ওই রিপোর্টের তথ্য অনুযায়ী, আসল ওএমআর শিট স্ক্যান করা ও সেগুলো উত্তরপত্রের সঙ্গে মিলিয়ে নম্বর দেওয়ার দায়িত্ব ছিল বেসরকারি সংস্থা, নাইসা কমিউনিকেশন প্রাইভেট লিমিটেডের উপর। প্রার্থীদের প্রাপ্ত নম্বর একটি এক্সেল ফর্মে পাঠানো হতো কমিশনের কাছে। সেই এক্সেল শিট হাতে পাওয়ার পরেই শুরু হতো ‘আসল কাজ’। চাকরিপ্রার্থীদের প্রাপ্ত মূল নম্বরের বদলে বেশি নম্বর দেওয়া হয়।
সিবিআই নিয়োগ পরীক্ষার ওএমআর শিট গাজিয়াবাদ থেকে উদ্ধারের পর প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্টে জানিয়েছিল, সব মিলিয়ে ৮,১৩৬ জনের ওএমআর শিটে নম্বর অদলবদল করা হয়েছিল। তবে সোমবার বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে সিবিআইয়ের বিশেষ তদন্তকারী দলের নবনিযুক্ত সিটের প্রধান অশ্বিন শেনভি হাজির হয়ে মৌখিক ভাবে জানান, ২০১৬-র বিজ্ঞাপন মেনে এসএসসির মাধ্যমে রাজ্যের স্কুলে অন্তত ২১ হাজার বেআইনি নিয়োগ হয়েছে। শুধু তাই নয়, শেনভি বলেছিলেন, ‘নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কোথাও ন্যূনতম আইন মানা হয়নি। মূল প্যানেল থেকে ওয়েটিং লিস্ট সর্বত্র দুর্নীতি হয়েছে। ফলে যাঁরা ওয়েটিং লিস্টে রয়েছেন, তাঁরাও যে দুর্নীতি করে সেখানে জায়গা পাননি, তা-ও বলা যাবে না।’
তদন্তের ভিত্তিতে আদালতে এ দিন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা জানিয়েছে, গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি শিক্ষাকর্মী পদে নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে পরীক্ষার্থীদের ওএমআর শিট মূল্যায়নের বরাত দেওয়া হয়েছিল নাইসাকে। নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে নয়ডার এই সংস্থার প্রাক্তন কর্মী পঙ্কজ বনসলের বাড়ি থেকেই সিবিআই তিনটি হার্ডডিস্ক বাজেয়াপ্ত করে। ওই তিনটি হার্ডডিস্কে উত্তরপত্রের (ওএমআর শিট) স্ক্যান কপি ও নম্বর ছিল। সিবিআই আধিকারিকরা তদন্তের সূত্রে জানতে পেরেছেন, পরীক্ষার্থীদের উত্তরপত্র মূল্যায়নের পরে নম্বর-সহ তথ্যভাণ্ডারে রেখে দেওয়া হয়েছিল।
আদালতে সিবিআইয়ের দাবি, তিনটি হার্ডডিস্ক ও কমিশনের তথ্যভাণ্ডার পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, উত্তরপত্র মূল্যায়নে ব্যাপক কারচুপি করা হয়েছে। তদন্তের সময়ে কমিশনের তথ্যভাণ্ডারও বাজেয়াপ্ত করে সিবিআই। প্রসঙ্গত, এসএসসির ডেটা রুম ১৯ মে থেকে প্রায় তিন মাস সিবিআই হেফাজতে ছিল। সিবিআই সূত্রে খবর, এই বিষয়ে আরও তদন্তের প্রয়োজন। নয়ডার ওই সংস্থা থেকে পাওয়া যাবতীয় নথি ইতিমধ্যে স্কুল সার্ভিস কমিশনকেও দিয়েছে সিবিআই।