চরিত্রটা। আশা করি মানুষও খুব পছন্দ করবে।’
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)