তার পর সবাইকে এক রকম প্রাণ হাতে করে সঙ্কীর্ণ লাইন ধরে প্রায় ৫০০ মিটার হেঁটে পৌঁছতে হয় বিধাননগর রোড স্টেশনের ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে। এই দৃশ্য রেলযাত্রীদের কয়েক জন তাঁদের মোবাইল ফোনে ভিডিয়ো রেকর্ডিং করেন। ওই সব ভিডিয়ো ক্লিপ সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। কেন এমন হলো, সোমবার রাত পর্যন্ত সেটা জানা যায়নি বলে পূর্ব রেলের বক্তব্য। ঘটনার তদন্ত করছে রেল।
অফিস টাইমে এমনিতেই বিধাননগর রোড প্ল্যাটফর্মে (Bidhannagar Road Station) প্রচণ্ড ভিড় থাকে। সল্টলেক এবং আশপাশের বহু তল্লাটের বাসিন্দাদের একটা বড় অংশ এই স্টেশন দিয়ে যাতায়াত করেন। শহরতলির কয়েকটি এলাকার বাসিন্দারা আবার কাজের জায়গা বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পৌঁছতে ব্যবহার করেন ওই স্টেশন। তা ছাড়া, অফিস টাইমে শিয়ালদহমুখী ডাউন ট্রেনগুলিতে শহরতলির যাত্রীদের ভিড় এমনিতেই বেশি থাকে।
সূত্রের খবর, এ দিন যে ট্রেন সমস্যা তৈরি করেছে, সেটি একটি ডাউন রানাঘাট-শিয়ালদহ লোকাল (Ranaghat-Sealdah Local)। ট্রেনটির থামার কথা ছিল বিধাননগর রোড স্টেশনের ৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মে। নামার জন্য যাত্রীরা ভিড় করেছিলেন সব ক’টি কামরার দরজায়। কিন্তু তাঁদের হতবাক করে প্ল্যাটফর্মে না-থেমে ট্রেনটি প্রায় ৫০০ মিটার এগিয়ে যায়। হতচকিত যাত্রীদের একাংশ সম্বিৎ ফিরে পেয়ে চিৎকার-চেঁচেমেচি জুড়ে দেন। প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে অনেকটা এগিয়ে শেষ পর্যন্ত থামে ট্রেনটি। যাত্রীদের অনেকেই লাফ দিয়ে লাইনে নামেন। তবে সমস্যায় পড়েন মহিলাদের অনেকে এবং বয়স্ক যাত্রীরা। তাঁদের কেউ কেউ অন্য যাত্রীদের সহায়তায় লাইনে নামতে পারেন। কিন্তু বিপত্তির শেষ সেখানেই হয়নি। যাত্রীরা জানান, ৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মের লাইনের দু’দিক সঙ্কীর্ণ। সেই জন্য দাঁড়িয়ে থাকা ওই ট্রেনের পাশ দিয়ে অনেকটা হেঁটে বেড়া টপকে ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ওঠেন যাত্রীরা।
রেল কর্তৃপক্ষ প্রথমে বিষয়টিকে তেমন আমল না-দিলেও ওই ভিডিয়ো ক্লিপ ভাইরাল হওয়ার পর ঘটনার কথা স্বীকার করে নেন। চালক কেন প্ল্যাটফর্মে ট্রেন থামালেন না কিংবা থামাতে পারলেন না, সেই প্রশ্ন তদন্তসাপেক্ষ বলে জানিয়েছেন পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী বলেন, “হয়তো ব্রেক ধরেনি বলে কিছুটা এগিয়ে গিয়ে ট্রেনটি থেমেছে। আমাদের অভ্যন্তরীণ তদন্ত চলছে। এখনও পর্যন্ত সঠিক কারণ জানা যায়নি।”