এমন আশ্চর্য চুরির গল্প ‘মানি হাইস্ট’, ‘১২ ওসান’-এর মতো প্রথম সারির হলিউড ফিল্মকেও হার মানাবে। তমলুকে মনিহারি দোকানের ক্যাশ বাক্স থেকে উধাও হাজার হাজার টাকা। চোরের চুরির এমন সূক্ষ্মতা যে সিসিটিভিকেও প্রায় ঘোল খাইয়ে দিয়েছিল। দোকানের বিক্রি হওয়া অর্থ ক্যাশ বাক্সে রেখে চলে যায় দোকানের মালিক। সকালে এসে দেখে ক্যাশ বাক্সে টাকা নেই। গায়েব হাজার হাজার টাকা। দোকানের অন্যদের জিজ্ঞেস করেও হদিশ মেলেনি। এতগুলো টাকা কোথায় গেল? CCTV ফুটেজ দেখে প্রথমে যদিও খোঁজ মেলেনি। পরে খুঁটিয়ে দেখতেই রহস্যভেদ ধরা পড়ল আসল চোর। বৃহস্পতিবার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংবাদ শিরোনামে উঠে এসেছে তমলুক শহর।

Trending News : ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখতে পারেন টাকা-পয়সা, এই গ্রামে কখনও চুরি হয় না!

কিন্তু কী সেই ঘটনা?

তমলুকের হাসপাতাল মোড়ে জেলা পরিষদের মার্কেট কমপ্লেক্সেই অমলকুমার মাইতির মশলাপাতির দোকান। বুধবার রাতে দোকানের ক্যাশবাক্সে নগদ ১৩ হাজার টাকা রেখে বাড়ি গিয়েছিলেন তিনি। এদিন সকালে দোকান খুলে চোখ কপালে। ক্যাশবাক্স ফাঁকা। কোনও টাকা নেই। খবর পাওয়ার পর আশপাশের দোকানদাররা ভিড় জমান। কিন্তু, তাদের কোনও পরামর্শই মনপসন্দ হচ্ছিল না অমলবাবুর। একজন বললেন, “তাহলে আর দেরি কেন, এবার পুলিশকে ফোন করুন। অমলবাবুর দোকানে চার-চারটি সিসিটিভি ক্যামেরা। পুলিশকে ফোন করার আগে দোকানের ফুটেজ দেখবেন বলে ঠিক করলেন অমলবাবু। চালানো হল ফুটেজ। অস্বাভাবিক কিছু ধরা পড়ল না। দোকানের এক কর্মচারী রাতে সেখানে থাকেন। তাঁকেও ফুটেজে দেখা যাচ্ছিল না। তাছাড়া কাউকে অকারণে দোষারোপ করতেও নারাজ অমলবাবু। ফলে টাকা হারানোর শোকে হতাশ হয়ে পড়েন তিনি।

OMR Sheet : গড়িয়াহাটে জুতোর দোকানের সামনে পড়ে OMR শিট!

ফের কয়েকজনের পরামর্শে আবারও ফুটেজ দেখার পরিকল্পনা করেন সকলে। সবাই আরও খুঁটিয়ে দেখতে শুরু করেন সকলে। সারারাতের ফুটেজ দেখতে দেখতে হাই উঠতে শুরু করল সবার। কিন্তু চোরের দেখা নেই। সিসিটিভির ঘড়িতে রাত শেষ হয়ে সকাল সাতটা। হঠাৎ একজন চিৎকার করে উঠলেন- ”এক মিনিট। এক মিনিট। তাঁর কথা শুনে ফুটের রিওয়াইন্ড হল একটু। আর শনাক্ত হল অপরাধীও।”

সিসিটিভি-তে দেখা গেল চোর বাবাজিটি আর কেউ নয়, বেশ হৃষ্টপুষ্ট সাইজের একটি ইঁদুর। ক্যাশবাক্সে সামান্য একটু ফাঁক আবিষ্কার করেছে সে। তারপর তাতে মুখ গলিয়ে একের পর এক নোট বের করছে মূষিক চোর। কখনও একটা। কখনও এক গোছা নোট বের করে নেয় সে। তারপর দেখা গেল নোট মুখে করে তড়বড় করে চারপেয়ে হেঁটে যাচ্ছে দোকানের এক কোণে। সেখানে গচ্ছিত রাখছে চোরাই টাকা। যাচ্ছে আর আসছে। এই করতে করতে ক্যাশবাক্স প্রায় ফাঁকা হতেই সেঁধিয়ে গেল গর্তে।

Duragapur News : হাসপাতালের বেডে বসে হাজার হাজার টাকা গুণছেন বৃদ্ধ! দুর্গাপুরের ঘটনায় চক্ষু চড়কগাছ
এরপর খোঁজ খোঁজ। ইঁদুরের সেই গোপন সিন্দুকের সন্ধান অবশেষে মিলল। পাওয়া গেল ১২ হাজার ৭০০ তারাও। সিদ্ধিদাতার বাহন বলেই বোধহয় ব্যবসায়ী অমলকুমার খুব একটা আমল দিলেন না বিষয়টিকে। এরও একটা কৃতজ্ঞতা বোধ রয়েছে। দোকানের খাচ্ছে, পরছে। তাই হয়তো নোটগুলো নিয়ে বাইরে ফেলে। আসেনি। সেটা করলে আর পেতাম না’ মুচকি হেসে বললেন অমলবাবু।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *