জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: লিয়ো মেসির ভারত সফর শেষ (Messi’s GOAT Tour of India 2025)। কিন্তু এখনও চর্চায় ‘কলকাতা ক্যাওস’! রাজনৈতিক কাজিয়াও তুঙ্গে। আর এবার বোমা ফাটালেন সুনীল গাভাসকর (Sunil Gavaskar)। ক্রিকেটের কিংবদন্তি সাফ বলে দিলেন যে, কলকাতার আয়োজকদের দোষারোপের আগে প্রতি অ্যাঙ্গেল থেকেই তদন্ত হোক! মেসিকে আসামীর কাঠগড়ায় তুলে সানি বললেন, তিনিই ‘আসল কালপ্রিট’! গত ১৩ ডিসেম্বর মেসির ভারত সফর শুরু হয়েছিল কলকাতা দিয়ে। শুরুতেই ছন্দপতন হয়েছিল। GOAT মেসিকে ঠিকমতো দেখতে না পেয়ে ভক্তরা ক্ষোভে ফেটে পড়েছিলেন। দর্শকরা বোতল ছুড়ে মারেন, বাকেট চেয়ার উপড়ে নেন। স্টেডিয়ামের কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির ভাঙচুর করেন হায়দরাবাদ, মুম্বই এবং দিল্লিতে সফর নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হলেও কলঙ্কিত হয়েছিল কলকাতা।
আরও পড়ুন: কলঙ্কিত কলকাতাকে মুছেই মেসির ভারতদর্শন! ইনস্টায় ভিডিয়ো পোস্টের পরেই তুলকালাম…
সানির অকাট্য যুক্তি!
গাভাসকর এক সর্বভারতীয় দৈনিকের কলামে লিখেছেন, ‘কলকাতার সল্টলেক স্টেডিয়ামের সাম্প্রতিক পর্বের কথা বলব। আর্জেন্টাইন ফুটবলার লিওনেল মেসি তাঁর প্রতিশ্রুতির চেয়ে অনেক কম সময় মাঠে ছিলেন। এই কারণে সকলের উপরই দোষ চাপানো হয়েছে, শুধু সেই ব্যক্তি ছাড়া, যিনি তাঁর প্রতিশ্রুতি পালনে ব্যর্থ হয়েছেন। মেসির চুক্তি কী ছিল তা জনসাধারণের জানা নেই, তবে যদি তাঁকে এক ঘণ্টার জন্য স্টেডিয়ামে থাকার কথা বলা হয়েছিল, তাহলে তিনি সেই সময়ের অনেক আগেই চলে গিয়ে ভক্তদের হতাশ করছেন। তিনি তো বেশ ভালো টাকাই নিয়েছেন। আসল অপরাধী ছিলেন মেসি এবং তাঁর টিম। তিনি রাজনীতিবিদ এবং তথাকথিত ভিআইপিদের দ্বারা পরিবেষ্টিত ছিলেন মাঠে, কিন্তু তাঁর বা তাঁর সঙ্গীদের জন্য কোনও নিরাপত্তার হুমকি ছিল না। তাঁর কি শুধু স্টেডিয়ামে হাঁটার কথা ছিল নাকি! পেনাল্টি কিকের মতো কিছু করবেন বলেই আশা করা হয়েছিল। যদি দ্বিতীয়টি হতো, তাহলে তার চারপাশের লোকদের আপনা আপনিই সরে যেতে হত এবং দর্শকরা তাঁদের নায়ককে ঠিক দেখতেই পেতেন যা দেখার জন্য তাঁরা এসেছিলেন। অন্যান্য অনুষ্ঠানগুলি তো নির্বিঘ্নেই সম্পন্ন হয়েছে। কারণ মেসি সেখানে তাঁর প্রতিশ্রুতিগুলো পূরণ করেছিলেন। তাই কলকাতার সহনাগরিকদের দোষারোপ করার আগে, উভয়পক্ষই প্রতিশ্রুতিগুলি রক্ষা করা করেছিল কিনা, তা যাচাই করে দেখা উচিত।’
আরও পড়ুন: ₹৮১৮০ কোটির ঝুঁকি! ভারতে কেন খেললেন না মেসি! কোন শর্তে কিংবদন্তির ‘পায়ে বেড়ি’?
আচমকাই তাল কাটে…
গত শনিবার সকাল সাড়ে ১১টায় মেসির সাদা অডি যুবভারতীতে ঢুকেছিল তুমুল করতালি ও তাঁর নামে মধ্যে। মেসির পাশে ছিলেন তাঁর দীর্ঘদিনের সতীর্থ লুইস সুয়ারেজ এবং রডরিগো ডি পল। এরপরই সবকিছু এলোমেলো হয়ে যায়। কয়েক মিনিটের মধ্যেই মেসিকে ঘিরে ফেলেন একদল রাজনীতিবিদ, প্রভাবশালী ও পুলিস কর্তা, ভিআইপি এবং তাঁদের সহযোগীরা। ফলে একটি মানব প্রাচীর তৈরি হয়ে যাওয়ায়, হাজার হাজার টাকা দিয়ে, টিকিট কেটে আসা দর্শকরা মেসিকে ছাড়া সবকিছুই দেখতে পেয়েছিলেন। এহেন পরিস্থিতিতে মেসিকে বিভ্রান্ত ও হতবাক দেখাচ্ছিল। তবুও তিনি হাসিমুখে প্রাক্তন খেলোয়াড়দের অটোগ্রাফ দিচ্ছিলেন এবং মাঠের চারপাশে ধীরে ধীরে প্রদক্ষিণ করার চেষ্টা করছিলেন। পরিস্থিতি এরপর আরও খারাপ হতে থাকে। স্পোর্টস প্রমোটর শতদ্রু দত্ত বারবার দর্শকদের মিনতি করছিলেন, ‘দয়া করে মেসিকে একা থাকতে দিন। দয়া করে মাঠ খালি করে দিন।’ কিন্তু সেই আবেদনে কেউ কর্ণপাত করেননি। গণ্যমান্য ব্যক্তিদের ভিড়ে মেসি কার্যত দেহরক্ষী ও কর্মকর্তাদের ভিড়ের মধ্যে হারিয়ে যান। মেসিকে শেষ পর্যন্ত মাঠ থেকে বের করে আনা হয়। এক ঘণ্টার বদলে মাত্র ২২ মিনিট কাটিয়েই তিনি স্টেডিয়াম ছাড়েন।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)
