মাসখানেক আগে এই হাতিশালাই হয়ে উঠেছিল রণক্ষেত্র। জ্বলেছিল আগুন। সেই হাতিশালা হয়েই রবিবার ভাঙড়ে প্রবেশ করলেন বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। ফুলের মালা, ফুল বৃষ্টিতে স্বাগত জানানো হয় বিধায়ককে।
এদিন সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে পঞ্চায়েত ভোট প্রসঙ্গে নওশাদ জানান, ”পঞ্চায়েত ভোটে শাসক শূন্য হয়ে যাবে ভাঙড়। যে দুর্নীতি অনাচারের শিকার হয়েছে ভাঙড়ের মানুষ এবার তাঁরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় তাঁর জবাব দেবে।”
এখানেই শেষ নয়, নওশাদ বলেন, ”আমাকে ভয় পায় বলে স্পেশাল অবজারভার রাখা হয়েছে। স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এই অবজারভার হলে আরও ভালো লাগত। তৃণমূলের গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব সিন্ডিকেট, জলাজমি ভরাট ও সরকারি টাকা মারার জন্য গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব হয়। আমরা এইসব দুর্নীতি বন্ধ করব।”
সপ্তাহখানেক আগে ৪২ দিন জেলখাটার পর সদ্যই জামিনে মুক্তি পয়েছেন নওশাদ সিদ্দিকি। জামিনে মুক্তির পর এদিন প্রথম ভাঙড়ে পা রাখলেন আইএসএফ বিধায়ক। সমর্থকেরা উচ্ছ্বাস, ফুলের মামলায় বরণ করে নেন তাঁকে।
নওশাদ এদিন দাবি করে,”আমাকে বদনাম করার জন্য চক্রান্ত করে জেলে রাখা হয়েছিল। কর্মী সহ ভাঙড়ের মানুষের এই উচ্ছ্বাস আমাকে শক্তি জোগাচ্ছে। বিগত দেড় মাস ধরে মানুষ কে যে পরিষেবা দিতে পারিনি আজ অফিসে গিয়ে সেই পরিষেবা দেওয়ার কাজ শুরু করব। মানুষের অভাব অভিযোগের কথা শুনে সাধ্যমতো সমাধানের চেষ্টা করব।”
ভাঙড়ে অশান্তি এড়াতে নওশাদ সিদ্দিকির গাড়ির সঙ্গে ছিল বিশাল পুলিশ বাহিনীও। এছাড়া বিধায়কের কালো গাড়িটাকে ঘিরে ছিল দলীয় কর্মী সমর্থকদের বাইক বাহিনী। ঘটনাবহুল হাতিশালার উপর দিয়েই সদর্পে এসকর্ট করে নিয়ে যাওয়া হয়। ভাঙড়ে বিধায়কের প্রবেশে সেখান এদিন উৎসবের মেজাজ।
২১ জানুয়ারি আইএসএফ-এর প্রতিষ্ঠা দিবসে পতাকা লাগানোকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে হাতিশালা। তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে আইএসএফ নেতাকর্মীরা। যার জেরে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে এলাকা। ঘটনায় বোমাবজির অভিযোগ ওঠে। তৃণমূলের একাধিক পার্টি অফিসে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ ওঠে। দাবি করা হয়, আগুনও লাগিয়ে দেওয়া হয় এলাকার জোডা়ফুলের অফিসে। সেই হিংসার আগুন ছড়ায় কলকাতার ধর্মতলায় আইএসএফ-এর সমাবেশেও।
এই ঘটনায় অশান্তি ছড়ানোর অভিযোগে ৪২ দিন জেলবন্দি ছিলেন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। সদ্যই জামিন পেয়ে ঘরে ফিরেছেন তিনি।
