দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার মুখ্য বনপাল মিলন মণ্ডল জানান, এবার তাঁরা মনে করছেন যে মোট ১০ মেট্রিক টন মধু সংগ্রহ করা সম্ভব হবে৷ এর বাজার মূল্য হবে প্রায় ২৫ লাখ টাকা। এ বছর সুন্দরবনের অন্তর্গত দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় রায়দিঘী বিটে ৪২টি, মাতলা বিটে ২৯টি ও রামগঙ্গা বিটে ১৯টি দলকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে৷
বন দফতর সূত্রে খবর, প্রতিটি দলে ৬ থেকে ১০ জন করে রয়েছে। নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে বন দফতর। যাঁরা মধু সংগ্রহে যাচ্ছেন তাঁদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে৷ গভীর জঙ্গলে দুর্ঘটনা ঘটার কথা মাথায় রেখে প্রত্যেকের জন্য ৫ লাখ টাকার জনতা জীবন বিমা করা হয়েছে৷ নজরদারি চালানো হবে বন দফতরের পক্ষ থেকেও৷
এছাড়াও নানান সরঞ্জাম যেমন মুখোশ, টি- শার্ট ও বোট লাইসেন্স সার্টিফিকেটও দেওয়া হয়েছে ৷ কুলতুলি ব্লকের কৈখালি থেকে রওনা দিয়েছে মৌলেদের একটি দল৷ আপাতত ১৫ দিন তারা মধু সংগ্রহের জন্য গভীর জঙ্গলে থাকবেন৷ অর্থ উপার্জনের এছাড়া অন্য কোনও উপায় নেই৷ তাই বিপদকে মাথা নিয়েই তাঁরা রওনা দিয়েছেন৷ যাওয়ার আগে রীতিমেনে করা হল পুজো-পাঠ৷ উপস্থিত ছিলেন পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও৷ ঠাকুরের কাছে তাঁদের একটাই প্রার্থনা ভালোভাবে বাড়ি ফিরে আসুক ঘরের ছেলে।
মৌলে পরিবারের সদস্য মিনতি নাইয়া বলেন, “আমাদের তো এই কাজ ছাড়া আর উপায় নেই। তাই আমাদের ঘরের লোকেদের মধু সংগ্রহে জঙ্গলে যেতে হয়। একটা ভয় তো আছেই, জঙ্গলে নানারকম পশু আছে, বাঘ আছে। কিন্তু কিছু তো আর করার নেই।” আরেক সদস্য নন্দরানি নাইয়া বলেন, ” এঁরা যেরকম হেসেখেলে যাচ্ছে, সেরকমই যেন ফিরে আসে। সেই প্রার্থনা করি। আজকে আমাদের এখানে পুজো পাঠ করা হলো। ভগবানের কাছে প্রার্থনা জানানো হল।”
বন দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, মৌলেদের সঙ্গে জলে বন দফতরের নিজস্ব নজরদারি নৌকা থাকবে। তারা টহলদারি চালিয়ে যাবে। কোনও ব্যক্তি সমস্যায় পড়লে যাতে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তার জন্য বন দফতরের নৌকা টহলদারি চালিয়ে যাবে।