প্রথমে সন্দেহভাজন IS সদস্য সাদ্দাম মল্লিক ও তার সঙ্গী সইদ আহমেদকে হাওড়া থেকে STF গ্রেপ্তার করে। ওই দু’জনকে জেরা করে এই চক্রে জড়িত আরও এক জন, প্রাক্তন সিমি সদস্য আব্দুল রাকিব কুরেশির নাম জানা যায়। তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয় মধ্যপ্রদেশের খান্ডোয়া থেকে। ওই তিন জনের কাছ থেকেই IS-যোগে বাংলার আরও দু’জনের নাম জেনেছেন গোয়েন্দারা। তাঁদের বক্তব্য, সাদ্দাম, সইদরা বাংলা তো বটেই, ভিন রাজ্যেও বেশ কয়েকটি গোপন বৈঠক করেছেন।
মধ্যপ্রদেশের খান্ডোয়া থেকে ধৃত কুরেশিকে বুধবার কলকাতায় (Kolkata) এনে নগর দায়রা আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাঁকে ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত STF হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। সাদ্দাম ও সইদের সঙ্গে কুরেশিকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করছেন তদন্তকারী অফিসাররা। তাঁদের সন্দেহ, তরুণ-যুবকদের মগজ ধোলাই থেকে অস্ত্রশস্ত্র-বিস্ফোরক সংগ্রহ- এ সবের জন্য যে ‘টেরর ফান্ড’ ISA-র শীর্ষনেতাদের কাছ থেকে এসেছিল, তার পিছনে ছিলেন এই কুরেশিই। বাংলায় এখনও পর্যন্ত কোনও অপরাধে কুরেশির নাম না-জড়ালেও মধ্যপ্রদেশ পুলিশে তাঁর বিরুদ্ধে তিনটি মামলা রয়েছে বলে কলকাতা STF জেনেছে। সেখানে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারও হন কুরেশি, বছর দুয়েক আগে তিনি জামিনে ছাড়া পান।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, জামিনে ছাড়া পাওয়ার পর গত দু’বছরে সাদ্দাম ও সইদের সঙ্গে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে কুরেশির যোগাযোগ তৈরি হয়েছিল। শুধু তা-ই নয়, কাজের সূত্রে বা চাকরি খুঁজতে সাদ্দাম নয়ডায় গিয়েছিলেন। সেখানেই তাঁর সঙ্গে কুরেশির মুখোমুখি দেখা ও কথাবার্তাও হয়। তদন্তকারীদের দাবি, সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে ক্লোজ়্ড গ্রুপে চ্যাটিং চলত সাদ্দাম, কুরেশি, সইদ-সহ বেশ কয়েক জনের। সেই গ্রুপের বাকি সদস্যদেরই খোঁজ চালাচ্ছে SFT। পাশাপাশি, জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর কুরেশি মধ্যপ্রদেশ থেকে দেশের অন্য কোনও রাজ্যেও IS-র হয়ে তরুণ ও যুবকদের মগজ ধোলাই করার জন্য গিয়েছিলেন কি না, সেটা জানার চেষ্টা চলছে।
তদন্তকারীরা এখনও পর্যন্ত জানতে পেরেছেন, সাদ্দামদের টার্গেট ছিল মূলত উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাট ও জম্মু-কাশ্মীর। সে ক্ষেত্রে বাংলাকে ভিত্তি করে ওই রাজ্যগুলিতে অপারেশনের ছক থাকলে ‘স্লিপার সেল’ কী ভাবে ও কাদের নিয়ে তৈরি হয়েছিল, সেটা জানাও STF-র লক্ষ্য।