কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, সমস্যার সমাধানে বছরভর শহর জুড়ে আড়াই থেকে তিন হাজার কুকুরের নির্বীজকরণ করা হয়। আবার কুকুরের নির্বীজকরণ নিয়ে পশুপ্রমীদের একাংশের আপত্তি রয়েছে। তবে করোনার কারণে বছর দুয়েক পথ কুকুরদের নির্বীজকরণের কাজ ঠিক মতো হয়নি বলে পুরসভা সূত্রেরই খবর।
এখন কলকাতায় পথ কুকুরের সংখ্যা ১ লক্ষ ১ হাজার ২০২। করোনার দাপট কমার পর গত বছর শহর জুড়ে পথ কুকুরদের টিকাকরণ এবং নির্বীজকরণে উদ্যোগী হয়েছিল কলকাতা পুরসভা। পরিসংখ্যান বলছে, গত ৬ মাসে ৩০ হাজার পথ কুকুরের টিকাকরণ করা হয়েছে এবং নির্বীজকরণ হয়েছে ৪ হাজার কুকুরের।
খুব শিগ্গরিই দ্বিতীয় দফার টিকাকরণ এবং নির্বীজকরণের কাজ শুরু হবে। এই কাজে পুরসভাকে সাহায্য করেছে রাজ্যের প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন দপ্তর। অতীতে বহু বার দেখা গিয়েছে, নির্বীজকরণের জন্য পুরসভার তরফে গাড়ি পাঠিয়েও কয়েকটি তল্লাট থেকে খালি হাতে ফিরতে হয়েছে পুরকর্মীদের। কারণ, যাঁরা পথ কুকুরদের খাওয়ান, তাঁরা নিজেদের বাড়িতে ওই সময়ে কুকুরদের রেখে দিয়েছেন।
এই অবস্থায় পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের কর্তাদের একাংশের দাবি, কলকাতায় কুকুরের সংখ্যা কেন বাড়তে দেওয়া যাবে না, সেটা নাগরিকদের বোঝাতে কাউন্সিলারদের আরও বেশি করে সাহায্য প্রয়োজন। আবার কুকুর কামড়ালে জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হন অনেকে।
কলকাতায় আগে গড়ে প্রত্যেক বছর ৫০ জন জলাতঙ্ক রোগের শিকার হতেন। তবে এখন তা নেমে এসেছে ৩ জনে। ফলে, কুকুরের টিকাকরণ কর্মসূচি খুব জরুরি বলে প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন দপ্তরের কর্তারা জানাচ্ছেন।
পুরসভার পদক্ষেপ প্রসঙ্গে একটি পশুপ্রেমী সংগঠনের সদস্য অনুব্রতা রায়চৌধুরী বলছেন, “সবাই যে কুকুর ভালোবাসেন, এমনটা কিন্তু নয়। তা হলে এত পথ কুকুর মারা যেত না। তাই, পথ কুকুরদের নির্বীজকরণ জরুরি। কারণ, কুকুরের সংখ্যা কমলে তাদের খাওয়ার সমস্যাও মিটবে। তারা ভালো ভাবে বাঁচতে পারবে।”
সারমেয় সমাচার
● কলকাতায় পথ কুকুরের সংখ্যা ১ লক্ষ ১ হাজার ২০২।
● পথ কুকুর বেশি যে সব এলাকায় পাইকপাড়া, শোভাবাজার, হাতিবাগান, বাগবাজার, বেহালা, গড়িয়া, কালীঘাট, যাদবপুর, সার্ভে পার্ক, কসবা।
● বছরে নির্বীজকরণের টার্গেট ৪২ হাজার কুকুরকে।
● টিকা দেওয়া হবে ৮৪ হাজার কুকুরকে।
● নির্বীজকরণ ও টিকাকরণে বরাদ্দ ১ কোটি ২ লক্ষ টাকা।