জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ফের একবার বিতর্কে জড়ালেন নেইমার (Neymar Jr)। এবার ব্রাজিলের (Brazil) সতীর্থদের সঙ্গে ব্যক্তিগত হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ বাজারে ছেড়ে দিলেন তিতে-র (Tite) ‘নাম্বার টেন’। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম মার্কা এমন বিস্ফোরক দাবি করেছে। সেই সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে নেইমার ও সেলেকাওদের একাধিক ফুটবলারের ব্যক্তিগত হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ এখন সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল। ক্রোয়েশিয়ার (Croatia) বিরুদ্ধে রুদ্ধশ্বাস কোয়ার্টার ফাইনালে টাইব্রেকারে হারের পর মাঠে দাঁড়িয়েই কেঁদে দিয়েছিলেন নেইমার। তাঁকে শান্তই করা যাচ্ছিল না। এমনকি চলতি বিশ্বকাপ (FIFA World Cup 2022) থেকে ছিটকে যাওয়ার পরের দিন ইনস্টাগ্রামে এক আবেগি পোস্ট করেছিলেন। কিন্তু এবার যে কান্ড ঘটালেন, সেইজন্য তাঁকে কতবড় বিতর্কের সম্মুখীন হতে হবে, সেটা একমাত্র নেইমারই জানেন।
ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে টাইব্রেকারে ব্রাজিল ৪-২ গোলের ব্যবধানে হারে। ব্রাজিলের হয়ে পেনাল্টি মিস করেন রদ্রিগো এবং মারকুইনহোস। এই দুই অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার ও থিয়াগো সিলভার সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করছিলেন নেইমার। নিজেদের ব্যক্তিগত আলোচনা তুলে ফাঁস করে দেন। সেই মেসেজের একাধিক স্ক্রিনশট ‘মার্কা’ তুলে ধরছে।
মারকুইনহোসের উদ্দেশ্যে নেইমার লিখেছেন, ‘কেমন আছ? আমি তোমার ফ্যান। আমি তোমাকে নিয়ে কী ভাবি, সেটা একটা পেনাল্টি ঠিক করে দিতে পারে না। আমি তোমার সঙ্গে সব সময় আছি, আমি তোমাকে ভালোবাসি।’
জবাবে মারকুইনহোস লিখেছেন, ‘হ্যাঁ ভাই, আমি ধীরে ধীরে উন্নতি করছি। এগুলো থেকে কাটিয়ে ওঠার জন্য নিজেকে সময় দিচ্ছি। তুমি কেমন আছ? আমাকে মেসেজের জন্য ধন্যবাদ, আমাকে নিয়ে চিন্তা করার জন্য ধন্যবাদ। তুমি অনেক বড় ফুটবলার ও বড় মনের মানুষ। আমি চাই সবসময় তোমার ভালো হোক।’
এরপর সেই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে থিয়াগো সিলভাকে ট্যাগ করে নেইমার লিখেছেন, ‘আমাদের সবাইকে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। একটা অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটে গিয়েছে। তোমার হাতে বিশ্বকাপ তুলে দিতে চেয়েছিলাম। আমরা সবাই ট্রফির জেতার অন্যতম দাবিদার। কিন্তু ঈশ্বরের অন্য কোনও উদ্দেশ্য আছে। এবং তিনি সব জানেন।’
সেই মেসেজের জবাবে থিয়াগো সিলভা এবার নেইমারকে লিখেছেন, ‘এই হার মেনে নেওয়া যায় না। ভাবলেই অদ্ভুত কষ্ট হচ্ছে। সত্যি বলতে আমি তো এখনও এই হার ভুলতে পারছি না। আমরা হেরে গিয়েছি, এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না। প্রতিটা সময় যেন এক অদ্ভুত আগুনে পুড়ে যাচ্ছি। খুব কান্না পাচ্ছে।’
রদ্রিগোকে ছোটভাই বলে সম্বোধন করে নেইমার লিখলেন, ‘তুমি আমাদের দলের একজন সেরা ফুটবলার। তোমার কেরিয়ারের সঙ্গে বিশ্বকাপ জয়ী ব্যাপারটা যুক্ত হওয়া উচিত। তোমার আইডল হিসেবে আমি তোমাকে বলতে চাই, ব্রাজিলের একজন প্রবাদপ্রতিম ফুটবলার হিসেবে তোমাকে দেখতে চাই। মনে রেখো পেনাল্টি তারাই মিস করে যারা পেনাল্টি মারার সুযোগ পায়। আমি অনেক পেনাল্টি মিস করেছি এবং ঘুরে দাঁড়িয়েছি। সেই ভুল থেকে আমি শিখেছি। তোমাকেও এই ভুল শিখতে হবে। আরও এগিয়ে যেতে হবে। কীভাবে পেনাল্টি মারতে হয় সেটা আমি পরে শিখিয়ে দেব।’
রদ্রিগো জবাবে লেখেন, ‘ধন্যবাদ আমার আইডল। তোমার বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্নকে মাঠে ফেলে আসার জন্য খুবই দুঃখিত। আশাকরি এই হারের যন্ত্রণা ভুলে তুমি জাতীয় দলের হয়ে খেলা চালিয়ে যাবে।’
কিন্তু কেন নেইমার এতগুলো ব্যক্তিগত মেসেজ সতীর্থদের অনুমতি ছাড়া বাজারে ছেড়ে দিলেন? শোনা যাচ্ছে ব্রাজিল এবারের বিশ্বকাপ জেতার জন্য প্রচন্ড উদগ্রীব ছিল। সেটা প্রমাণ করার জন্যই নাকি নেইমার এমন কাজ করেছেন।