Justice Abhijit Gangopadhyay : অবৈধ চাকরি খুইয়ে মিলল বৈধ নিয়োগ – calcutta high court ordered to terminate illegal recruitments and recruited one


অমিত চক্রবর্তী
রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির আবহে নজিরবিহীন ঘটনা হাইকোর্টে (Calcutta High Court)। অবৈধ ভাবে পাওয়া চাকরি খুইয়ে পরক্ষণেই বৈধ চাকরি পেলেন এক শিক্ষিকা। তবে পাঁচ বছর ধরে তিনি যে ‘অবৈধ’ চাকরি করে বেতন পেয়েছেন, তার কী হবে, সে ব্যাপারে পরে সিদ্ধান্ত নেবে আদালত। বৃহস্পতিবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে নির্দেশ দেন, যত দ্রুত সম্ভব ওই শিক্ষিকাকে কাউন্সেলিং করে নতুন চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে। জয়িতা দত্ত বন্দ্যোপাধ্যায় নামে ওই শিক্ষিকার ঘটনা যে অভূতপূর্ব, তা মানছেন আইনজীবীরাও। যে ২৬৮ জন চাকরিপ্রার্থীর নম্বর বাড়িয়ে বেআইনি ভাবে পর্ষদ চাকরি দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছিল, সেই তালিকায় নাম ছিল জয়িতারও। এ দিন তিনি আদালতে দাবি করেন, ২০১৪-র টেট-এ প্রশ্ন ভুলের ঘটনায় তিনিও ভুক্তভোগী। সেখানে দু’টি ভুল প্রশ্নের তিনি উত্তর দেওয়ায় বাড়তি দু’নম্বর দেওয়ার জন্য হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন ২০১৭ সালে। বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়ের আদালত নম্বর বাড়ানোর নির্দেশ আগেই দিয়েছিল। কিন্তু এই মামলা দায়েরের মধ্যেই তাঁকে এক আইনজীবী ফোনে জানান, পর্ষদ তাঁকে চাকরি দিতে চায়। তাই নিজের নথিপত্র নিয়ে তিনি যেন পর্ষদের অফিসে যোগাযোগ করেন। যোগাযোগ করলে তাঁকে এক নম্বর বাড়িয়ে দক্ষিণ কলকাতার স্কুলে চাকরি দেওয়া হয়।

Primary TET Recruitment : ফোনে ডেকে চাকরি, আবার তদন্তের দায়িত্ব সিবিআইকে
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসই এর আগে শুনানিতে দেখেছিল, পর্ষদ সেই সময়ে বেছে বেছে ২৬৮ জনকে এক নম্বর করে বাড়িয়ে চাকরি দিয়েছিল। তাতে অনিয়ম হয়েছে জানিয়ে তাঁদের চাকরি খারিজের নির্দেশ দেয় আদালত। সেই তালিকায় ছিলেন জয়িতাও। পরে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) এই ২৬৮ জনকে হাইকোর্টে তাঁদের বক্তব্য জানানোর সুযোগ দেয়। সেই সূত্রেই জয়িতা এ দিন হাইকোর্টে আবেদন জানান। শুনানি চলাকালীন তিনি আদালতে জানান, ২০১৭-এর ডিসেম্বরে এক আইনজীবী তাঁকে ফোন করেছিলেন। যে ভাবে দিনক্ষণ ধরে আইনজীবীর ফোন সংক্রান্ত বক্তব্য জানাচ্ছিলেন, তাতে তিনি কী করে এত তথ্য মনে রাখলেন–প্রশ্ন করেন বিচারপতি। জয়িতা জানান, বিশেষ বিশেষ দিন সম্পর্কে ডায়েরি লেখার অভ্যাস রয়েছে তাঁর। তখন তাঁকে ২০১৭-র সঙ্গেই আগের ও পরের বছরের ডায়েরি নিয়ে বিকেল তিনটেয় এজলাসে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি।

Primary Recruitment Case: ১৪০ প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিল, বেতন বন্ধের নির্দেশ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের
দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দা ওই শিক্ষিকা বিকেলে ডায়েরি এনে দেখান আদালতে। তা দেখে আইনজীবীর ফোন বিষয়ে প্রাথমিক ভাবে আদালত আশ্বস্ত হয়। তবে কী কথা হয়েছে, তা স্পষ্ট নয়। তার পরেই আদালত তাঁকে নতুন করে চাকরি দিতে নির্দেশ দেয় পর্ষদকে। মানিক ভট্টাচার্য পর্ষদের চেয়ারম্যান থাকাকালীন প্রাথমিকে নিয়োগ-দুর্নীতির ভূরি ভূরি অভিযোগ উঠেছে। আদালতেও এক গুচ্ছ মামলা চলছে। আইনজীবীদের একাংশের বক্তব্য, সেই সময়ে এই নিয়ে মামলা হলেই তা ধামাচাপা দেওয়ার জন্যে মামলাকারীদের ডেকে বেআইনি ভাবে নিয়োগপত্র হাতে ধরিয়ে দেওয়ার কৌশল নেওয়া হয়েছিল। যেহেতু আইনজীবীদের অধিকাংশ মানিকের ছাত্রস্থানীয়, তাই আইনজীবীদের দিয়েই অনেক সময়ে মামলাকারীদের ডেকে পাঠানো হতো। এমন ভাবে আরও অনেককে ডেকে বেআইনি চাকরি দিয়ে কৌশলে তাঁদের মামলা প্রত্যাহার করানো হয়েছিল। ব্যতিক্রম জয়িতা। তিনি মামলা তোলেননি।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *