পুলিশ সূত্রে খবর, গত বৃহস্পতিবার মারগ্রাম কালিদহ সেতুর কাছে এক মোটর বাইক আরোহীর কাছ থেকে পাঁচটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করে মারগ্রাম থানার পুলিশ। সঙ্গে সঙ্গে গ্রেফতারও করা হয় ওই ব্যক্তিকে। তাকে আদালতে পেশ করে সাত দিনের হেফাজতে নেয় পুলিশ। তারপর থেকেই শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ। আর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের অস্ত্র কারখানার হদিশ পায় পুলিশ।
এরপর মারগ্রাম থানার পুলিশ যোগাযোগ করে মুর্শিদাবাদের ভরতপুর থানা পুলিশের সঙ্গে। তারপরেই শনিবার গভীর রাতে মারগ্রাম থানার পুলিশ ওসি জাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে অভিযান চালায় ভরতপুর থানার শুনিয়া গ্রামে। সেখানেই স্থানীয় বাসিন্দা মুর্শেদ শেখের বাড়ির শৌচাগার সংলগ্ন একটি গোপন ঘর থেকে অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে আরও জানা যায়, বাড়ির শৌচালয় লাগোয়া ওই ঘরটিতেই তৈরি হতো আগ্নেয়াস্ত্র। এরপর মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, নদিয়া জেলা সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করা হতো সেই আগ্নেয়াস্ত্রগুলি। বিভিন্ন অস্ত্র পাচারকারীর সঙ্গে ওই ব্যক্তির যোগাযোগ ছিল বলে জানা গিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই ধৃত ব্যক্তি অস্ত্র তৈরির ব্যবসায় যুক্ত ছিল বলে পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে।
এছাড়াও জানা গিয়েছে, ২০১৬ সালে জেলবন্দি থাকাকালীন বেশ কয়েকজন দুষ্কৃতীর সংস্পর্শে আছে ধৃত মুর্শেদ। পরে তাদের হাত ধরেই অস্ত্র কারবার শুরু করে মুর্শেদ। এখনও ওই দুষ্কৃতিরা মুর্শিদের বাড়ির গোপন কারখানায় এসে অস্ত্র তৈরি করত। তারপর সেখান থেকে অস্ত্র নিয়ে ছড়িয়ে পড়ত বিভিন্ন জেলার। মুর্শেদকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে আরও জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে যাওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। সেক্ষেত্রে বিভিন্ন অস্ত্র পাচারকারীর সন্ধান মিলবে বলেই ধারণা মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশের।
গত কয়েক মাসে মুর্শিদাবাদ জেলার বিভিন্ন জায়গায় থেকে বেআইনি অস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। স্বাভাবিকভাবেই পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এরকম অস্ত্র কারখানার হদিশ পুলিশের বড় সাফল্য বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।