কিন্তু কী সেই ঘটনা?
তমলুকের হাসপাতাল মোড়ে জেলা পরিষদের মার্কেট কমপ্লেক্সেই অমলকুমার মাইতির মশলাপাতির দোকান। বুধবার রাতে দোকানের ক্যাশবাক্সে নগদ ১৩ হাজার টাকা রেখে বাড়ি গিয়েছিলেন তিনি। এদিন সকালে দোকান খুলে চোখ কপালে। ক্যাশবাক্স ফাঁকা। কোনও টাকা নেই। খবর পাওয়ার পর আশপাশের দোকানদাররা ভিড় জমান। কিন্তু, তাদের কোনও পরামর্শই মনপসন্দ হচ্ছিল না অমলবাবুর। একজন বললেন, “তাহলে আর দেরি কেন, এবার পুলিশকে ফোন করুন। অমলবাবুর দোকানে চার-চারটি সিসিটিভি ক্যামেরা। পুলিশকে ফোন করার আগে দোকানের ফুটেজ দেখবেন বলে ঠিক করলেন অমলবাবু। চালানো হল ফুটেজ। অস্বাভাবিক কিছু ধরা পড়ল না। দোকানের এক কর্মচারী রাতে সেখানে থাকেন। তাঁকেও ফুটেজে দেখা যাচ্ছিল না। তাছাড়া কাউকে অকারণে দোষারোপ করতেও নারাজ অমলবাবু। ফলে টাকা হারানোর শোকে হতাশ হয়ে পড়েন তিনি।
ফের কয়েকজনের পরামর্শে আবারও ফুটেজ দেখার পরিকল্পনা করেন সকলে। সবাই আরও খুঁটিয়ে দেখতে শুরু করেন সকলে। সারারাতের ফুটেজ দেখতে দেখতে হাই উঠতে শুরু করল সবার। কিন্তু চোরের দেখা নেই। সিসিটিভির ঘড়িতে রাত শেষ হয়ে সকাল সাতটা। হঠাৎ একজন চিৎকার করে উঠলেন- ”এক মিনিট। এক মিনিট। তাঁর কথা শুনে ফুটের রিওয়াইন্ড হল একটু। আর শনাক্ত হল অপরাধীও।”
সিসিটিভি-তে দেখা গেল চোর বাবাজিটি আর কেউ নয়, বেশ হৃষ্টপুষ্ট সাইজের একটি ইঁদুর। ক্যাশবাক্সে সামান্য একটু ফাঁক আবিষ্কার করেছে সে। তারপর তাতে মুখ গলিয়ে একের পর এক নোট বের করছে মূষিক চোর। কখনও একটা। কখনও এক গোছা নোট বের করে নেয় সে। তারপর দেখা গেল নোট মুখে করে তড়বড় করে চারপেয়ে হেঁটে যাচ্ছে দোকানের এক কোণে। সেখানে গচ্ছিত রাখছে চোরাই টাকা। যাচ্ছে আর আসছে। এই করতে করতে ক্যাশবাক্স প্রায় ফাঁকা হতেই সেঁধিয়ে গেল গর্তে।
এরপর খোঁজ খোঁজ। ইঁদুরের সেই গোপন সিন্দুকের সন্ধান অবশেষে মিলল। পাওয়া গেল ১২ হাজার ৭০০ তারাও। সিদ্ধিদাতার বাহন বলেই বোধহয় ব্যবসায়ী অমলকুমার খুব একটা আমল দিলেন না বিষয়টিকে। এরও একটা কৃতজ্ঞতা বোধ রয়েছে। দোকানের খাচ্ছে, পরছে। তাই হয়তো নোটগুলো নিয়ে বাইরে ফেলে। আসেনি। সেটা করলে আর পেতাম না’ মুচকি হেসে বললেন অমলবাবু।