সংক্রামিতের প্রায় অর্ধেকই কলকাতার বাসিন্দা। রাজ্যে অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা এখন ৪০০-এরও বেশি। তাঁদের মধ্যে ২১ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বাংলার পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে বৃহস্পতিবারই বৈঠকে বসে গ্লোবাল অ্যাডভাইজ়ারি বোর্ড। করোনা মোকাবিলার জন্য ২০২০ সালে তৈরি হয়েছিল এই বোর্ড। সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে টেস্ট বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে বোর্ড।
টিকা নেওয়ার পরেও যাঁরা সংক্রামিত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন, তাঁদের সকলে বুস্টার ডোজ পেয়েছেন কি না, তা জানার সুপারিশও করেছে বিশেষজ্ঞ দল। বর্তমানে রাজ্যে টিকার ভাঁড়ার শূন্য বলে ফের কেন্দ্রের থেকে টিকা আনানোর কথাও উঠেছে বোর্ডের বৈঠকে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-এর মতে, করোনার এই সাম্প্রতিক বাড়বাড়ন্তের পিছনে রয়েছে ওমিক্রনের সাব-ভ্যারিয়েন্ট এক্সবিবি.১.১৬, যা ‘আর্কটুরাস’ নামেও পরিচিত। মার্চের শেষদিকেই হু জানিয়ে দিয়েছিল অতি সংক্রামক এই ভ্যারিয়েন্টকে নজরে রাখছে তারা। তবে নতুন ভ্যারিয়েন্টটি নতুন অনেক উপসর্গ সঙ্গে নিয়ে আসছে বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা।
মাইক্রোবায়োলজিস্ট অরিন্দম চক্রবর্তী জানিয়েছেন, মাথাব্যথা, গলায় ঘা, জ্বর-কাশির পাশাপাশি বাচ্চাদের ক্ষেত্রে চোখ লাল হয়ে যাওয়া, ফুলে যাওয়া, কনজাংটিভাইটিসের মতো উপসর্গও দেখা দিচ্ছে। সেই সঙ্গে নাক দিয়ে জল পড়া, ক্লান্তি, পেটের সমস্যা, কাশি তো আছেই। করোনার টিকা নেওয়া ব্যক্তিদেরও সংক্রামিত করতে পারে এই ভ্যারিয়েন্ট, আর সেটাই বাড়াচ্ছে চিন্তা।
ভাইরোলজিস্ট সিদ্ধার্থ জোয়ারদারের কথায়, ‘ওমিক্রনের এই নতুন উপপ্রজাতির জিনোম অর্থাৎ আরএনএ-তে তিনটে মিউটেশন ঘটেছে। স্পাইক প্রোটিনের ১৮০, ৪৭৮ এবং ৪৮৬ নম্বর অ্যামাইনো অ্যাসিডে গঠনগত বদল এসেছে। ৪৭৮ নম্বরে লাইসিন নামক অ্যামাইনো অ্যাসিডের পরিবর্তে এসেছে আরজিনিন। এর তার ফলে এই ভ্যারিয়েন্টটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে ফাঁকি দিতে পটু হয়ে উঠেছে।
শরীরে মজুত করোনা অ্যান্টিবডি একে কাবু করতে পারছে না। নতুন উপসর্গ কনজাংটিভাইটিস এই মিউটেশনের জন্যই হচ্ছে কিনা, তা নিয়েও গবেষণা প্রয়োজন। তবে স্বস্তির কথা একটাই, এই নতুন ভ্যারিয়েন্টের মারণক্ষমতা বেশি নয়।’ তবে, ফের মাস্কের ব্যবহার, ভিড় এড়িয়ে চলা, কোভিড বিধি মানার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।