জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: তিন মাস পর ফের দিল্লির যন্তর মন্তরে ধর্নায় বসেছেন ভিনেশ ফোগাট (Vinesh Phogat) ও সাক্ষী মালিকের (Sakshi Malik) মতো ভারতের (India) একাধিক নামী কুস্তিগিররা। তাঁদের দাবি একটাই। গ্রেফতার করতে হবে জাতীয় কুস্তি সংস্থার (Wrestling Federation of India) সভাপতি ব্রিজ ভূষণ শরণ সিংকে। (Brij Bhushan Sharan)। ব্রিজ ভূষণের বিরুদ্ধে গুরুতর যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছিলেন দেশের একাধিক কুস্তিগিররা। তাঁদের মনে হচ্ছে যে, এই গুরুতর ইস্যুতে কেন্দ্র চোখে পট্টি বেঁধেছে। রাজধানীর রাস্তায় বসে ভিনেশ-সাক্ষীরা চোখের জল ফেলছেন। রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে প্রাক্তন ক্রিকেটার ও বিনোদন জগতের পরিচিত মুখেরা সরব হয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ট্যুইট করে পাশে দাঁড়ালেন কুস্তিগিরদের। তেলঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতির সোশ্যাল মিডিয়া আহ্বায়ক ওয়াই সতীশ রেড্ডিও (YSR) ট্যুইট করেছেন কুস্তিগীরদের পাশে দাঁড়িয়ে। আম আদমি পার্টিরও সমর্থন পেয়েছেন কুস্তিগিররা। এসএফআই নেত্রী ঐশী ঘোষও ট্যুইট করেছেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন ট্যুইটারে লেখেন, ‘আমাদের সকলের উচিত প্রতিবাদী কুস্তিগিরদের পাশে দাঁড়ানো। তাঁরা সকলে একই কণ্ঠে কথা বলছেন। আমাদের ক্রীড়াবিদরা আমাদের দেশের গর্ব। তাঁরা চ্যাম্পিয়ন। রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নির্বিশেষে দোষীদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনতে হবে। ন্যায়বিচারকে প্রাধান্য দিতে হবে। সত্যের জয় হবেই’ এক অপ্রাপ্তবয়স্ক সহ কুস্তিগীরদের পক্ষে ৩২ ধারার অধীনে একটি রিট পিটিশন দায়ের করা হয়েছিল ব্রিজ ভূষণের বিরুদ্ধে। দিল্লি পুলিশ কমিশনারকে ডব্লিউএফআই প্রধানের বিরুদ্ধে এফআইআর নথিভুক্ত করার আবেদন করা হয়েছিল। পিটিশনে অভিযোগ করা হয় যে, ডব্লিউএফআই সভাপতির বিরুদ্ধে এফআইআর নিবন্ধনের ক্ষেত্রে মাত্রাতিরিক্ত দেরি হয়েছে। এমনকি ব্রিজ ভূষণের বিরুদ্ধে শুধুই যৌন হেনস্থা নয়, পকসো (প্রোটেকশন অফ চিলড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্সেস) আইনেও অভিযোগ রয়েছে।
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে যৌন হেনস্থা এবং মৃত্যুর হুমকি দেওয়ার অভিযোগ তুলে ব্রিজ ভূষণের শাস্তি এবং ভারতীয় কুস্তি সংস্থার প্রশাসনের পরিবর্তন দাবি জানিয়ে নতুন দিল্লির যন্তর মন্তরে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন ভিনেশ-সাক্ষীর মতো দেশের প্রথম সারির কুস্তিগীররা। সেই অবস্থান বিক্ষোভে তাঁরা দাবি করেছিলেন, ফেডারেশন কর্তারা মহিলা কুস্তিগীরের সঙ্গে অশ্লীল ব্যবহার করেছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে অভিযোগ করার জন্য ভিনেশ ফোগাটকে নাকি খুনের হুমকিও দিয়েছিলেন ব্রিজ ভূষণ!। সেই হুমকির জন্য মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে আত্মহত্যার কথাও নাকি ভেবেছিলেন ভিনেশ। একাধিক কুস্তিগীরের প্রতিবাদের জন্য কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রক গত ২৩ জানুয়ারি মেরি কমের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটা তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল। পরে কুস্তিগীরদের দাবিতে এই কমিটিতে ববিতা ফোগাটকে ষষ্ঠ সদস্য হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। এই কমিটিকে বলা হয়েছিল এক মাসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে। পরে আরও দুই সপ্তাহের সময়সীমা বাড়ানো হয়। সেই রিপোর্ট ব্রিজ ভূষণকে কাঠগড়ায় দাঁড় করায়নি।