এই সময়:ফের উপসর্গহীনরাই চিন্তা বাড়াচ্ছে স্বাস্থ্য ভবনের। স্বাস্থ্য ভবন সূত্রের খবর, গত ১৫ দিনে রাজ্যে করোনা আক্রান্তদের ৯০ শতাংশই উপসর্গহীন। আক্রান্তদের ৬৭ শতাংশের বয়স ১৮ থেকে ৪০ মধ্যে। রাস্তায় বেরিয়েই তাঁরা সংক্রামিত হচ্ছেন বলে মনে করছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। এঁদের ইমিউনিটি তুলনামূলক ভাবে বেশি হওয়ায় কোনও সমস্যা না-হলেও, এই উপসর্গহীন আক্রান্তদের মাধ্যমে অজান্তেই রোগ ছড়িয়ে পড়েছে বাড়ির প্রবীণ সদস্যদের মধ্যে। যাঁদের অনেকেই আবার কো-মর্বিডিটি থাকায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।

Corona In Bengal : বাংলায় ফের ভয় ধরাচ্ছে করোনা, একদিনে বেলেঘাটা আইডিতে মৃত্যু ৩ কোভিড আক্রান্তর
পরিসংখ্যানও সেই ইঙ্গিত দিচ্ছে। গত ৬ দিনে রাজ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। যাঁদের ৬ জনেরই বয়স ৮০ বছরের উপরে। সোমবারও নতুন করে হাসপাতালে যে ২০ জন ভর্তি হয়েছেন, তাঁদের ১৫ জনের বয়স ৭০ বছরের বেশি। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের সব জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ষাটোর্ধ্বরা যেন বাড়তি সতর্কতা মেনে চলেন সে বিষয়ে প্রচার চালাতে।

India Covid Cases : ১১ হাজার ছাড়াল দেশের দৈনিক করোনা সংক্রমণ, এক সপ্তাহে বাংলায় দ্বিগুণ করোনা?
চিকিৎসা পরিকাঠামোও বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। একইসঙ্গে বলা হয়েছে, টেস্টের সংখ্যা অন্তত ৩০ শতাংশ বাড়ানোর। কারণ, টেস্ট না বাড়ালে উপসর্গহীনদের চিহ্নিত করা সম্ভব নয়। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অরুণাভ সেনগুপ্তর বক্তব্য, ‘অতীতে আমরা দেখেছি, সংক্রমণ ঠেকানোর ক্ষেত্রে টেস্ট বাড়িয়ে সুফল মিলেছে। বর্তমানে যা দৈনিক সংক্রমণের হার, তা কমানোর জন্য টেস্ট বাড়ানো খুবই প্রয়োজন।’

রবিবার ছুটির দিন হলেও গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা একশো পেরিয়েছে। সোমবার রাজ্যে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১৩০ জন। সংক্রমণের হারও সামান্য বেড়েছে। রবিবার ছিল ১৮.৭৪ শতাংশ। যা এ দিন বেড়ে হয়েছে ১৮.৯৫ শতাংশ। বর্তমানে রাজ্যে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১৪৩৫ জন। হাসপাতালে ভর্তি ৭০ জন। এদিন নতুন করে মৃত্যুর খবর মেলেনি।

Corona Update In West Bengal : দুশো ছুঁইছুঁই বাংলায় চিন্তা পজ়িটিভিটি রেট
চিকিৎসকরা অবশ্য বলছেন, রাজ্যে সঙ্কটজনক রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। যাঁদের সিংগভাগই প্রবীণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) দেশে সংক্রমণ বাড়তেই বুস্টার ডোজ়ের উপর জোর দেওয়ার কথা বলেছে। সংক্রমণ বাড়তে মানুষও ভিড় করছেন টিকাকরণ কেন্দ্রে। কিন্তু, জোগান না থাকায় কিছুদিন ধরেই রাজ্যের সব সরকারি টিকা কেন্দ্রেই বুস্টার ডোজ় বন্ধ।

স্বাস্থ্যভবনের এক কর্তা বলেন, ‘কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রককে আমরা চিঠি দিয়েছি। টিকা কবে আসবে সে বিষয়ে আমরাও অন্ধকারে। ফলে, যাবতীয় পরিকাঠামো থাকলেও টিকাকরণ প্রায় বন্ধ।’ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ দীপক দাস বলছেন, ‘রাজ্যে করোনা আক্রান্তদের জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ে ওমিক্রমণের আর একটি উপপ্রজাতি ‘এক্সবিবি.১.৫’ (ক্র্যাকেন)-র কথা উঠে এসেছে।

Corona Booster Dose : নয়া ভ্যারিয়েন্ট রুখতে কতটা লাভ পুরোনো টিকার বুস্টারে?
যার সংক্রমণ ছড়ানোর ক্ষমতা একটু কম। তবে প্রবীণদের অনেকেরই শারীরিক নানা সমস্যার থাকার কারণে ভাইরাস সহজেই কাবু করতে পারছে।’ ষাটোর্ধ্বদের তাই বাইরে বেরোলেই মাস্ক পরার পাশাপাশি দুরত্ববিধি মেনে চলা উচিত, পরামর্শ ওই চিকিৎসকের।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version