জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: এযেন একেবারে কমনওয়েলথ গেমস ফাইনালের রিমেক। সেই ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ১৬১ রান চেজ করতে গিয়ে একটা সময়, ভারতের রান ৩ উইকেটে ১১৮। তবে শুধু হারিকিরি করে ১৫২ রানে অল আউট হওয়ার জন্য, ৯ রানে হেরেছিল হরমনপ্রীত কৌরের দল। এবারও কেপটাউনের নিউল্যান্ডস স্টেডিয়ামের বাইশ গজে সেই ঘটনা আবার ফিরে এল। এবারও প্রথমে ব্যাট করে ৪ উইকেটে ১৭২ রান তুলে দেয় পাঁচবারের বিশ্বকাপ জয়ী দল। সেই বড় রান তাড়া করতে গিয়ে শুরুতে ধাক্কা খেলেও, হরমনপ্রীত কৌর ও জেমাইমা রড্রিগেজ দলকে লড়াইতে ফিরিয়ে আনেন। কিন্তু দু’জন সেট হয়েও ফিরলেন। পারলেন না রিচা ঘোষও। মোক্ষম সময় খারাপ শট মেরে বঙ্গতনয়া বুঝিয়ে দিলেন যে, তিনি এখনও পরিণত নন। ফলে শেষ দিকে দীপ্তি শর্মাও ব্যর্থ হলেন। আর তাই ভারতকে ৫ রানে হারিয়ে চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে চলে গেল অস্ট্রেলিয়া।
মাঠে বল পড়ার আগেই অজি অধিনায়ক মেগ ল্যানিং জানিয়েছিলেন, তাঁরা ফুরফুরে মেজাজে রয়েছেন। ক্রিকেট উপভোগ করতে চান। মাঠে দেখা গেল, ভুল বলেননি মেগ। অজি ব্য়াটাররা শুরু থেকে দাপট দেখাতে শুরু করেন। ৩২ রানে থাকা অবস্থায় রাধা যাদবের বলে বেথ মুনির ক্যাচ ফেলে দিলেন শেফালি বর্মা। আর সেটাই কাল হল। শেষ পর্যন্ত শিখা পাণ্ডের বলে ৩৭ বলে ৫৪ রান করে ফেরেন মুনি। মারলেন ৭টি চার ও ১টি ছক্কা। আর এক ওপেনার অ্যালিসা হিলি করেন ২৬ বলে ২৫ রান।
১৮ বলে ৩১ রান করে দীপ্তি শর্মার বলে ফেরেন অ্যাশলে গার্ডনার। ৭ রান করে শিখা পাণ্ডের বলে ফেরেন গ্রেস হ্যারিস। ঝোড়ো ব্যাটিং করলেন মেগ ল্যানিং। ৩৪ বলে ৪৯ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। প্রথমে ব্যাট করে অস্ট্রেলিয়া ৪ উইকেটে ১৭২ রান।
অজি বোলারদের বিরুদ্ধে কঠিন পরীক্ষা ভারতীয় ব্যাটিংয়ের। তার ওপর দ্বিতীয় ওভারেই ধাক্কা খায় ভারত। মেগান স্কাটের বলে মাত্র ৯ রান করে এলবিডব্লিউ হয়ে গেলেন শেফালি বর্মা। ১.৩ ওভারে ভারতের স্কোর দাঁড়ায় ১১/১। এখানেই শেষ নয়। পরের ওভারেই স্মৃতি মান্ধানাকে ফেরান অ্যাশলে গার্ডনার। আম্পায়ার যদিও স্মৃতিকে নট আউট দিয়েছিলেন। কিন্তু ডিআরএস নেয় অস্ট্রেলিয়া। সেখানে দেখা যায়, ‘আম্পায়ারস কল’-এর মতে স্মৃতি। ফের একবার বড় ম্যাচে ব্যর্থ হলেন তিনি। কিছুক্ষণ পর দলের চাপ বাড়িয়ে রান আউট হন ইয়াস্তিকা ভাটিয়া। ফলে ২৮ রানে ৩ উইকেত হারিয়ে একেবারে ব্যাকফুটে চলে যায় ভারত।
সেখান থেকে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন হরমনপ্রীত কৌর ও জেমাইমা রড্রিগেজ। পালটা মার দিয়ে চতুর্থ উইকেটে চোখের নিমেষে ৬৯ রান যোগ করেন দুই তারকা। যে সময় এই জুটি ভয়ংকর হয়ে উঠতে শুরু করেছে, ঠিক সেই সময় অহেতুক স্কুপ মারতে গিয়ে ডার্সি ব্রাউনের বলে উইকেটকিপার অ্যালিসা হিলির হাতে ক্যাচ তুলে আউট হন জেমাইমা। ফিরে যাওয়ার আগে ২৪ বলে ৪৩ রান করেন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জয়ের নায়িকা।
পরে রিচাকে সঙ্গে নিয়ে লড়তে থাকেন হরমন। জ্বর ভুলে করলেন অর্ধ শতরান। কিন্তু শেষ পর্যন্ত টিকে থেকে ম্যাচ জেতাতে পারলেন না। দুর্ভাগ্যজনকভাবে রান আউট হলেন অধিনায়ক। ফলে ৩৪ বলে ৫২ রান করলেও রাগে গজগজ করতে করতে মাঠ ছাড়লেন তিনি। রিচাও পারলেন না। মোক্ষম সময় খারাপ শট মেরে বঙ্গতনয়া বুঝিয়ে দিলেন যে, তিনি এখনও পরিণত নন।