সেই খবর জানাজানি হতেই আলিপুরদুয়ার জেলা শহরের বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সামনে ফাঁদ এঁটে বসেন পুলিশ কর্মীরা। এদিন বিকেলে আলিপুরদুয়ার কলেজ হল্ট এলাকায় স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার মূল শাখার সামনে জয়গাঁও থানা এলাকায় প্রতারণার ঘটনায় ব্যবহৃত গাড়ি দেখতে পায় পুলিশ কর্মীরা। এরপরেই চুপিসারে গাড়িতে আসা দুই অভিযুক্তকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করে আলিপুরদুয়ার থানার অ্যান্টি ক্রাইম টিমের পুলিশ কর্মীরা।
ঘটনাস্থল থেকে পালাতে সক্ষম হয় চক্রের তিন অভিযুক্ত। আটক হওয়া দুই অভিযুক্তদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে পলাতক অপর দুই অভিযুক্তকে আলিপুরদুয়ার চৌপথি এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ এবং পরবর্তীতে বড়বাজার এলাকা থেকে আরও একজনকে গ্রেফতার করা হয়। বাজেয়াপ্ত করা হয় একটি আসাম নম্বরের ছোট গাড়ি।
অভিযুক্তদের গাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ১৭ টি এটিএম , ৬ টি মোবাইল সহ ২০ হাজার টাকার উপরে নাগদ টাকা বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। জানা গিয়েছে, ইতিপূর্বে আসাম এলাকার তিন জায়গায় একই রকম ভাবে টাকা নিয়ে চম্পট দিয়েছিল অভিযুক্তরা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত তিন দিন আগে আসামের নম্বরের গাড়ি চড়ে বিহারের মতিহারের পাঁচ অভিযুক্ত টাকা ছিনতাইয়ের জন্য কোচবিহারে একটি হোটেলে আস্তানা নেয়।
জয়গাঁ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাগরাজ দেবারাকোন্ডা বলেন, “সোমবার জয়গাঁ ও হাসিমারা এলাকায় প্রতারনার অভিযোগ ওঠে। মঙ্গলবার আলিপুরদুয়ার শহরের তিন জায়গা থেকে পাঁচ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযুক্তদের কাছে থেকে নগদ টাকা ,এটিএম, মোবাইল ও একটি চার চাকার গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে”।
কিভাবে টাকা ছিনতাই চলতো? দুই হাজার টাকার দুটি নকল বান্ডিলকে ভরসা করেই এই প্রতারণার ছক চালাতো অভিযুক্তরা। প্রথমে ব্যাঙ্ক এলাকায় মোটা অঙ্কের টাকা তুলেছেন এমন গ্রাহকদের চিহ্নিত করা হতো। তারপর ওই গ্রাহককে অন্য অ্যাকাউন্টে টাকা ট্রান্সফারের কমিশন দেওয়ার নাম করে চার লাখ টাকা জমা করতে বলত।
সেই গ্রাহক অভিযুক্তদের কথা মতো ফর্ম পূরন করতে বা টাকা জমা করার উদ্যোগ নিতে থাকলে সুযোগ বুঝে তারা চম্পট দিত অভিযুক্তরা। তবে তার আগে গ্রাহকের ভরসা পেতে দুটি নকল টাকার বান্ডিল হাতে ধরিয়ে দেওয়া হত। গ্রাহক যখন বুঝতে পারতেন ততক্ষণে টাকা নিয়ে এলাকা থেকে উধাও হয়ে যেত অভিযুক্তরা।
অভিযোগ পাওয়া পরেই পুলিশ অভিযুক্তদের শনাক্ত করার চেষ্টা করে। CCTV তে বন্দি অভিযুক্তদের ছবি সহ তথ্য জোগাড় করে জয়গাঁও থানার পুলিশ। তারপর মঙ্গলবার শহরের একাধিক ব্যাঙ্কগুলির সামনে নজরদারি চালানোতেই বড় সাফল্য পায় আলিপুরদুয়ার থানার অ্যান্টি ক্রাইম টিমের পুলিশ কর্মীরা।