২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে প্রথম প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। তৃণমূলের টিকিটে জঙ্গিপুর থেকে লড়াই করে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছিলেন। জাকির হোসেনের রাজনৈতিক এবং ব্যবসায়িক প্রতিপক্ষ হিসাবে বারবার উঠে এসেছে সুতির তৃণমূল বিধায়ক ইমানি বিশ্বাসের নাম। যদিও তা নেহাতই গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছে রাজ্য শাসক দল। দুই বিধায়কের মধ্যে কেউই এই বিষয়ে মুখ খোলেননি। জাকির হোসেনের বাড়ি সুতি থানার অরঙ্গয়াবাদে। যদিও জঙ্গিপুরে, বহরমপুর, কলকাতা, দিল্লি, কানপুর সহ রাজ্যের একাধিক অফিস রয়েছে তাঁর। মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা জাকির হোসেন জীবন-যুদ্ধে বরাবর জয়ী হতে চেয়েছেন। বিড়ি শিল্পে মুন্সির কাজ দিয়ে শুরু ‘কেরিয়ার’।
মুন্সি হিসেবে কর্মরতরা মূলত বাজার থেকে বিড়ির পাতা, মশলা এনে শ্রমিকদের দিয়ে বিড়ি বাঁধানোর কাজ করে থাকেন। পরে সেই বিড়ি সংগ্রহ করে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করেন। জাকির হোসেন চারজন বিড়ি শিল্পীদের নিয়েই কাজ শুরু করেছিলেন। ২০০৮-০৯ সালে আত্মপ্রকাশ ঘটে জাকিরের ‘শিব বিড়ি‘-র। নিজে ইসলাম ধর্মাবলম্বী হলেও তাঁর বিড়ির ব্যবসার নাম শিবের নামে। এমনকী, প্রতিষ্ঠানের লোগোতেও রয়েছে দেবাদিদেবের ছবি। শিব বিড়িই জাকির হোসেনকে ব্যবসায় সাফল্য এনে দিয়েছিল। এরপর এক এক করে জাকির হোসেনের হাত ধরে আত্মপ্রকাশ ঘটেছে শিব রাইস মিল, শিব আটা মিল, শিব তেল মিলের। একাধিক কলেজও এক্ষেত্রে উল্লেখ করতে হয়।
২০১৬ সালের আগেও তিনি রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব পেয়েছিলেন, জানাচ্ছে জাকির হোসেনের ঘনিষ্ঠ মহল। কিন্তু, তিনি প্রথমে রাজনীতিতে যোগ দিতে চাননি বলেই গুঞ্জন। পরে ২০১৬ সালে তৃণমূলে যোগদান এবং ভোটে লড়া। রেকর্ড ভোটে বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হয়ে নজির গড়েছিলেন তিনি। এরপর রাজ্য মন্ত্রিসভায় তাঁকে সংযোজিত করা হয়। ২০২১ সালের নির্বাচনের আগে ধুলিয়ান স্টেশনে বিস্ফোরণ হামলায় গুরুতর জখম হন জাকির। কলকাতা থেকে হেলিকপ্টারে করে গিয়ে তিনি মনোনয়ন পত্র জমা দেন। আরও একবার জয়ী হন তিনি। তবে নতুন মন্ত্রিসভায় তাঁকে দেখা যায়নি। উল্লেখ্য, বুধবার জাকির হোসেনের বাড়ি, দফতর, কারখানায় আয়কর দফতর অভিযান চালায়। সেখান থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। জাকির হোসেন অবশ্য জানিয়েছেন, তাঁর কাছে সমস্ত হিসাব রয়েছে। তিনি ব্যবসায়ী। নগদ না থাকলে শ্রমিকদের টাকা দেওয়া আটকে যেত। তিনি সময়মতো আয়কর দেন বলেও জানান।