মৈত্রেয়ী ভট্টাচার্য: গলায় ত্রিশূল নিয়েই কল্যাণী থেকে সোজা এনআরএসে পৌঁছলেন যুবক। শেষে এনআরএসের চিকিৎসকদের অস্ত্রোপচারে বাঁচল প্রাণ। নাম ভাস্কর রাম। বয়স ৩৩ বছর। পেশায় শপিং মল কর্মী। রবিবার রাতে কাজ থেকে ফেরার পর নিজের বাড়িতেই পরিচিত দুই যুবকের হাতে আক্রান্ত হন তিনি। মারধরের পর ভাস্কর রামের বাড়িতেই রাখা পৈতৃক ত্রিশূল তুলে তাঁর উপর চড়াও হয় অভিযুক্তরা। সেই ত্রিশূল গলায় বিঁধে যায় ভাস্কর রামের। গলা এঁফোড় ওফোঁড় হয়ে যায় তাঁর।
কোনও মতে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়শি, আত্মীয়দের কাছে সাহায্য চান তিনি। পড়শি পরিজনেরা সেই অবস্থাতেই তাঁকে নিয়ে ছোটেন কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালে। কিন্তু, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অমান্য করেই সেখান থেকে রেফার করা হয় রোগীকে। এরপর এদিন ভোর তিনটে নাগাদ এসে পৌঁছন এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে। খবর পেয়ে রাতেই ছুটে আসে সিনিয়র ডাক্তাররা। বোর্ড মিটিং ডেকে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু চ্যালেঞ্জ একাধিক। গলার কোনও রক্তনালীকে সেই ত্রিশূল ছুঁয়ে গিয়েছে কিনা, কোনও নার্ভ ক্ষতিগ্রস্থ কিনা, সবমিলিয়ে চিন্তা একাধিক। তাই নিউরেসার্জারি, অর্ডোপেডিক, সিটিভিএসের চিকিৎসকদেরও পরামর্শ নেওয়া হয় অস্ত্রোপচারের আগে।
আরও পড়ুন, রাস্তায় স্তূপীকৃত বালিতে ধাক্কা, উলটাল অটো! ছিটকে পড়ে মারাত্মক জখম তরুণী
শ্বাসপ্রশ্বাস বাইরে থেকেই নিয়ন্ত্রণের জন্য করা হয় ট্র্যাকিওস্টোমি। তারপর ইএনটি এবং অ্যানাস্থেশিয়া বিভাগের প্রায় ঘণ্টা দেড়েকের চেষ্টায় বের করে আনা হয় গলায় বিঁধে থাকা ত্রিশূলটি। হাসপাতাল সূত্রে খবর, আপাতত স্থিতিশীল আছেন রোগী। তাঁকে জেনারেল বেডেই হেভি মেডিকেশনে রাখা হয়েছে। তাঁকে আরও কিছুদিন অবজারভেশনে রাখা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন ইএনটি বিভাগের চিকিৎসকেরা। পরিবারের তরফে প্রাণে মারার অভিযোগ করা হয় দুই বন্ধুর বিরুদ্ধে। অভিযোগের ভিত্তিতে রবিবার গভীর রাতে দুই বন্ধু বিক্রম সরকার ও জয় বণিককে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার করে কল্যাণী থানার গয়েশপুর ফাঁড়ির পুলিস। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরনো শত্রুতা জেরে এই ঘটনা ঘটেছে।