নিয়োগ দুর্নীতিতে কীভাবে নাম?
কুন্তলের দাবি অনুযায়ী নিয়োগ দুর্নীতিতে কোটি কোটি টাকার লেনদেন সবই জানতেই হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়। কিন্তু কে এই হৈমন্তী? দাবি অনুযায়ী, গোপাল দলপতির দ্বিতীয় স্ত্রী হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়। কুন্তলের বয়ানে সামনে এসেছিল, গোপাল দলপতির নামও। সূ্ত্রের খবর, গোপাল নাকি বিয়ের পর হৈমন্তীর সঙ্গে নাম মিলিয়ে নাম বদলে রাখেন আরমান গঙ্গোপাধ্যায়। নিয়োগ দুর্নীতির অন্যতম মাথা হিসেবে না উঠে আসা গোপাল দলপতিকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন হৈমন্তী। কিন্তু পরিবারের দাবি, বর্তমানে তাদের ডির্ভোস হয়ে গিয়েছে। কুন্তলের দাবি, নিয়োগ দুর্নীতির টাকা পৌঁছেছিল হৈমন্তীর অ্যাকাউন্টেও।
কে এই হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়?
কুন্তলের বয়ানে হৈমন্তীর নাম সামনে আসার পর ফেসবুকে আচমকাই প্রোফাইল সেটিংস বদলে লক করে দেন হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর পেশা নিয়ে ধোঁয়াশা থাকলেও হৈমন্তী নিজেকে টলিউডের এক অভিনেত্রী হিসেবে পরিচয় দিতেন। সোশাল মিডিয়া প্রোফাইল বলছে, মডেল শ্যুটও করেন তিনি। বাবার বাড়ি হাওড়ার বাঁকড়াপাড়ায়।
হৈমন্তীর পেশাদার জীবন
টলিউড সূত্রে খবর, স্ট্রাগলিং অভিনেত্রী হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়। বেশ কয়েকটি বি-গ্রেড মিউজিক ভিডিয়োয় অভিনয় করেছেন। এছাড়া সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় অভিনীত ‘জাল’ নামক একটি ছবিতেও অভিনয় করেছিলেন হৈমন্তী। সেই ছবির পরিচালকের দাবি, ছবিতে বিনিয়োগ করা এক ব্যক্তির সুপারিশে। এছাড়াও টলিউডে হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়ের কাজ দেখা এক ব্যক্তি দাবি, চটকদার চেহারা ছাড়া ক্যামেরায় সামনে আসার আর কোনও গুণ ছিল না তাঁর। না ছিল অভিনয় গুণ, না দক্ষ ছিলেন নাচ-গানে। ফলে সুপারিশই ছিল আসল।
সম্প্রতি অতনু বসুর ছবি ‘অচেনা উত্তম’ সিনেমায় নার্সের রোলে সুযোগ পেয়েছিলেন হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়। কিন্তু, মাত্র একদিনের শ্যুটিংয়ের পরই তাঁকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয় বলে জানা গিয়েছে। পরিচালকের দাবি, পরিচিত কাঠের মিস্ত্রিকে ধরে এই সিনেমায় সুযোগ পেয়েছিলেন। তিন চারদিনের শ্যুটিং শিডিউল ছিল। কিন্তু, প্রথমদিন এসেই সিনেমার প্রযোজকের সঙ্গে যোগসূত্র খোঁজার চেষ্টা করে। সেই প্রযোজকের সঙ্গে অন্য পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ পরিচালকের। এরপরই ওই সিনেমায় হৈমন্তীর ভূমিকায় চলে কাঁচি।
হৈমন্তীর সম্পত্তি
গোপাল দলপতির মতো বেপাত্তা হৈমন্তীও। হৈমন্তী এগ্রো প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি সংস্থায় ডিরেক্টর হিসেবে রয়েছে তাঁর নাম। বিবাদীবাগে রয়েছে তাঁর অফিস। যদিও বর্তমানে তালাবন্ধ সেই অফিস। এছাড়া সিরোকো পার্টনার্স নামে মুম্বইয়ের এক সংস্থার ডিরেক্টর পদেও নাম রয়েছে হৈমন্তীর। সেই সংস্থায় পার্টনার আরমান গঙ্গোপাধ্যায় ওরফে গোপাল দলপতি। অফিস নরিম্যান পয়েন্ট। কুন্তল ঘোষের দাবি অনুযায়ী ওই সংস্থার অ্যাকাউন্টেই ট্রান্সফার হয়েছে নিয়োগ দুর্নীতির কোটি কোটি টাকা।
সূত্রের দাবি, হৈমন্তীর নামে রয়েছে একাধিক ফ্ল্যাট। বেহালা ও টালিগঞ্জে খোঁজ মিলেছে হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাটের। বর্তমানে দুটি ফ্ল্যাটই তালা বন্ধ থাকলেও প্রতিবেশীদের দাবি, ২০১৫ সাল থেকেই গোপাল দলপতির সঙ্গে টালিগঞ্জের ফ্ল্যাটে থাকতেন হৈমন্তী। ২০২৩ সালে জানুয়ারিতে শেষবার হৈমন্তীকে সেখানে দেখেন বলে দাবি প্রতিবেশীর।