পিয়ালি মিত্র: কুন্তল ঘোষের বিরুদ্ধে ইডির চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে শিক্ষা সচিব মণীশ জৈনের কথা। অভিযুক্ত হিসেবে নয়, নিয়োগ দুর্নীতিতে তার ভূমিকা চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে। ইডির দাবি, পার্থর নির্দেশে অযোগ্যদের ইন্টারভিউয়ের ব্যবস্থা করতেন মণীশ। যদিও জি ২৪ ঘণ্টায় সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মণীশ।
নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িত হুগলির যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষের বিরুদ্ধে ব্যাঙ্কশাল আদালতে চার্জশিট জমা দিল ইডি। আদালতে ইডির দাবি, অযোগ্যদের জন্য ভুয়ো ইন্টারভিউয়ের ব্যবস্থা করা হতো। সেখানেই হতো টাকার রফা। ওইসব ইন্টারভিউয়ের ব্যবস্থা করতেন শিক্ষা সচিব মণীশ জৈন, তত্কালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আপ্ত সহায়ক সুকান্ত আচার্য ও অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি প্রবীর বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে মণীশ, সুকান্ত ও প্রবীরের নাম চার্জশিটে অভিযুক্ত হিসেবে উল্লেখ করেনি ইডি।
আরও পড়ুন-ঝাড়খণ্ড থেকে সুপারি কিলারদের আনতে গিয়েছিল সেই নীল গাড়ি, পুলিসের হাতে সিসিটিভি ফুটেজ
এদিকে, ইডির চার্জশিটে তাঁর নাম উল্লেখ নিয়ে শিক্ষা সচিব মণীশ জৈন জি ২৪ ঘণ্টাকে তিনি বলেন, অত্যন্ত শকিং। আমার নাম কীভাবে এল বুঝতে পারছি না। এরকম কোনও ইন্টারভিউয়ে আমি কখনওই ছিলাম না। এনিয়ে তদানীন্তন মন্ত্রীর সঙ্গে কোনও কথাও হয়নি। তিনি আমাকে এরকম কোনও নির্দেশও দেননি। কে, কেন, কী উদ্দেশ্যে আমরা নাম জড়াল, ঈশ্বরই জানেন। এমন লোক আমার নাম করেছে বলা হচ্ছে যাকে আমি চিনিই না। যে প্রক্রিয়ায় আমার কোনও ভূমিকাই ছিল না সেখানে আমার নাম জড়ালে তো কাজ করাই মুসকিল। তদন্তকারী সংস্থা তার তদন্ত করবে। তদন্তকারীদের উপরে আমার সম্পূর্ণ বিশ্বাস আছে।
কুন্তলের বিরুদ্ধে চার্জশিটে ইডির দাবি, চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগ বাবদ তাপস মণ্ডল কুন্তলকে ৩ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা তুলে দেন। সেই টাকার ২৫ লক্ষ টাকা নিজের কমিশন তুলে রাখেন কুন্তল। বাকি ৩ কোটি টাকা জমা দেন গোপাল দলপতির সংস্থা আরমান ট্রেডিংয়ের অ্যাকাউন্টে। কুন্তলের দাবি, গোপাল তাঁকে বলেন, ওই ৩ কোটি টাকা সুকান্ত আচার্য, তৃণমূল কাউন্সিলর পার্থ সরকার ওরফে ভজা, পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ দীপক সরকার ও ওএসডি প্রবীর বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাধ্যমে তুলে দেওয়া হয় তত্কালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হাতে। ২০১৭-১৮ সালে নিউটাউনের একটি হোটেলে কুন্তল নিজে পার্থর ওএসডি প্রবীর বন্দ্যোপাধ্যায় ও গোপাল দলপতির হাতে নগদ পঁয়তাল্লিশ লাখ টাকা দেন। ২০১৮ সালে পার্থ ঘনিষ্ঠ দীপক সরকারের হাতে দেন দেড় কোটি টাকা। ইডির অভিযোগ, কুন্তল বিএড ও ডিএলএড কলেজের অনুমোদনের জন্যও টাকা তুলতেন। পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য টাকার বিনিময়ে সেই ব্যবস্থা করে দিতেন।
নিয়োগ দুর্নীতিতে কোটি কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে বলে দাবি ইডির। কুন্তল ঘোষ, শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় ও শান্তনুর পরিচিত অয়ন শীলের হাত দিয়ে বিপুল টাকা লেনদেন হয়েছে বলে দাবি ইডির। অয়নের বিপুল সম্পত্তির হদিস পেয়েছেন তদন্তকারীররা। মোট ৮টি ফ্ল্য়াট, ৫টি গাড়ি, ১টি পেট্রোল পাম্প ও একটি হোটেলের মালিক অয়ন শীল। দুর্নীতির টাকাতেই ওই সম্পত্তি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। মোট ১ হাজার জনের কাছ থেকে ৪৫ কোটি টাকা তুলেছেন অয়ন শীল। ২৬ কোটি টাকা এক এজেন্টকে দিয়েছিলেন। এমনটাই দাবি ইডির। অয়নকে আদালতে পেশ করে গত ১ এপ্রিল ওইসব দাবি করে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা।
Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)