বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় মঙ্গলঘট ভরে শুরু হয় পারশালিকা গ্রামের ৩৬ প্রহরের অহরাত্রি কীর্তন গান। ১০৮ জন কুমারী মেয়ে মঙ্গলঘট ভরে প্রতিষ্ঠা করে হরিবাসরে। ১ বৈশাখ থেকে আগামী চারদিন চলবে পালা কীর্তন গান। ৪ বৈশাখ নগর পরিক্রমা ও অন্নকুট মহৎসব দিয়ে শেষ হবে অহরাত্র।
গত চল্লিশ বছর ধরে একই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আসছেন গ্রামবাসীরা। মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা পড়লে দিনের রদবদল করা হয়। তবে কোনও বছর অনুষ্ঠানে ছেদ পড়েনি পড়েনি বলে জানালেন উদ্যোক্তারা। কলকাতা, নদীয়া, বীরভুম, বর্ধমানের কীর্তন শিল্পীরা আসেন হরিবাসরে কীর্তন পরিবেশনে।
কয়েক হাজার ভক্তের সামনে পরিবেশিত হল পালা কীর্তন। হরিনাম যজ্ঞের সম্পাদক পলাশ ঘোষ বলেন, “গত চল্লিশ বছর ধরে হরিবাসরের আয়োজন করে আসছেন গ্রামের মানুষ। মঙ্গলঘট স্থাপন আর নগর পরিক্রমার শোভাযাত্রা এই অনুষ্ঠানকে আকর্ষণীয় করে তুলেছে।”
ভোরবেলা পার্শ্ববর্তী অঞ্চল থেকে ১০৮ জন কুমারী বালিকা গঙ্গা নদী কিনারে এসে উপস্থিত হয়। নদী থেকে গঙ্গা জল নিয়ে শুরু হয় কুমারীদের এই পুণ্য কলস যাত্রা। বর্ণাঢ্য পুণ্য কলস যাত্রা হয় দেখার মতো।
১০৮ জন কুমারী বালিকা কলস কাঁখে করে সারিবদ্ধভাবে সংকীর্ত্তন প্রাঙ্গনের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। ঢাক, ঢোল, মৃদঙ্গ বাজিয়ে মহা সমারোহে শুরু হয় পুণ্য কলস যাত্রা। এই যাত্রার সাক্ষী থাকতে জড়ো হয় প্রচুর গ্রামবাসী।
গ্রামের এই মহানাম সংকীর্তনের আরও একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল অষ্ট প্রহর ধরে এই সংকীর্তন উৎসব পালন করা হয়। শুরুর বছর থেকেই এটি অষ্টপ্রহর সময় ধরে পালন হয়েছিল। সেই থেকে এই নিয়ম, আচারের অন্যথা করা হয়নি।
বৈশাখের শুরুতে মানুষের জীবনকে কল্যাণময় করে তোলার জন্যএই হরিনাম সংকীর্তন অনুষ্ঠানের পালন হয়ে থাকেনিয়ম নীতি মেনে বলে জানান গ্রামবাসীরা। স্থানীয় অঞ্চল থেকে প্রায় হাজার খানেক মানুষের জনসমাগম হয় এই অনুষ্ঠানে। ৪ বৈশাখ নগর পরিক্রমা ও অন্নকুট মহৎসব দিয়ে এই অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটবে।