গত বছর অগাস্ট মাসে গোরু পাচার মামলায় CBI-এর হাতে গ্রেফতার হন বীরভূমের দাপুটে তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল। এরপর থেকে তিনি সংশোধনাগারেই রয়েছেন। তাঁকে দিল্লি নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছিল আসানসোলে CBI-এর বিশেষ আদালত।
কলকাতা হাইকোর্টে রক্ষাকবচের জন্য দ্বারস্থ হলেও সেখানেও ধাক্কা খেয়েছেন এই দুঁদে নেতা। মোটের উপর দিল্লি যাওয়া একপ্রকার পাকা কেষ্টর। এই অবস্থায় ভেঙে পড়েছেন সুকন্যা। তাঁর এক প্রতিবেশী জানাচ্ছেন, মাঝে মধ্যে বাইরে বার হচ্ছেন সুকন্যা। তবে বেশিরভাগ সময় তিনি কাটাচ্ছেন বাড়িতে।
তাঁর কথায়, “গত ছয় মাসে তৃণমূললের কোনও শীর্ষ নেতা বা মন্ত্রী সুকন্যার সঙ্গে দেখা করতে বীরভূমের বসতবাড়িতে আসেননি। এমনকী, সেভাবে কোনও আত্মীয়কেও দেখা যায়নি। বর্তমানে বাড়িতে সুকন্যার পাশাপাশি নিরাপত্তা রক্ষী, বাড়ির পরিচারিকার পাশাপাশি সুকন্যার এক বান্ধবী থাকেন মাঝেমধ্যে।”
প্রতিবেশীদের কথায়, অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারির আগে তাঁর বাড়ির সামনে রীতিমতো গাড়ির মেলা লেগে যাকত। নিত্য VIP-দের আনাগোনা ছিল। কিন্তু, অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারির পর শুনশান হয়েছে বাড়ির সামনের চত্বর।
তবে কোনও পর্যটক এলে তাঁরা অনেক সময় অনুব্রত মণ্ডলের বাড়ির সামনে দাঁড়ান। আবার কেষ্টর বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ছবিও তুলে যান অনেকে। উল্লেখ্য, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে জানা গিয়েছিল, প্রাথমিক স্কুল শিক্ষিকা সুকন্যার বেতন কয়েকমাস বন্ধ রয়েছে। বোলপুরের কালিকাপুরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা তিনি।
বিষয়টি নিয়ে সেই সময় সংশ্লিষ্ট জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান প্রলয় নায়েক জানিয়েছিলেন, প্রাপ্য ছুটি শেষ হওয়ার পরও সুকন্যা স্কুলে যোগ দেননি। আর এই কারণের জেরেই নিয়ম মোবেক উইদাউ পে হয়ে তে চলেছে গিয়েছেন সুকন্যা।
তিনি আরও জানিয়েছিলেন, অনুব্রত মণ্ডলের মেয়ে যেদিন কাজে যোগ দেবেন সেদিন এই ছুটির কারণ দেখাতে হবে তাঁকে। জানা গিয়েছে, জানুয়ারি মাসের শুরু থেকে বেতন পাচ্ছিলেন না সুকন্যা। যদিও তিনি স্কুলে যোগ দিয়েছেন কিনা সেই বিষয়টি নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। শনিবার অনুব্রত মণ্ডলের আবেদন শুনেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। কিন্তু, আসানসোল আদালতের সিদ্ধান্তে স্থগিতাদেশ দেয়নি হাইকোর্ট। বরং তথ্য গোপন রাখার জন্য এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছিল অনুব্রত মণ্ডলকে।