রবিবার সিউড়ির সেচ কলোনির মাঠে তৃণমূলের সভা ছিল। সেখানে ফিরহাদ বলেন, “সংখ্যালঘু ভাইবোনদের বলতে চাই, সিপিএমের বড় বড় নেতারা (প্রশ্ন তুলছেন), তৃণমূল কী করল? তৃণমূলকে ভোট দিয়ে লাভ কী হলো? তৃণমূলকে আর ভোট নয়, সব ভোট সিপিএমকে দাও — এ সব কথা বলছেন। কিন্তু বিজেপির সঙ্গে (সিপিএমের) লড়াইয়ের ক্ষমতা আছে? বিজেপির সঙ্গে মমতার মতো চোখে চোখ রেখে লড়াইয়ের ক্ষমতা আছে? তখন সবাই মিলে আন্ডারগ্রাউন্ড অ্যাডজাস্টমেন্ট করবে।”
ক্ষমতার প্রশ্নের পাশাপাশি ভোটের সময়ে রাম-বাম সমঝোতা হয়ে যাবে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করে সংখ্যালঘু জনতার উদ্দেশে ফিরহাদের সতর্কবার্তা, “যদি একবার আপনারা সেই ভুল (বামেদের সমর্থন) করেন, তা হলে আগামী দিনে তার খেসারত দিতে হবে। বাংলা হয়ে যাবে উত্তরপ্রদেশ। তাই যাঁদের পরিত্যাগ করেছেন, তাঁদের পরিত্যাগ করে দিন। তাঁদের আর নেবেন না।”
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের তথ্য বিশ্লেষণ করে বোঝা গিয়েছে, জোড়াফুলকে ঢেলে ভোট দিয়েছে সংখ্যালঘু জনতা। কিন্তু মাস কয়েক আগে সাগরদিঘির উপনির্বাচনে তৃণমূল পরাজিত হয়। হাওড়ায় আনিস খানের মৃত্যু, বগটুইয়ে অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যু, নওশাদ সিদ্দিকির গ্রেপ্তারি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে বলে বিরোধী দলগুলির দাবি।
সাগরদিঘিতে জয়ী হয়েছেন বাম-কংগ্রেসের প্রার্থী। এই পরিস্থিতিতে রবিবার ফিরহাদের এই সতর্কবার্তা তৃণমূলের সংখ্যালঘু ভিত ধরে রাখার জন্য কি না, সে প্রশ্ন উঠেছে।
সিপিএম রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য শমীক লাহিড়ি এ প্রসঙ্গে বলেন, “বামফ্রন্টের ৩৪ বছরে বাংলায় আরএসএস-বিজেপি মাথা তুলতে পারেনি। বিজেপির সঙ্গে বোঝাপড়া রয়েছে বলে তৃণমূলের দুর্নীতিগ্রস্ত সরকার টিকে আছে। তৃণমূল-বিজেপির সমঝোতা মানুষ ধরে ফেলেছে। তাই ফিরহাদ হাকিমরা শঙ্কিত হয়ে শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে চাইছেন।”
বাম-কংগ্রেস নেতৃত্বের বক্তব্য, শুধু বীরভূম নয়। মালদা, মুর্শিদাবাদ, উত্তর দিনাজপুর-সহ বেশ কিছু জেলায় তৃণমূলের পাশ থেকে সংখ্যালঘু জনতা সরে যাচ্ছে বলে দাবি এদের। যদিও তৃণমূল নেতৃত্ব সাগরদিঘির উপনির্বাচনকে ব্যতিক্রমী ঘটনা বলে মনে করেন। সংখ্যালঘু জনতা মমতার পাশেই রয়েছে বলে জোড়াফুল নেতৃত্বের পর্যবেক্ষণ।
সিউড়ির সভায় ফিরহাদ এ দিন বলেন, “বিশ্বাস করতে হলে একমাত্র মমতাকে বিশ্বাস করুন। কারণ সংখ্যালঘু, সংখ্যাগুরু, তফসিলি জাতি ও উপজাতিদের উন্নয়নের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৬৭টি প্রকল্প করেছেন। সবার জন্য যাঁর মন কাঁদে, তিনি মমতা। তিনি বাংলার উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।”