বর্ধমানে জেলা জজের এজলাসে আজ মঙ্গলবার এই ঘটনাটি ঘটে। সেই সময় অবশ্য জেলা জজ অনুপস্থিত ছিলেন এজলাসে। পাবলিক প্রসিকিউটরের অপসারণ চেয়ে শুক্রবার থেকে আন্দোলন চালাচ্ছিলেন এপিপিরা।
পাবলিক প্রসিকিউটরের বিরুদ্ধে দুর্নীতি সহ একাধিক অভিযোগ তোলা হয়েছিল। পাবলিক প্রসিকিউটরের অপসারন ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে আদালত চত্বরে পোস্টারও পড়ে পিপির বিরুদ্ধে। আজ মঙ্গলবার ফাইল হাতে এজলাসে পাবলিক প্রসিকিউটর হাজির হতেই শুরু হয় বাদানুবাদ।
তার জেরে পাবলিক প্রসিকিউটরের সঙ্গে এপিপিদের ধ্বস্তাধ্বস্তি হয়। এপিপিদের অভিযোগ, পাবলিক প্রসিকিউটরকে কাজ না করার অনুরোধ জানানো হয়েছিল। তখনই তিনি ঘুষি মারেন।
এই বিষয়ে এক এপিপি সাংবাদিকদের বলেন, “পাবলিক প্রসিকিউটর শ্যামল কুমার গঙ্গোপাধ্যায় চূড়ান্ত দুর্নীতিগ্রস্ত। তিনি যেভাবে পাবলিক প্রসিকিউটর পদে বসেছেন তা নিয়ম বিরুদ্ধ। মামলার বিবাদি পক্ষের কাছ থেকে টাকা নিয়ে মামলা লঘু তথা মামলার মোড় ঘুরিয়ে দিচ্ছেন। সাধারণ মানুষের কাছে টাকা নিচ্ছেন, বড়বড় কেসে জামিন হচ্ছে। এমনকি পাবলিক প্রসিকিউটর অফিসে বসেই টাকা পয়সাও নিচ্ছেন।”
তিনি আরও বলেন, “এই নিয়ে গত শুক্রবার থেকেই আমাদের কর্মবিরতি চলছে। আজ উনি এজলাসে আসতে আমরা ওনাকে সবিনয়ে কাজ না করার অনুরোধ জানাই। কিন্তু তিনি আমাদের কথা না শুনে উলটে আমাদের ওপর চড়াও হন। বাদানুবাদ করেন, এবং তা করতে করতে ঘুষি পাকিয়ে তেড়ে আসেন।”
যদিও এই বিষয়ে পালটা অভিযোগ জানিয়েছেন পাবলিক প্রসিকিউটর শ্যামল কুমার গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, “আমি এজলাসে ঢুকতেই এপিপিরা আমাকে গালমন্দ করেন। সেই সঙ্গে আমার হাতে থাকা ফাইল কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়। তখন আমি ফাইল না ছাড়তে চাওয়ায় আমাকে মারধরও করা হয়। ওরা আমাকে পাবলিক প্রসিকিউটর রূপে সহ্য করতে পারছে না। এপিপিদের পছন্দের আইনজীবীকে ওরা পাবলিক প্রসিকিউটরকে হিসেবে চাইছে। কারণ আমি তাঁদের দু’নম্বরী করার জায়গাগুলি বন্ধ করে দিয়েছি।”
এই ঘটনার যে এখানেই শেষ নয়, তা পাবলিক প্রসিকিউটরের কথাতেই বোঝা গিয়েছে। তিনি এই ঘটনার অভিযোগ ওপরমহলে করবেন বলে জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে জানিয়েছেন কোনওভাবেই পাবলিক প্রসিকিউটরের পদ ছাড়বেন না। যদিও এপিপিরা তাঁকে পদ থেকে সরাতে অনড় রয়েছেন। এখন এই জল কতদূর গড়ায়, তা দেখার অপেক্ষাতেই জেলার আইনজীবী মহল।