রামনবমী উপলক্ষে হাওড়ায় এমনই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ছবি দেখা গিয়েছে আজ। বৃহস্পতিবার দুপুরে হাওড়া স্টেশনের কাছ থেকে হাওড়া খটিক সমাজের উদ্যোগে রামভক্তদের সশস্ত্র মিছিল বের হয়। রামভক্তদের হাতে তরোয়াল, গদা এবং অন্যান্য অস্ত্র ছিল। মিছিল ডবসন রোড হয়ে পিলখানার জি টি রোডে আসে।
সেই সময় দেখা যায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষজন রামভক্তদের জন্য পানীয় জল এবং কোল্ড্রিংস নিয়ে অপেক্ষা করছেন। গরমে অনেকটা রাস্তা হাঁটার পর রাম ভক্তরা তৃষ্ণার্ত ছিলেন। তারাও মুসলিম ভাইদের হাত থেকে পানীয় জল এবং কোল্ডড্রিংস খেতে থাকেন।
পিলখানা ইউনাইটেড ক্লাবের সেক্রেটারি শেখ শাহজাহান বলেন, “আমরা প্রতি বছর তৃষ্ণার্ত রামভক্তদের জল পান করাই। যদিও আমরা নিজেরা রমজান মাসে সকাল থেকে জল পান করিনি। রমজান মাসে এটাই বলা আছে তৃষ্ণার্তদের জল দাও ও ক্ষুধার্তদের খাবার দাও। তাই আমরা এই কাজ করছি। এতে আমাদের খুব ভালো লাগছে”।
রামনবমীর মিছিলের অন্যতম উদ্যোক্তা অমরনাথ শোনকার বলেন, “যেভাবে মুসলিম ভাইরা আমাদের জল খাওয়াচ্ছেন তাতে আমাদের খুব ভালো লাগছে। আমাদের মধ্যে ধর্মীয় কোনও ভেদাভেদ নেই। ধর্ম যার যার কাছে, কিন্তু আমরা প্রত্যেকেই ভারতীয়, সেই সঙ্গে মানুষ”।
মিছিল থেকে যাতে কোনোরকম অশান্তি না ছড়ায় তার জন্য শুরু থেকেই ছিল কড়া পুলিশি নজরদারি। বেশ অনেক বছর ধরেই রাজ্যে রাম নবমী উপলক্ষ্যে অস্ত্র নিয়ে মিছিল করছেন ‘রাম-ভক্ত’রা। এই মিছিলকে কেন্দ্র করে আগের বছরগুলিতে বিভিন্ন জায়গায় অশান্তির ঘটনাও ঘটেছে।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হচ্ছে, এক সম্প্রদায়ের লোকের উপর অন্য সম্প্রদায়ের লোকেরা হামলা চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু আজ রামনবমীর এই শুভ দিনে হাওড়া জেলায় যে মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখা গেল, এই দৃশ্য মানুষের মনে বেশ অনেকদিন গেঁথে থাকবে বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সেই সঙ্গে লাগাম টানা যাবে সাম্প্রদায়িক হানাহানিতেও, এমনটাই মত সকলের।