চার বছর আইনি লড়াইয়ের পর বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Justice Abhijit Ganguly) নির্দেশে চাকরি পেয়েছিলেন শিলিগুড়ির ববিতা সরকার। এবার জানা গিয়েছে, ববিতার মার্কশিটে রয়েছে নম্বরের গড়মিল। নিয়ম অনুযায়ী মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক সহ সমস্ত এডুকেশনাল কোয়ালিফিকেশনের উপর কিছু নম্বর ধার্য করা আছে। সেই নিয়ম অনুযায়ী ববিতার এডুকেশনাল স্কোর দাঁড়ায় ৩১। কিন্তু, কমিশনের তরফে ববিতাকে সেই খাতে ৩৩ নম্বর দেওয়া হয়েছে। ফলে ওই বাড়তি দুই নম্বরের জন্য র্যাঙ্কে এগিয়ে নিয়োগে সুবিধে পেয়েছিলেন ববিতা।
এসএসসি (School Service Commission)-এর দাবি, আবেদনের সময় ববিতা উল্লেখ করেছিলেন ‘৬০ শতাংশ বা তার বেশি’ নম্বর পেয়েছেন স্নাতকে। কিন্তু ববিতা সরকারের নামে জমা হওয়া মার্কশিটে দেখা যাচ্ছে ৮০০-এর মধ্যে তিনি ৪৪০ পেয়েছেন অর্থাৎ ৫৫%। এতেই তাঁর অ্যাকাডেমিক স্কোর নির্ধারণে ভুল হয়েছে।
জানা গিয়েছে, এই তথ্য সামনে আসতেই ববিতার মেখলিগঞ্জ ইন্দিরা গার্লস স্কুলে (Mekhliganj Indira Girls High School) -এর চাকরিতে সামনে এসেছে নয়া দাবিদার। পর্ষদের ভুলে ২ নম্বর বেশী পেয়ে এগিয়ে যাওয়ায় র্যাঙ্কে পিছিয়ে গিয়েছিলেন শিলিগুড়ির আরও এক মেয়ে অনামিকা রায়।
এই বিতর্ক নিয়ে মুখ খুলেছেন ববিতা সরকার। তিনি বলেন, ”সঠিক তথ্য পেশ করেছিলাম। কোনও ভুল তথ্য দেইনি। কোথায় কত নম্বর পেয়েছিলাম তা জানতাম না। চাকরিতে যোগ দেওয়ার পর সেসব জানতে পারি। আমার অ্যাকাডেমিক স্কোর ৩১ হওয়ার কথা। কিন্তু ৩৩ রয়েছে। অ্যাকাডেমিক স্কোর কমে যাওয়ার জেরে চাকরি চলে গেলে আক্ষেপ নেই।” অন্যদিকে এই দুই নম্বরের জন্য নয়া জীবন পেতে পারেন অন্য চাকরিপ্রার্থী অনামিকা রায়। তিনি বলেন, ”২ নম্বর অনেকটাই নম্বর। আমার অনেক দিন আগেই চাকরিটা হয়ে যেত। যেমন করে হোক চাকরিটা যেন আমার হয়। সেজন্য আইনি পদক্ষেপ নেব।”
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৪ ডিসেম্বর SSC পরীক্ষায় বসেছিলেন ববিতা সরকার। ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর প্রকাশিত হয়েছিল মেধা তালিকা। সেখানে ওয়েটিং লিস্টে তাঁর নাম ছিল তাঁর। তালিকা প্রকাশের দাবি মেনে প্যানেল লিস্ট প্রকাশ করলে দেখা যায় ববিতা সরকারের নাম রয়েছে ২০ নম্বরে। কিন্তু দ্বিতীয় কাউন্সেলিংয়ের পর তিনি জানতে পারেন তাঁর নাম চলে গিয়েছে ২১ নম্বরে। আর অঙ্কিতার নাম চলে গিয়েছে ১ নম্বরে। এদিকে ববিতা দাবি করেছিলেন, ৭২ জনের ওয়েটিং লিস্টে ২০ নম্বরে নাম ছিল তাঁর। অঙ্কিতা অধিকারী মোট ৬১ নম্বর পেয়েছেন। আর তিনি নিজে পেয়েছিলেন ৭৭ নম্বর। এরপরই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। দীর্ঘ ৪ বছর ধরে লড়াই করার পর অবশেষে হাইকোর্ট অঙ্কিতাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করে সেই পদে ববিতাকে নিয়োগ করার নির্দেশ দেয় আদালত।
পশ্চিমবঙ্গের আরও খবরের জন্য ক্লিক করুন। প্রতি মুহূর্তে খবরের আপডেটের জন্য চোখ রাখুন এই সময় ডিজিটালে।