জি ২৪ ঘন্টা ডিজিটাল ব্যুরো: আইএসএল-এর মেগা ফাইনালে (ISL Final 2023) বেঙ্গালুরু এফসি-কে (Bengaluru FC) মেগা ফাইনালে হারাতে বদ্ধপরিকর এটিকে মোহনবাগান (ATK Mohun Bagan)। বৃহস্পতিবার সকালে প্রস্তুতি সেরেই গোয়ার বিমানে উঠেছিলেন জুয়ান ফেরান্দো (Juan Ferando) ও তাঁর দলের ছেলেরা। শুক্রবারও সন্ধ্যায় অনুশীলনে নামলেন তাঁরা। যত রকম ভাবে নিজেদের তৈরি করা যায়, করে নিচ্ছেন এবং যত প্রস্তুতির বহর বাড়ছে, ততই আত্মবিশ্বাসও দলটার মধ্যে। 

এদিন সাংবাদিক বৈঠকে কোচ ফেরান্দো ও অধিনায়ক প্রীতম কোটালের (Pritam Kotal) কথা শুনে অন্তত মনে হল না, বেঙ্গালুরু এফসি-র মতো টানা এগারো ম্যাচ জিতে আসা দলের বিরুদ্ধে খেতাবী লড়াইয়ের আগে তাঁরা বিন্দুমাত্র চাপে রয়েছে। বরং বেশ আত্মবিশ্বাসী তাঁরা। শনিবারের ফল নিয়ে কথা বলার সময় মাঝে মাঝে চোয়ালও শক্ত হয়ে যাচ্ছিল বঙ্গসন্তানের। 

লিগ পর্বে একে অপরের বিরুদ্ধে দুই দলই একটি করে ম্যাচ জিতেছে। এই মরসুমেই বেঙ্গালুরু এফসি প্রথম জয় পায় এটিকে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে। তবে সেই দুই ম্যাচে ফলের প্রভাব ফাইনালে কোনও ভাবেই পড়বে বলে মনে করেন না স্প্যানিশ কোচ। সেমিফাইনালের আগে যেমন বলেছিলেন, এদিনও সেই ৯০ মিনিটে ম্যাচ শেষ করার ইচ্ছা প্রকাশ করে বললেন, “বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে আগের ম্যাচগুলোতে যাই হোক, এই ম্যাচে তার প্রভাব পড়বে না। আমাদের লক্ষ্য শুধুমাত্র জয়। এতদিন যেভাবে খেলে এসেছি, সেভাবেই খেলব। আমার বিশ্বাস, দলের ছেলেরা লিগের সেরা মুহূর্তটা অর্জন করবে এই ম্যাচে। সেজন্য সবাই তৈরি। অতীতের কথা এখন আর কারও মনে নেই। অতিরিক্ত সময়ে খেলা গড়ানোটা আমার পছন্দের ব্যাপার নয়। তাই ৯০ মিনিটেই ম্যাচ শেষ করতে চাই। যদিও সেটা আমাদের হাতে নয়। প্রতিপক্ষ কেমন খেলবে তার ওপরও নির্ভর করে।”

আরও পড়ুন: ISL Final 2023, ATKMB vs BFC: মেগা ফাইনালের লড়াইয়ে মুখোমুখি সবুজ-মেরুন ও নীল ব্রিগেড, হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আগে কোন দলের পাল্লা ভারী?

আরও পড়ুন: Sunil Chhetri, ISL Final 2023: কেরিয়ার শুরু করা সবুজ-মেরুনকে মেগা ফাইনালে ধাক্কা দিতে মরিয়া ‘ক্যাপ্টেন ফ্যান্টাসটিক’ সুনীল

নিজের দলের ছেলেদের আত্মত্যাগ ও অধ্যাবসায়ের প্রশংসা করে ফেরান্দো জানান, এই খেতাবটা তাঁদের প্রাপ্য, “সারা মরসুম ধরে দলের ছেলেরা প্রচুর পরিশ্রম করেছে। পূজো, দিওয়ালি, বড়দিন, কোনও কিছুতেই পরিবারের সঙ্গে আনন্দ করতে পারেনি ওরা। এই আনন্দটা ওদের প্রাপ্য। অনেক কঠিন সময় পেরিয়ে এসেছে ওরা। তবে আমরা শিখেছি অনেক কিছু। কী ভাবে সমস্যার মোকাবিলা করতে হয়। কী ভাবে দল বেঁধে থাকতে হয়। এখন সব কিছুই আমাদের হাতে। এখন যদি আমরা ট্রফি জিতি, তা হলে এর চেয়ে ভাল আর কিছুই হতে পারে না।”   

দল ফাইনালে উঠলে ও তাতে সাফল্য পেলে কোচেদের খুশি হওয়াটাই স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু ফেরান্দো এই ধরনের আবেগকে প্রশ্রয় দেন না। তাঁর মতে, “দল ফাইনালে উঠেছে বলে আমি খুশি কি না, সেটা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। আমার কাছে দলের ফাইনালে ওঠা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমরা ট্রফি জিততে চাই। এখন দলের ছেলেদের ট্রফি জিততে সাহায্য করতে হবে, সমর্থকদের খুশি করতে হবে। আমার কাছে অতীতের কোনও গুরুত্ব নেই। শনিবার সম্পুর্ণ একটা নতুন দিন। নতুন একটা চ্যালেঞ্জের জন্য আমাদের তৈরি হতে হবে। এর চেয়ে বেশি কিছু ভাবছিই না।” 

এই সাফল্য তাঁর কোচিং জীবনে কতটা প্রভাব ফেলবে, সেটা নিয়েও ভাবতে নারাজ ফেরান্দো। বলেন, “আমি এখানে নিজের কেরিয়ারের কথা ভেবে কাজ করতে আসিনি। ফাইনালে জিতলে আমার কোচিং জীবনে তার কতটা প্রভাব পড়বে সে সব ভাবিনি কখনও। এখানে কাজটা উপভোগ করছি। এখানকার কর্তাদের মানসিকতার সঙ্গে আমার মানসিকতা কিছুটা মেলে। আমার কাজের ওপর সবাই আস্থা রাখে। সে জন্যই লিগ জিততে চাই। কেরিয়ার নিয়ে কখনও ভাবিইনি। এখনও ভাবছি না।” 

চলতি মরশুমে অনেক কঠিন সময় পেরিয়ে খেতাবের দোরগোড়ায় পৌঁছনো প্রসঙ্গে এটিকে মোহনবাগান কোচ বলেন, “অনেক কঠিন সময় পেরিয়ে এসেছি আমরা। তার মধ্যেও দলের সবাই আত্মবিশ্বাস বজায় রেখেছে। ওই সময়ে যে খেলাটা দরকার ছিল, সেটাই খেলেছে। যদিও চোটের জন্য একাধিক ম্যাচে আমরা খুব হতাশাজনক পারফরম্যান্স দেখিয়েছিলাম। কিন্তু চোট-আঘাত, কার্ড এগুলো তো ফুটবলেরই অঙ্গ। এসব সত্ত্বেও কী ভাবে পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলতে হবে, তা ছেলেদের বলে দিয়েছি বারবার। ওরা তা মেনে যে দল হিসেবে এই জায়গায় পৌঁছেছে, এটাই বড় ব্যাপার।” 

আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। তারপরেই দেখা যাবে, সবুজ-মেরুন নাকি নীল ব্রিগেডের হাতে ট্রফি উঠছে। 

(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App) 





Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *