Rabindranath Bhattacharya Exclusive: ‘…কেউ সেভাবে যোগাযোগ রাখে না!’ পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ফের ‘অভিমানী’ সিঙ্গুরের ‘মাস্টারমশাই’ – rabindranath bhattacharya singur ex mla exclusive interview ahead of panchayat election


সুজয় মুখোপাধ্যায়, তুহিনা মণ্ডল | এই সময় ডিজিটাল

গুরু-শিষ্যের সম্মুখ সমর, একুশের নির্বাচনে সিঙ্গুরে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ফলাফলের দিকে তাকিয়েছিল গোটা রাজ্য। নির্বাচনে টিকিট না পেয়ে ‘জার্সি বদল’-এর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সিঙ্গুরের জমি আন্দোলনের অন্যতম মুখ ‘মাস্টারমশাই’ রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। BJP-র প্রার্থী হিসেবে তাঁর সবথেকে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল ‘শিষ্য’ বেচারাম মান্না। কিন্তু, শেষমেশ রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যকে ২৫ হাজার ৯৩৩ ভোটে হারিয়ে সিঙ্গুরে জয়ী হন বেচারাম। এরপর বঙ্গ রাজনীতিতে বহু জল গড়িয়েছে। একাধিক উপনির্বাচনে একচেটিয়া দাপট দেখিয়েছে ঘাসফুল শিবির। দোরগোড়ায় কড়া নাড়ছে পঞ্চায়েত নির্বাচন। আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে সিঙ্গুর যে একটি বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াবে, মনে করছে রাজ্য রাজনৈতিক মহল। সিঙ্গুরে BJP-র ‘কান্ডারি’ কি মাস্টারমশাই? নাকি পুরাতন দলের প্রতি অভিমান কমেছে তাঁর? এবার এই সময় ডিজিটালকে যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর দিলেন রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য।

Rabindranath Bhattacharya : সিঙ্গুর নিয়ে মমতার সঙ্গে সহমত নন রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, মুখ খুললেন মাস্টারমশাই
‘রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ’ বেচারাম মান্নাকে সিঙ্গুর এবং তাঁর স্ত্রী করবী মান্নাকে হরিপালে প্রার্থীপদ করাতেই যে তৃণমূলের প্রতি মনক্ষুন্ন হয়েছিল তাঁর, সেই বিষয়ে রাখঢাক করেননি প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ। তৃণমূলের এই সিদ্ধান্ত ‘বেদনাদায়ক’ ছিল বলে মন্তব্য মাস্টারমশাইয়ের। তবে BJP-তে যোগ দিলেও স্থানীয় গেরুয়া শিবিরের নেতারা তাঁকে খোলা মনে গ্রহণ করেননি, দাবি প্রবীণ এই রাজনীতিবিদের। রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য বলেন, “স্থানীয় BJP কর্মীরা প্রথমের দিকে একেবারে সহায়তা করেনি। যখন তারা দেখল যে দল আমাকেই প্রার্থী করবে সেই সময় তারা যতটুকু করার নয় ততটুকুই সাহায্য করেছিল। আন্তরিকভাবে কারও থেকে কোনও সাহায্য পাইনি। ফলে আমার দলের স্থানীয় কর্মীদের প্রতি একটা ক্ষোভ জন্মেছিল। তৃণমূল স্বেচ্ছায় ত্যাগ করেছিল। তাই ফিরে যাওয়ার ইচ্ছা হয়নি।”

Abhishek Banerjee On Nisith Pramanik : ‘বাড়ি ঘেরাও করতে হবে…’, নাম না করে নিশীথকে আক্রমণ অভিষেকের
BJP-তে কি আদৌ রয়েছেন মাস্টারমশাই?
একুশের নির্বাচনে বেচারাম মান্নার কাছে পরাজয়ের পর সিঙ্গুরের প্রাক্তন বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যকে সক্রিয়ভাবে রাজনীতির ময়দানে দেখা যায়নি। তবে কি BJP-র থেকেও নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছেন তিনি? বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদ বলেন, “BJP-র কেউ যোগাযোগ রাখে না বললে ভুল হবে। আবার রাখে বললেও ঠিক হবে না। কারণ যেভাবে যোগাযোগ রাখলে রাজনৈতিক সক্রিয়তা দেখানো যায় সেভাবে কেউ যোগাযোগ রাখেনি।” তাঁর সংযোজন, “তৃণমূলের দুর্নীতিগ্রস্তদের বাড়বাড়ন্তের বিষয়টি বুঝেছিলাম। তাই সেই দলকে আমি মনে প্রাণ গ্রহণ করতে পারিনি। BJP-র সঙ্গে যোগাযোগ যতটা প্রয়োজন ততটা হয়নি। ফলে এই দুই দল থেকেই আমি নিজেকে একপ্রকার বিচ্ছিন্ন করে নিয়েছি।”

Abhishek Banerjee : ‘উত্তরবঙ্গ নাম নিয়ে আমার আপত্তি রয়েছে…’, অভিন্ন বাংলার পক্ষে ফের সওয়াল অভিষেকের
তৃণমূলের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ…

২০০৬ সাল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই সময় সিঙ্গুর আন্দোলন করছেন। তাঁর কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে অনিচ্ছুক কৃষকদের জমি ফিরিয়ে দিতে লড়াই করতে দেখা গিয়েছিল রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যকে। পরে তৃণমূলের টিকিটে লড়ে বিধায়কও হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু, সেই তৃণমূলের বিরুদ্ধেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন সিঙ্গুরের মাস্টারমশাই। তিনি বলেন, “বর্তমান তৃণমূল সরকার এবং তার কর্মীরা সম্পূর্ণ অযোগ্য, আগাগোড়া দুর্নীতিগ্রস্ত। নিয়োগ কেলেঙ্কারির কথা প্রতিদিন সামনে আসছে।”

সিঙ্গুরের প্রত্যাশাপূরণ কি হয়েছে? মাস্টারমশাইয়ের জবাব…
সিঙ্গুরের জমি আন্দোলনে প্রথম সারির মুখ ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। রাজ্যে ৩৪ বছরের বাম শাসনের অবসানের নেপথ্যে বড় ফ্যাক্টর ছিল সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম, মত রাজনৈতিক মহলের। পরপর দু’বার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বঙ্গ মসনদে বসিয়েছে বাংলার মানুষ। সিঙ্গুরের জমি কৃষিযোগ্য করে মানুষের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Mousumi Koyal Kamduni : ‘তৃণমূল থেকে ভোটে দাঁড়ানোর প্রস্তাব এসেছে…’, রাজনীতিতে কামদুনির প্রতিবাদী মুখ মৌসুমী?
সিঙ্গুরবাসীর প্রত্যাশা কি পূরণ হল?
রবীন্দ্রনাথবাবুর মতামত কিন্তু আলাদা। তিনি বলেন, “সিঙ্গুরের জমি যাতে চাষযোগ্য হয়ে মানুষের কাছে ফেরত যায় সেই লক্ষ্যে আমরা আন্দোলন করেছিলাম। তা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।” পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে কি সক্রিয়ভাবে ফের রাজনীতির ময়দানে দেখা যাবে সিঙ্গুরের মাস্টারমশাইকে? এই প্রশ্নের জবাবে প্রবীণ এই রাজনীতিবিদের জবাব, “আমার শরীরের যা অবস্থা সক্রিয়ভাবে অংশ নেওয়ার সামর্থ্য আমার নেই। তবে মানসিক দিক দিয়ে আমি নিঃস্ব হয়ে যাইনি।” অর্থাৎ কোনও নির্দিষ্ট দলের হয়ে প্রচারের জল্পনা জিঁইয়ে রাখলেন তিনি।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *