জঙ্গল লাগোয়া এলাকাতে খাবারের খোঁজে হাতির হানার ঘটনা নতুন কিছু নয়। জনবসতি এলাকাগুলিতে প্রায়ই খাবারের খোঁজ করতে এসে বাড়ি, ঘর ভাঙচুর, চাষের জমিতে তাণ্ডব। এসব হয়েই থাকে। ফলে ভালো চাষাবাদ করেও ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে স্থানীয় কৃষকদের। বন দফতর, হল্লা পার্টির একাধিক কার্যক্রমের পরেও মেটানো যাচ্ছিল না সমস্যা। সংকট মোচনে বুদ্ধি আঁটলেন গ্রামবাসীরাই। চাষের জমিতে আগে থেকেই হাতির জন্য কিছু আহারের ব্যবস্থা করে আসছেন তাঁরা। যাতে আর গ্রামমুখো হতে হচ্ছে না গজরাজদের।
কালচিনি ব্লকের লতাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় হাতির হানা এড়াতে অদ্ভুত উদ্যোগ বিশ্বনাথ পাড়ার কৃষকদের। চাষের ফসল কাটার সময় হাতির জন্য জমিতে একাংশ ফসল রেখে আসছেন তাঁরা। হ্যাঁ, শুনতে অবাক লাগলেও এটাই বাস্তব। মজা করে তাঁরা এই ব্যবস্থার নাম দিয়েছেন ‘গুণ্ডা ট্যাক্স’। নতুন উদ্যোগের হাতেনাতে ফলও মিলেছে বলে দাবি গ্রামবাসীদের।
এ বিষয়ে কৃষক ঘনশ্যাম ছেত্রী জানান, ‘পূর্বে হাতি এলাকায় এসে ফসল নষ্ট করত। তবে গত কয়েক বছর ধরে হাতির আর ক্ষতি করে না। কারণ আমরা যে ফসলই চাষ করি না কেন, তার থেকে হাতির জন্য কিছুভাগা ফসল রেখে দেই। যেমন, ধান চাষ করলে আধা বিঘা ধান হাতির জন্য বা কুমড়ো চাষ করলেও দশ বাড়তি কুমড়ো হাতির জন্য রেখে দেই।”
এই এলাকার একদিকে যেমন আছে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গল। তেমনি অন্যদিকে রয়েছে জলদাপাড়া অভয়ারণ্য। আর এই দুই জঙ্গল থেকেই প্রতিনিয়ত লোকালয়ে হাতি চলে আসার নজির রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। তবে যখন থেকে ওই এলাকার চাষিরা জমিতে হাতির খাবারের জন্য ফসল রাখা শুরু করেছেন, তখন থেকে ওই এলাকায় আর হাতির তাণ্ডবের কোনও ঘটনা নজরে আসেনি।
চাষিরা হাতিদের জন্য যে ফসল টুকু রেখে দেন, হাতি সেই ফসলটুকু খেয়েই জঙ্গলে ফিরে যায়। বিষয় লক্ষ্য করার পর থেকে প্রতি নিয়ত এলাকার চাষিরা হাতিদের খাবারের জন্য জমিতে ফসল রেখে আসছেন এবং হাতিরাও সেই ফসলের বাইরে অন্য কোনও খাবারে ভাগ বসায় না।