জানা গিয়েছে, নদিয়ার তেহট্ট ব্লকের পলাশীপাড়া বাসিন্দা গর্ভবতী অসীমা দাস, গত রবিবার তিনি শান্তিপুর হাসপাতালে ভর্তি হন। এর আগে তিনি তিনবার সন্তান ধারণ করেছিলেন। দুর্ভাগ্যজনকভাবে একটি কন্যা সন্তান মারা যায়। বর্তমানে তার দুটি কন্যা সন্তান ছিল। পুত্র সন্তান পাওয়ার আশায় আবারও ওই গৃহবধূ গর্ভধারণ করেন। কিন্তু, এর আগে তিনবার সিজার হওয়ার কারণে চতুর্থ বার প্রসবে সাংঘাতিক প্রাণের ঝুঁকি ছিল ওই গৃহবধূর। অবশেষে শান্তিপুর হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ পবিত্র ব্যাপারীর সহযোগিতায় শান্তিপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় অসীমাকে। চতুর্থ সি সেকশন অর্থাৎ সিজার এদেশে তো বটেই বিদেশে বিরল।
ওই গৃহবধূর জন্য সোমবার একটি মেডিকেল টিম গঠন হয় চিকিৎসক পবিত্র ব্যাপারীর তত্ত্বাবধানে। সফল অস্ত্রোপচারের মধ্য দিয়ে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। ওই গৃহবধূ অসীমা দাসের মা কাজল দাস বলেন, ”চারবার সিজার হওয়ার পর বর্তমানে পুত্র সন্তান হয়েছে। এখন মা এবং ছেলে দুজনেই ভালো রয়েছে। স্বভাবতই আমরা খুশি এবং চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।”
এ বিষয়ে শান্তিপুর হাসপাতালে প্রসূতি চিকিৎসক পবিত্র ব্যাপারী বলেন,” পলাশী পাড়ার বাসিন্দা অসীমা দাস গত পরশুদিন শান্তিপুর হাসপাতালে ভর্তি হন। সচরাচর চার নম্বর সিজার অপারেশন এমন রোগী পাওয়া যায় না বললেই চলে। আমরা বিভিন্ন আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলেছি এবং আমার চিকিৎসা জীবনে এই প্রথম আমি চার নম্বর সিজার করলাম। খুব বেশি হলে তিন নম্বর সিজারের কেসও আমরা খুব কম পেয়ে থাকি। এই জায়গায় চার নম্বর সিজার অনেকটা ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। এই সমস্ত রোগের ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রাণের ঝুঁকি থাকে। সেই কারণে বিভিন্ন সময় এই ধরনের রোগীকে মেডিক্যাল হাসপাতালে স্থানান্তর করিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। যেহেতু তিনি গর্ভবতী ছিলেন সেই কারণেই তাকে একটি ঝুঁকির মধ্যে দিয়েই স্টেট জেনারেল হাসপাতালের মত পরিকাঠামোর মধ্যে অস্ত্রোপচার করা হয়। তবে খুশির খবর বর্তমানে মা এবং ছেলে দুজনেই ভালো রয়েছে। এই সমস্ত রোগের ক্ষেত্রে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। সেই কথা মাথায় রেখেই একটি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয় এবং যাতে রক্তের অভাব না পড়ে সেই দিকে ও নজর রাখা হয়েছিল হাসপাতালে তরফে।”
চিকিৎসক পবিত্র বেপারী আরও বলেন, ” এই প্রথম স্বল্প পরিকাঠামো যুক্ত হাসপাতালে এই ধরনের অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে।” তবে এই রকম ভাবে জীবনে ঝুঁকি নিয়ে কেউ যেন আর সন্তান নেওয়ার চিন্তাভাবনা না করে তারও অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।