আসানসোলে বিজেপি নেতা খুনের পেছনে তাঁরই পরিচিত! খুনিকে ধরতে পুলিসকে সময়সীমা বেঁধে দিলেন অগ্নিমিত্রা


বিক্রম দাস ও বাসুদেব চট্টোপাধ্যায়: গতাকাল আসানসোলে জাতীয় সড়কের ধারে একটি গাড়ির মধ্যে পাওয়া য়ায় আসানসোল ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি নেতা রাজেন্দ্র সাউয়ের মৃতদেহ। তাঁর ঘাড়ে গুলি করা হয়েছে। গাড়ির মধ্যে পাওয়া গিয়েছে গুলির খোল। এনিয়ে তোলপাড় করছে বিজেপি। আজ বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল পুলিসকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দোষীদের খুঁজে বের করতে হবে। তা না হলে জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হবে। তবে পুলিসের সন্দেহ একেবারে পরিকল্পনা করেই খুন করা হয়েছে বিজেপি নেতাকে।

আরও পড়ুন-জাতীয় সড়কে ফের শ্যুটআউট! আসানসোলে গাড়িতে মিলল বিজেপি কর্মীর গুলিবিদ্ধ রক্তাক্ত দেহ

পুলিসের সন্দেহ, রাজেন্দ্র সাউয়ের খুনের পেছনে রয়েছে পরিচিতরাই। জাতীয় সড়কে যেখানে সিসিটিভি নেই সেখানেই দাঁড় করানো হয় রাজেন্দ্র সাউয়ের গাড়ি।  সেই গাড়ি থেকে বেশকিছু সূত্র পেয়েছে পুলিস। এমনটাই জানা যাচ্ছে পুলিস সূত্রে। শনিবার দুপুরে একটি সাদা এসইউভি গাড়ি চেপে বাড়ি থেকে বের হন রাজেন্দ্র সাউ। পুলিসের অনুমান জাতীয় সড়ক ধরে গাড়িটি যখন যাচ্ছিল তখন রাজেন্দ্রের পরিচিত কেউ হাত দেখিয়ে গাড়িটিকে থামান। পরিচিতি দেখেই বাঁ দিকের কাচ নামিয়ে দেন রাজেন্দ্র। সঙ্গে সঙ্গে রাজেন্দ্রকে গুলি করা হয়। চালকের আসেনই লুটিয়ে পড়েন রাজেন্দ্র।

এদিকে, রাজেন্দ্র সাউয়ের গাড়ির মধ্যে ছিল ৫ লক্ষ টাকা। সেই টাকার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। পুলিস জানাচ্ছে গুলি চালানার সময়ে গাড়িটির এসি চলছিল, গাড়িটির ইঞ্জিন চালু ছিল। কেউ হাত দেখানের সঙ্গে সঙ্গেই রাস্তার বাঁদিকে চেপে রাজেন্দ্র গাড়ি থামান।  

পরিবারের তরফে দাবি করা হচ্ছে, গতকাল দুপুরের বারবার রাজেন্দ্রর মোবাইলে ফোন আসে। তার পরই এক ব্যক্তিকে দেওয়ার জন্য ৫ লাখ টাকা নিয়ে বেরিয়ে যান রাজেন্দ্র সাউ। খুনের পর সেই টাকা কোথায়? এই প্রশ্নচাই এখন করছেন পরিবারের লোকজন। কিছুদিন ধরেই জমি বিবাদে জড়িয়ে গিয়েছিলেন রাজেন্দ্র। কমপক্ষে ১০-২০ লক্ষ টাকা তিনি পাচ্ছিলেন না। ফলে এই খুনের পেছনে ব্যবসায়ীক কারণ থাকতে পারে বলে প্রাথমিকবাবে মনে করছে পুলিস।

এদিকে, ৪৮ ঘণ্টায় রাজেন্দ্রের খুনিদের না ধরলে জাতীয় সড়ক অবরোধ করার হুমকি দিলেন বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। পুলিসকে তিনি বলেন, ৪৮ ঘণ্টা সময় দিলাম। আজ যদি তৃণমূলের কেউ খুন হতো তাহলে তো ধরে ফেলতেন। রাজ্যে যারা খুন হয়েছে তারা বিজেপির ছেলে। ফলে কে খুন করেছে তা জানা যাবে না। তৃণমূলের লোকেরা খুন হলে আপনার নেত্রীই নবান্ন থেকে বলতেন ১২ ঘণ্টার মধ্যে খুনিকে ধরতে হবে। একচা পরিবার শেষ হয়ে গেল। এর দায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও পুলিসকে নিতে হবে।

গতকাল দুর্গাপুর থেকে আসানসোলের দিকে যাচ্ছিল ওই স্করপিয় গাড়িটি। সেখানেই সামনের সিটে পাওয়া যায় রাজেন্দ্র দেহ হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিত্সকেরা। শক্তিগড়ের কয়লা ব্যবসায়ী রাজু ঝা-র খুনের এক মাস আগে আসানসোলে আইনমন্ত্রী মলয় ঘটকের বাড়ির পেছনের দিকে খুন হন এক হোটেল ব্যবসায়ী। সেখানে পুলিস কমিশনারের অফিস। সেখানেই সন্ধে বেলায় খুন হন ওই ব্যবসায়ী। আগের দুটি খুনের কিনারা হয়নি। এবার ফের একটি খুন।

জামুড়িয়া বিধানসভার বিজেপির আহ্বায়ক সাধন মাঝি বলেন, তিনটে নাগাদ বোগড়া কালী মন্দিরের কাছে একটি মৃতদেহ পাওয়া যায়। দেখা যায় উনি বিজেপি কর্মী। আসানসোল কর্পোরেশনের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে রানী সায়রের বাসিন্দা। নাম রাজেন্দ্র কুমার সাউ। উনি বিজেপির বহু পুরনো কর্মী। তাঁকে সম্ভবত গুলি করে খুন করা হয়েছে। একটি গাড়ির মধ্য়ে মৃতদেহটি ছিল। কীভাবে এই মৃত্যু তা আমরা জানতে চাইছি। এই জায়গাতে গত সপ্তাহে একটি মৃতদেহ উদ্ধার হয়।

(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App) 





Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *