Harry Belafonte, জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: সংগীত জগতে নক্ষত্র পতন। চলে গেছেন বর্ষীয়ান সংগীতশিল্পী হ্যারি বেলাফন্টে। তাঁর মুখপাত্র, তাঁর দীর্ঘ দিনের সঙ্গী কেন সানসাইন সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে শিল্পীর। মঙ্গলবার ম্যানহাটনের আপার ওয়েস্ট সাইডে নিজের বাড়িতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর। তাঁর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ সংগীত জগত।
আরও পড়ুন- Salman Khan| Bhagyasree: ৩৩ বছর পর ভাগ্যশ্রীর সঙ্গে বড়পর্দায় সলমান, ঝড়ের গতিতে ভাইরাল দৃশ্য…
আমেরিকার সামাজিক আন্দোলনের অন্যতম স্মরণীয় নাম হ্যারি বেলাফন্টে। আমেরিকায় বর্ণবৈষম্যের আগল ভাঙতে নিজের গানকে হাতিয়ার করেছিলেন এই সংগীতশিল্পী। পাঁচের দশকে আমেরিকান লোকগানের জগতে আলোড়ন ফেলেছিলেন তিনি। আমেরিকায় যখন সাদা-কালো বর্ণভেদ সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে তখন কালো চামড়ার বা অশ্বেতাঙ্গ গায়কের ব্যারিটোন কন্ঠ শুধুমাত্র আমেরিকাতেই নয়, সারা বিশ্বে ঝড় তুলেছিল। গানের হাত ধরেই বর্ণবৈষম্য পেরিয়ে বৃহত্তর সমাজের কাছে পৌঁছতে সফল হয়েছিলেন তিনি। এমনকী সাম্প্রতিক সময়ে অশক্ত শরীরেও বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছিলেন তিনি। অনেকের মতে, ক্যারিবিয়ান-আমেরিকান শিল্পীদের মধ্যে তিনিই সফলতম। শুধু রেকর্ডিং স্টুডিয়ো নয়, মঞ্চেও ঝড় তোলেন হ্যারি বেলাফন্টে। একসময় ইচ্ছে ছিল অভিনেতা হওয়ার তাই গানের পাশাপাশি অভিনয় জগতেও পা রাখেন তিনি। গায়ক হিসাবে মঞ্চে জনপ্রিয়তা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই আসতে থাকে সিনেমার অফার। এক সময় হলিউডের প্রথম সারির অভিনেতার তালিকায় নাম ওঠে বেলাফন্টের।
১৯২৭ সালের পয়লা মার্চে হার্লেমের এক ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান অভিবাসী পরিবারে জন্মেছিলেন বেলাফন্টে। নিউইয়র্কে জন্ম গ্রহণ করলেও তাঁর শৈশব কাটে জামাইকায়। ডিসলেক্সিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার কারণে পড়াশোনা করতে পারেননি তিনি। ১৭ বছর বয়সে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে আমেরিকান নৌসেনায় যোগদান করেন বেলাফন্টে। যুদ্ধ থেকে ফিরে অভিনয়ের ক্লাসে যোগদান করেন, পাশাপাশি চলে গানের চর্চ্চা। নিউইয়র্কে নানা ক্লাবে গান গেয়ে প্রথম জনপ্রিয়তা পান হ্যারি বেলাফন্টে। ১৯৫৪ সালে মুক্তি পায় তাঁর প্রথম অ্যালবাম।
আরও পড়ুন- Nisha Noor: অভিনয় ছেড়ে বাধ্য দেহ বেচতে, মাত্র ৪৪ বছরেই মর্মান্তিক পরিণতি অভিনেত্রীর…
জামাইকান মেন্টো লোকগানের সঙ্গে ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো ক্যালিপসো জুড়েছিলেন বেলাফন্টে। লোকগানের পাশাপাশি ব্লুজ, গসপেল এমনকী আমেরিকান স্ট্যান্ডার্ড-এর মতো জঁরেও গান গেয়েছেন তিনি। ‘জাম্প ইন দ্য লাইন’, ‘দ্য বানানা বোট সং’, ‘ওডস এগেনস্ট টুমরো’, ‘কারমেন জোন্স’, ‘আইল্যান্ড ইন দ্য সান’-তাঁর জনপ্রিয় গানের তালিকা বেশ দীর্ঘ। ‘ডে-ও’,‘জামাইকা ফেয়ারওয়েল’ বা ‘ক্যালিপসো’-র মতো অ্যালবাম শুধু আমেরিকায় নয়, জনপ্রিয়তা পেয়েছিল ভারতেও। বেলাফন্টের ক্যালিপসো অ্যালবামটি কোনও একক শিল্পীর প্রথম অ্যালবাম, যার ১০ লক্ষ কপি বিক্রি হয়েছিল। পঞ্চাশের দশকের শেষে অ-শ্বেতাঙ্গ শিল্পী হিসাবে তাঁর আয় ছিল সর্বাধিক।