পরিসংখ্যানও সেই ইঙ্গিত দিচ্ছে। গত ৬ দিনে রাজ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। যাঁদের ৬ জনেরই বয়স ৮০ বছরের উপরে। সোমবারও নতুন করে হাসপাতালে যে ২০ জন ভর্তি হয়েছেন, তাঁদের ১৫ জনের বয়স ৭০ বছরের বেশি। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের সব জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ষাটোর্ধ্বরা যেন বাড়তি সতর্কতা মেনে চলেন সে বিষয়ে প্রচার চালাতে।
চিকিৎসা পরিকাঠামোও বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। একইসঙ্গে বলা হয়েছে, টেস্টের সংখ্যা অন্তত ৩০ শতাংশ বাড়ানোর। কারণ, টেস্ট না বাড়ালে উপসর্গহীনদের চিহ্নিত করা সম্ভব নয়। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অরুণাভ সেনগুপ্তর বক্তব্য, ‘অতীতে আমরা দেখেছি, সংক্রমণ ঠেকানোর ক্ষেত্রে টেস্ট বাড়িয়ে সুফল মিলেছে। বর্তমানে যা দৈনিক সংক্রমণের হার, তা কমানোর জন্য টেস্ট বাড়ানো খুবই প্রয়োজন।’
রবিবার ছুটির দিন হলেও গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা একশো পেরিয়েছে। সোমবার রাজ্যে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১৩০ জন। সংক্রমণের হারও সামান্য বেড়েছে। রবিবার ছিল ১৮.৭৪ শতাংশ। যা এ দিন বেড়ে হয়েছে ১৮.৯৫ শতাংশ। বর্তমানে রাজ্যে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১৪৩৫ জন। হাসপাতালে ভর্তি ৭০ জন। এদিন নতুন করে মৃত্যুর খবর মেলেনি।
চিকিৎসকরা অবশ্য বলছেন, রাজ্যে সঙ্কটজনক রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। যাঁদের সিংগভাগই প্রবীণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) দেশে সংক্রমণ বাড়তেই বুস্টার ডোজ়ের উপর জোর দেওয়ার কথা বলেছে। সংক্রমণ বাড়তে মানুষও ভিড় করছেন টিকাকরণ কেন্দ্রে। কিন্তু, জোগান না থাকায় কিছুদিন ধরেই রাজ্যের সব সরকারি টিকা কেন্দ্রেই বুস্টার ডোজ় বন্ধ।
স্বাস্থ্যভবনের এক কর্তা বলেন, ‘কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রককে আমরা চিঠি দিয়েছি। টিকা কবে আসবে সে বিষয়ে আমরাও অন্ধকারে। ফলে, যাবতীয় পরিকাঠামো থাকলেও টিকাকরণ প্রায় বন্ধ।’ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ দীপক দাস বলছেন, ‘রাজ্যে করোনা আক্রান্তদের জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ে ওমিক্রমণের আর একটি উপপ্রজাতি ‘এক্সবিবি.১.৫’ (ক্র্যাকেন)-র কথা উঠে এসেছে।
যার সংক্রমণ ছড়ানোর ক্ষমতা একটু কম। তবে প্রবীণদের অনেকেরই শারীরিক নানা সমস্যার থাকার কারণে ভাইরাস সহজেই কাবু করতে পারছে।’ ষাটোর্ধ্বদের তাই বাইরে বেরোলেই মাস্ক পরার পাশাপাশি দুরত্ববিধি মেনে চলা উচিত, পরামর্শ ওই চিকিৎসকের।