Uttar 24 Pargana : ট্রেনে কাটা পড়েছে অর্ধেক দেহ! ব্যবসা করেই নিজের ‘হাত’-এ দাঁড়ানোর কঠিন লড়াই দেবাশিসের – physically challenged young man doing his own business to be successful in life


কোমরের নীচ থেকে নেই দেহের বাকি অংশ। কোনও এক দুর্ঘটনা কেড়ে নিয়েছে সবটা। কিন্তু তাসত্ত্বেও জীবনযুদ্ধ হার মানেননি যুবক চলার পথে সম্বল একমাত্র দুটি হাত। দু’হাতের উপর ভরসা করেই জীবনের লড়াই লড়ছেন উত্তর ২৪ পরগনার নিউ ব্যারাকপুরের বাসিন্দা দেবাশিস সর্দার। মনের জোরে অসম্ভবকে যে সম্ভব করা যায়, তাঁর জলজ্যান্ত প্রমাণ ২৯ বছর বয়সী এই যুবক।

Raiganj News : এক ফোনে দুয়ারে গাড়ি! বাবা হারনোর দুঃখ নিয়েই গরিব মানুষের পাশে সফিকুলদা
নিউ ব্যারাকপুরে রেল লাইনের পাশে দেবাশিসের বাড়ি। দুর্ঘটনা প্রতিবন্ধীর তকমা দিলেও অন্য কারও সাহায্যের ভরসা বা মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে রাজি নন। দিন গুজরান করতে বাড়ির বাইরে বসেই ফুল বিক্রি করেন দেবাশিস। শুধু তাই নয় দু’হাতের উপর ভর করে ট্রেনে চেপে সে প্রতিদিন ঠাকুরনগর চলে যেতে হয় দেবাশিসকে। সেখান থেকে ফুল কিনে এনে বিক্রি করেন। এভাবেই গত পাঁচ বছর ধরে চলছে তাঁর লড়াই। প্রতিবন্ধকতা কোনওভাবেই থামিয়ে রাখতে পারেনি তাঁকে।

দেবাশিস জন্ম থেকে বিশেষভাবে সক্ষম, এমনটা কিন্তু নয়। পাঁচ বছর আগেও বাকিদের মতো স্বাভাবিক জীবন যাপন করত সে। দ্বাদশ শ্রেণি অবধি পড়াশোনাও করেছে সে। কিন্তু হঠাৎ মানসিক অবসাদের অন্ধকার তাঁর জীবনে নেমে আসে। ক্রমশই সকলের অপছন্দের পাত্র হয়ে উঠতে থাকে। সিদ্ধান্ত নেন, এই জীবন আর রেখে কোনও লাভ নেই। একদিন আচমকাই সকলের নজর এড়িয়ে সটান আতহত্যার জন্য রেললাইনে দাঁড়িয়ে পড়েন।

Orchid Farming: রাজ্যে থাইল্যান্ডের অর্কিড চাষে সাফল্য, লাখ লাখ টাকা আয় সম্ভব! জানুন এক ক্লিকেই
চলন্ত ট্রেনের ধাক্কায় সবটা অন্ধকার। যখন জ্ঞান এল, আলো ফুটল তখন তিনি হাসপাতালে বেড়ে শয্যাশায়ী। নেই দুটো পা। নিজের পায়ে দাঁড়ানোর সব স্বপ্ন মিশে গিয়েছে ধূলোয়। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই শুরু দেবাশিসের। রাস্তার ধারে একটা ছোট্টো কাঠের বাক্সেই তার অস্থায়ী দোকান। কেউ তাঁকে সেখান থেকে তুলে দিলেও তাঁর করার কিছুই নেই।

দুর্ঘটনার পর থেকে অনেকেই তাঁকে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু বাস্তবে তা প্রতিফলিত হয়নি। দেবাশিস জানিয়েছেন, তাঁর কোনও আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন নেই। চলা ফেরার জন্য বিশেষ তিনচাকা গাড়ি আর দোকানের পাকাপাকি বন্দোবস্ত হলেও সে বাকি ব্যবস্থা করে নেবে।

Trending News: তেল ছাড়াই চলবে গাড়ি, মাত্র ৭০ হাজার টাকায় বাহন তৈরি করে চমক শরাফতের
দেবাশিস বলেন, ‘পাঁচ বছর আগে দুর্ঘটনার কারণে এই অবস্থা। মানসিক অবসাদের কারণে আত্মহত্যার চেষ্টা করি। কিন্তু বেঁচে গিয়েছিলাম। পাঁচ বছর ধরে ফুলের ব্যবসা করছি। ফুলের প্রতি আমার ভালোবাসা রয়েছে। সেই কারণে এই ব্যবসা শুরু করি। ট্রেনে করেই ঠাকুরনগরে গিয়ে ফুল নিয়ে আসি। আমি শুধু চাই, আমার একটা তিনচাকা গাড়ি বন্দোবস্ত করে দেওয়া হোক। এর থেকে বেশি কিছু আমার কোনও দাবি নেই।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *