HIV Treatment : এইচআইভি পজ়িটিভ যুগলের চার হাত এক – hiv positive couple in sonarpur got married


প্রশান্ত ঘোষ সোনারপুর
রাত পোহালেই ভ্যালেন্টাইন্স ডে। তার আগেই চার হাত এক হলো সোনারপুরের এক যুগলের। রবিবার সকাল থেকেই জমজমাট ছিল আয়োজন। বিবাহ বাসরে বাজছিল শঙ্খধ্বনি, উলুধ্বনি, সানাইয়ের সুর। আলোয় ঝলমল করছিল বিয়ের মণ্ডপ। লাজে রাঙা উঠেছিল নববধূর মুখ। আর পাঁচটা বিয়ের মতো রীতি ও প্রথা মেনে বিয়ে হলেও, এই বিয়ে যথেষ্টই আলাদা। কারণ পাত্র-পাত্রী দুজনেই এইচআইভি পজ়িটিভ। জীবনযুদ্ধের এই লড়াইয়ে তাঁরা একে অপরকে সঙ্গী বেছে নিয়েছেন। পাত্রী দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুরের। পাত্র উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালির। সোনারপুরে এইচআইভি রোগীদের নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করে আসছে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। মূলত শিশুদের দেখভাল করে সংস্থাটি। ছোটবেলাতেই এই হোমে ঠাঁই হয়েছিল মেদিনীপুরের পল্লবী বসাকের (নাম পরিবর্তিত)। ছোটবেলাতেই বাবা-মাকে হারিয়ে এই হোমে থেকেই পড়াশোনা পল্লবীর। বাবা-মা দুজনেই পজ়িটিভ ছিলেন। তাঁদের মৃত্যুর পর এই হোমে নিয়ে আসা হয় পল্লবীকে।

Nadia News : কন্যা সম্প্রদান-কনকাঞ্জলি বাদ রেখেই গাঁটছড়া বাঁধলেন নদিয়ার দম্পতি
এই হোমেই শৈশব থেকে কৈশোর পার করে তারুণ্যে পা রেখেছেন তিনি। উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে বর্তমানে একটি কফি শপে কাজ করেন। কাজের পাশাপাশি প্রতিমাসেই পল্লবীকে মেডিক্যাল কলেজে যেতে হয় অ্যান্টি রেট্রোভাইরাল থেরাপি নিতে। ওই হাসপাতালেই তাঁর সঙ্গে আলাপ সন্দেশখালির বাসিন্দা পল্লব দত্তের (নাম পরিবর্তিত)। পল্লবও এইচআইভি পজ়িটিভ। ছোটবেলায় ডিপথেরিয়ার ইনজেকশন নিতে গিয়ে সিরিঞ্জ থেকে তাঁর শরীরে ঢোকে এইচআইভি জীবাণু। পল্লব-পল্লবীর নিয়মিত হাসপাতালে দেখা হতো। কথাবার্তাও শুরু হয়। এই আলাপ পরিচয় থেকেই সম্পর্কটা প্রেমে গড়ায়। শেষমেশ সেই প্রেম পরিণয়ে পূর্ণতা পেল। রবিবার সন্ধ্যায় সোনারপুরে বসে বিয়ের আসর। বিয়ের কার্ড ছাপানো থেকে অতিথি আপ্যায়ন সবই করেছেন পল্লবীর হোমের কর্তারা। জানা গিয়েছে, বিয়ের অনুষ্ঠানে পাত্রপক্ষের আংটি থেকে খাওয়ার ব্যবস্থা সবই করেছেন সমাজের বেশ কিছু সহৃদয় ব্যক্তি।

Bankura News : সরকারি হোমে আবাসিক ছাত্রের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার! নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন
এই বিয়েতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছেন কলকাতা পুরসভার ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরা তথা আইনজীবী অয়ন চক্রবর্তী। অয়ন বলেন, ‘সমাজে এইচআইভি পজ়িটিভদের এখনও অনেকে বাঁকা চোখে দেখেন। আমরা সেই জায়গা থেকে বেরিয়ে আসতে চাই। সঠিক চিকিৎসা দিলে এবং সমাজের মানুষের ভালো ব্যবহার পেলে ওদের জীবনটাও বদলে যেতে পারে। আমরা সেটাই বোঝাতে চেয়েছি।’ সোনারপুরের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে মৃণাল বিশ্বাস বলেন, ‘সঠিক চিকিৎসা পেলে দুজন পজ়িটিভ এইচআইভি পিতামাতার থেকেও সুস্থ সন্তান পাওয়া সম্ভব। আমরা চাই সমাজের প্রত্যেক মানুষ এগিয়ে এসে এইচআইভি পজ়িটিভ শিশুদের দায়িত্ব গ্রহণ করুক।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *