
রবিবার সকালে দিনহাটার (West Bengal Local News) গোপালনগর এম এস এস হাইস্কুলের পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে এসে শাঁখা পলাও খুলে ফেলতে বলা হয় বিবাহিতা পরীক্ষার্থীদের। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে নানান প্রতিক্রিয়া সামনে আসে। এই সময় ডিজিটালের তরফে বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পলের (BJP MLA Agnimitra Paul) সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ক্ষোভে ফেটে পড়েন। বলেন, ”এটা তো অবশ্যই সাংঘাতিক ঘটনা। বিবাহের চিহ্ন শাঁখা-পলা, মঙ্গলসূত্র, নোয়া খোলা যায় না। এগুলোকে তো গয়না বলে না। গয়না বলতে আমরা বুঝি দামী কিছু। গয়না আর শাঁখা পলার মধ্যে পার্থক্য করার ক্ষমতা যার নেই সে তো অযোগ্য, অশিক্ষিত ও অদক্ষ। এই সরকারটা অযোগ্য লোকে ভরে গিয়েছে। একজন হিন্দু মহিলার জন্য এটা অপমান। এক হিন্দু বিবাহিতা মহিলা শাঁখা পলা নোয়া খুলতে পারেন না এটা আমাদের সংস্কৃতি। যে ওই পদে আছে সেও কী ভাবে চাকরি পেয়েছে সেটা নিয়ে প্রশ্ন।”
একইসঙ্গে নেত্রী বিষয়টি নিয়ে আরও একটি প্রশ্নও তুলে দেন। তিনি বলেন,”বিষয়টি যদি ইচ্ছাকৃতভাবে করা হয়ে থাকে। তাহলে জেনেবুঝে একজন হিন্দু নারীকে অপমান হচ্ছে। আবার হিন্দুদের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কেউ যদি ভাবে হিন্দু মহিলাকে অপমান করলে তৃণমূলের কাছে বেশি নম্বর পাবে। তাহলে তো সাংঘাতিক ব্যাপার। পিতৃপক্ষে দুর্গাপুজোর উদ্বোধন, বিসর্জনের তারিখ পালটে দেওয়া থেকে এখন শাঁখা পলা খোলানোর মতো বিষয় শুধু কেন পশ্চিমবঙ্গেই ঘটে? ধিক্কার এই সরকারকে। তবু বলব যদি বিষয়টি অনিচ্ছাকৃত হয়, তাহলে যে এই প্রশাসনের মাথায় রয়েছেন, পরীক্ষাটি পরিচালনা করছেন, এমন ঘটনায় তাঁর দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছি। একটা লাইন অনুবাদ বা তর্জমা করার মতো শিক্ষা নেই? কী ভাবে তাঁর নিয়োগ হল? বিষয়টি এটা যেকোনও পরিস্থিতিতেই অপমানজনক।”
উল্লেখ্য, এবারে টেট পরীক্ষায় নকল রুখতে গাইডলাইনে সর্বভারতীয় পরীক্ষার ধাঁচে পরীক্ষার হলে ঘড়ি থেকে গয়না সবেতেই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। যার জেরে এমন বিভ্রান্তি। গয়না বলতে বিজ্ঞপ্তি পর্ষদ মেটালের ও দামী জিনিস বোঝাতে চেয়েছিল। কিন্তু এদিন দিনহাটার ওই কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে এসে ঢুকতে বাধা পান বিবাহিত মহিলারা। অভিযোগ, পরীক্ষা কেন্দ্রে তাদের নির্দেশ দেওয়া হয় বিবাহের চিহ্ন স্বরূপ যে গয়নাগুলি আছে অথাৎ শাঁখা-পলাও খুলে ভিতরে যেতে হবে। আলিপুরদুয়ারের বাসিন্দা মিঠুন দাসের অভিযোগ, ”আমার স্ত্রী পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকতে যাচ্ছিলেন। আমার নাকের নথ, কানের দুল, শাঁখা পলা খুলতে বলা হয়।” একই বক্তব্য তুফানগঞ্জের বাসিন্দা অমল মিত্রের। তাঁর দাবি, ”গয়না পরায় অনুমতি না থাকলেও মাঙ্গলিক চিহ্নকে তাঁর বাইরে রাখা হয়। সর্বভারতীয় পরীক্ষা, সিভিল সার্ভিস পরীক্ষাতেও শাঁখা পলা খোলানো হয় না।” সব মিলিয়ে এমন নিয়মের কড়াকড়ির বাড়াবাড়ি নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
পশ্চিমবঙ্গের আরও খবরের জন্য ক্লিক করুন। প্রতি মুহূর্তে খবরের আপডেটের জন্য চোখ রাখুন এই সময় ডিজিটালে।