WB Recruitment Scam : নিয়োগ বিতর্ক: ১৬৯৪ জনকে নোটিস – west bengal recruitment scam notice 1694 group d candidate


এই সময় কলকাতা ও বর্ধমান : এসএসসি ২০১৬ সালে যে বিজ্ঞাপন দিয়েছিল, তার ভিত্তিতে বাংলার স্কুলে বেআইনি ভাবে নিযুক্ত ১,৬৯৪ জন গ্রুপ ডি (Group D) কর্মীকে আদালতের নির্দেশে নোটিস পাঠালেন রাজ্যের স্কুলশিক্ষা কমিশনার (School Service Commission)। গত ২৩ ডিসেম্বর বিদ্যালয় পরিদর্শকদের (ডিআই-মাধ্যমিক) মাধ্যমে এই নোটিস গিয়েছে। গোটা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে আটটি কর্মদিবসে জানাতে হবে কমিশনারকে। রাজ্যের কোন জেলার, কোন স্কুলে, ক্যাটেগরি ও লিঙ্গের ভিত্তিতে এই ১,৬৯৪ জন কবে সুপারিশ ও নিয়োগপত্র পেয়েছিলেন, তার বিস্তারিত তথ্য জানাতে হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

SSC Scam : শূন্য পেয়েও সরকারি চাকরি! এবার ১৬৯৮ ‘ভুয়ো’ শিক্ষাকর্মীদের নিয়ে কড়া অবস্থান হাইকোর্টের
আদালত সূত্রে খবর, মোট ৪,৪৮৭ জনের গ্রুপ ডি পদে চাকরি হয়েছিল। তার মধ্যে ৩,৮৮০ জন চাকরি পেয়েছেন প্যানেলের মেয়াদ থাকাকালীন। বাকি ৬০৭ জনের চাকরি হয়েছে মেয়াদ শেষে। নিযুক্তদের মধ্যে ২,৮২৩ জনের চাকরি হার্ড ডিস্ক ও সার্ভারে কারচুপি করে হয়েছে বলে উঠে এসেছে সিবিআই তদন্তে। এর মধ্যে তালিকাভুক্ত ১৬৯৮ জন। এই ১৬৯৮-এর মধ্যে ৪ জন আদালতে নিজেদের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন। ফলে বাকি ১৬৯৪ জনের নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন। আর ওয়েটিং লিস্টে রয়েছে ৯৮৪ জনের নাম। কোনও তালিকাতেই নেই ১৪১ জন। CBI এবং SSC-র আধিকারিক ও মামলাকারীদের আইনজীবীদের মুখোমুখি আলোচনায় দেখা গিয়েছে, নিয়োগপত্র প্রাপকদের অনেকেই সাদা খাতা জমা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন। SSC সম্প্রতি এমন ১০০ জনের ওএমআর শিট ওয়েবসাইটে আপলোড করেছে। অথচ মূল্যায়নের সময়ে SSC তাঁদের ৪৩ নম্বর দিয়েছিল।

হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু এঁদের সকলের নাম ও ঠিকানা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে। বৃহস্পতিবার সেই তালিকা জমা পড়ে আদালতে। সে দিনই তালিকায় নাম থাকা কর্মীদের বসিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিতে চেয়েছিল আদালত। কিন্তু রাজ্যের তরফে আপত্তি জানানো হয়। সরকারি কৌঁসুলির যুক্তি ছিল, এতজনকে হঠাৎ বসিয়ে দিলে স্কুলের দরজার তালা খোলা ও সাফাইয়ের জন্য লোক পাওয়া যাবে না। বহু স্কুলে ঘণ্টা বাজানোরও কেউ থাকবেন না। রাজ্যের এই বক্তব্যের পর বিচারপতি নির্দেশ দেন, ডিআই-দের যেন এই ১,৬৯৪ জনের নাম পাঠানো হয়। কোর্টের নির্দেশ সম্পর্কে এঁদের অবহিত করবেন ডিআই-রা। মামলার শুনানি আগামী ২৪ জানুয়ারি। এই ১,৬৯৪ কর্মীর ভবিষ্যৎ কী হবে, সিদ্ধান্ত নেবে আদালত।

SSC Scam Case : ‘ওই OMR শিট আমার নয়, আমি যোগ্য’, কাতর আর্তি জলপাইগুড়ির ‘ভুয়ো’ ভূগোল শিক্ষকের
এতদিন মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ও SSC, অর্থাৎ নিয়োগ ও সুপারিশের দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই সংস্থার দায়িত্ব স্মরণ করাচ্ছিল আদালত। ২৩ ডিসেম্বরের নোটিসের মাধ্যমে এ বার স্কুলশিক্ষা দপ্তর, কমিশনার এবং ডিআই-রাও যুক্ত হলেন প্রক্রিয়ায়। তবে এক সরকারি আধিকারিক জানান, এই নোটিসের মাধ্যমে চাকরি প্রাপকদের গোটা পরিস্থিতি সম্পর্কে জানানো হচ্ছে। ভবিষ্যতে যাতে তাঁরা আদালতে নিজেদের অবস্থান জানানোর সুযোগ পান, সে ব্যাপারে অবগত করা হচ্ছে এঁদের। ইতিমধ্যে গ্রুপ-ডি পদে নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত মামলায় ইডিকেও যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। ফলে যাঁদের বিরুদ্ধে বেআইনি ভাবে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের আগামী দিনে ইডির জিজ্ঞাসাবাদের মুখেও পড়তে হতে পারে।

এ দিকে, SSC-র ওয়েবসাইটে আপলোড করা ১৬৫ নম্বরের সিরিয়ালে শান্তনু মালিক নামে একজন আছেন। তিনি বর্ধমান-২ ব্লকের বন্ডুল ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের কাড়রা অতুলকৃষ্ণ হাইস্কুলে গ্রুপ ডি (Group D) পদে ২০১৮ থেকে কর্মরত। স্থানীয় সূত্রে খবর, এই শান্তনু হাটগোবিন্দপুরে তৃণমূলের বুথ সভাপতি। তিনি বর্ধমান উত্তরের তৃণমূল বিধায়ক নিশীথ মালিকের ভাই। বিধায়কের হাটকান্ডার বাড়িতে তাঁরা একসঙ্গে থাকেন। নিশীথের অবশ্য দাবি, “আমার কোনও ভাই নেই। আমার এক দাদা আছেন, নাম অসিত মালিক। তিনি রেলে কাজ করেন।” শান্তনুকে চেনেন? নিশীথ বলেন, “উনি আমার কাকার ছেলে। ওঁরা আলাদা থাকেন। আমার সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। চাকরি পেয়েছেন নিজের যোগ্যতায়। আমার কোনও প্রভাব ছিল না।”

SSC Scam : OMR-এ চাপা পড়ে লড়াইয়ের ইতিহাস
শান্তনুও বলেন, “আমি পরীক্ষা দিয়ে পাশ করেছি। নিয়ম মেনে ২০১৮ সালে চাকরি পাই। পুলিশ ভেরিফিকেশন হয়েছে, ডিআই অফিস থেকে আমাকে নিয়োগপত্র দিয়েছে। এখন এ সব নিয়ে আমার আর কী বলার থাকে? যা হবে, মেনে নেব!”

১৬৯৪ জনের কতজন কোথাকার জেলা প্রার্থী

পূর্ব মেদিনীপুর ৩৬০, পশ্চিম মেদিনীপুর ২৯৮, অবিভক্ত বর্ধমান ১২৩, কোচবিহার ১০৯, উত্তর ২৪ পরগনা ১০৬, বাঁকুড়া ১০০, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ৮৮, মালদহ ৭৮, মুর্শিদাবাদ ৬৩, হুগলি ৬৩, হাওড়া ৫৬, উত্তর দিনাজপুর ৪৯, বীরভূম ৪৪, দক্ষিণ দিনাজপুর ৪২, নদিয়া ৩৬, পুরুলিয়া ২৯, কলকাতা ২০, জলপাইগুড়ি ১৪



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *