West Bengal Latest News : বাঁকুড়ার গ্রামে দোতলা ঢালাই করলেই নেমে আসে মৃত্যু! গ্রামবাসীদের দাবি ঘিরে রহস্য – baliwara village of bankura does not have a two storey building know the reason


সেই গ্রামে প্রবেশ করলে কোথাও কোনও দোতলা ঢালাই ছাদযুক্ত পাকা বাড়ি দেখা যাবে না! পকেটে পর্যাপ্ত অর্থ থাকলেও দোতলা পাকা বাড়ি করেন না গ্রামের বাসিন্দারা। কারণ নাকি ‘দেবতত্ত্ব’। ৫জির দুনিয়ায় দাঁড়িয়েও এই ধরনের একটি গ্রাম রয়েছে? অবাক করার মতো হলেও এটাই সত্যি।

বাঁকুড়া শহর থেকে মাত্র আট কিলোমিটার গেলেই ছোট্ট একটি জনপদ- নাম বালিয়াড়া। গ্রামে প্রবেশ করলেই দেখা যায় এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বিভিন্ন বাড়ি। বাঁকুড়া জেলার ওন্দা ব্লকের সানতোড় গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত এই বালিয়াড়া গ্রামে রয়েছে এক ইতিহাস।

Drinking Water Crisis : টিউবওয়েল থেকে বেরোচ্ছে কাদা! তীব্র জলের সংকট ওন্দা ব্লকে
বহু বছর ধরে এই গ্রামে এমন রীতি প্রচলন আছে, যা শুনলে সাধারণ মানুষের চোখ কপালে উঠতে পারে। গ্রামের মানুষজনের সাধ্য থাকলেও বহুতল বাড়ি তৈরি করার উপায় নেই। গ্রামবাসীরা মানেন ওই গ্রামে জাগ্রত দেবী মা মনসা তাতে রুষ্ঠ হন। কারণ তাদের বিশ্বাস মা মনসা এই গ্রামেরই এক ঝোপের মধ্যে রয়েছেন। সেক্ষেত্রে গ্রামে দোতলা বাড়ির ছাদ যদি কেউ সিমেন্ট,বালি,পাথর,রড দিয়ে ঢালাই করে-তাদের জীবনে নাকি বিপত্তি নেমে আসবে।

Krishna Kalyani House : বাড়িতেই থিয়েটার-সুইমিং পুল! ED হানার মধ্যেই চর্চায় বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণীর ‘বাংলো’
গ্রামবাসীরা জানান, অতীতে এই ধরনের ঘটনার সাক্ষী থেকেছেন তাঁরা। গ্রামেরই এক মাস্টারমশাই সত্যনারায়ণ পাল গ্রামবাসীদের অন্ধবিশ্বাস ভাঙতে দোতলা বাড়ি নির্মাণের পরিকল্পনা করেছিলেন। পরিকল্পনা মাফিক যখন দোতলা বাড়ির ছাদের সিঁড়ি ঢালাই করা হয়, সেই সময় নাকি এক শিশুর সঙ্গে ধাক্কা লেগে তাঁর পা ভেঙে যায় এবং বহু চিকিৎসার পরেও তার পা সারানো সম্ভব হয়ে ওঠেনি।

পরে তাঁর মৃত্যুও ঘটে। এরপর থেকেই গ্রামবাসীরা কেউ দোতলা বাড়ি তৈরির সাহস দেখান না। কেউ শখ করে দোতলা বাড়ি তুললেও মাথার চালা হিসেবে দেওয়া হয় টিনের ছাউনি। প্রজন্মের পর প্রজন্ম একই চিন্তাধারা নিয়ে বেঁচে আছে এই গ্রাম।

Hooghly News : ঝাড়ফুঁকের ভরসায় প্রাণ গিয়েছে শিশুর, হুগলির গ্রামে সচেতনতার প্রচারে প্রশাসন
এদিকে বাবাকে হারিয়েও এই কুসংস্কারে মানতে রাজি নন গ্রামের সেই শিক্ষকের সত্যনারায়ণ পালের ছেলে সৌরেন পাল। তিনি বলেন, “এই চিন্তাধারা একেবারেই সঠিক নয়। বাবার সঙ্গে যা ঘটেছে তা নিছক দুর্ঘটনামাত্র। এর সঙ্গে প্রচলিত যে কাহিনি রয়েছে তার কোনও যোগাযোগ নেই।”

যদিও ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির সহ সভাপতি সন্তোষ শর্মা এই পুরো বিষয়টিকে সাধারণ মানুষের কুসংস্কার হিসেবেই দেখছেন। তিনি বলেন, “বাড়ি তৈরির সঙ্গে দেবদেবীর কোনও যোগাযোগ থাকতে পারে না। কয়েকটি ঘটনাক্রম দেখে ভুল ধারণা পোষণ উচিত নয়। নতুন প্রজন্মের কথা মাথায় রেখে এই কুসংস্কারের বেড়াজাল ছিঁড়তে হবে।”

Bankura News : ৬ মাস পর পরিবার ফিরে পেল অসমের ইসমাইল! বাঁকুড়া হাসপাতালকে সাবাশি সকলের
এখন দেখার নতুন প্রজন্ম কি বালিয়াড়ার গ্রামের বাসিন্দাদের এই চিন্তাভাবনার পরিবর্তন ঘটাতে পারবে?



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *