Panchayat Election 2023 : শক্তিবৃদ্ধি? বহু জেলায় পদ্মের থেকে বেশি প্রার্থী বামের – panchayat election 2023 cpim left behind bjp on number of candidates in many districts election23


মণিপুষ্পক সেনগুপ্ত
বামেদের উত্থান সম্পর্কে কলকাতায় এসে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন বিজেপির শীর্ষ নেতা অমিত শাহ। তাঁর সঙ্গে সহমত হয়েছিলেন বঙ্গ-বিজেপি নেতৃত্বও। আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থীদের পরিসংখ্যান ঘেঁটে বিজেপির সেই উদ্বেগ আরও বেড়েছে। রাজ্যের অনেকে জেলাতেই প্রার্থী সংখ্যার নিরিখে বিজেপিকে পিছনে ফেলে দিয়েছে বামেরা।

সংশ্লিষ্ট জেলাগুলির দলীয় নেতৃত্বের কাছে এর ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে বলে বিজেপি সূত্রে খবর। তবে এবারে সন্ত্রাসের অজুহাত যে দেওয়া যাবে না, সেটা জেলার বিজেপি নেতারা বিলক্ষণ বুঝে গিয়েছেন। কারণ, একই রাজনৈতিক আবহে বামেরা তাদের থেকে বেশি মনোনয়ন জমা দিয়েছে।

Panchayat Election : ‘অভিভাবকহীন’ দক্ষিণ ২৪-ই লাস্ট, মনোনয়নের ময়নাতদন্তে পদ্ম
মনোনয়ন প্রত্যাহার পর্ব শেষে দেখা যাচ্ছে মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, উত্তর ২৪ পরগনা, দুই বর্ধমান, হুগলি এবং হাওড়া এই সাতটি জেলায় সিপিএম তুলনায় বেশি প্রার্থী দিতে পেরেছে। যেমন, মুর্শিদাবাদে গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে বিজেপি প্রার্থীর সংখ্যা ১৬৬০। সেখানে সিপিএম প্রার্থী ২৯৭৪ জন। নদিয়া জেলায় গ্রাম পঞ্চায়েতে বিজেপি প্রার্থী দিতে পেরেছে ২৯১৩টি আসনে।

সিপিএম ওই জেলায় ৩০৯১টি আসনে প্রার্থী দিয়ে পদ্মকে পিছনে ফেলে দিয়েছে। একইভাবে উত্তর ২৪ পরগনায় গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে বিজেপি প্রার্থীর সংখ্যা ২১৩২। সেখানে সিপিএমের প্রার্থী সংখ্যা ২৪৩১। পূর্ব বর্ধমানে ৪০১০টি গ্রাম পঞ্চায়েত আসনের মধ্যে বিজেপি ১৮৩৯টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে।

ওই জেলায় গ্রাম পঞ্চায়েতে সিপিএম প্রার্থীর সংখ্যা ২৮২৭। পশ্চিম বর্ধমানেও গ্রাম পঞ্চায়েতের ৪৭২টি আসনে বিজেপি প্রার্থী দিতে পেরেছে। সিপিএম ওই জেলায় ৬৫৪টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে।

Panchayt Election Nandigram : শুভেন্দুর গর্জনই সার! নন্দীগ্রামে ‘অমিল’ গেরুয়া প্রার্থী, নির্দলই শেষ ভরসা BJP-র
গত লোকসভা নির্বাচন পর থেকে বিজেপি দাবি করে আসছে হুগলিতে তাদের সংগঠন যথেষ্ট মজবুত। কিন্তু সেখানেও জিপিতে বিজেপির প্রার্থী সংখ্যা সিপিএমের থেকে সামান্য বেশি। শুধু গ্রাম পঞ্চায়েতেই নয়, পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদে প্রার্থী দেওয়ার নিরিখেও এই জেলাগুলিতে বিজেপিকে টেক্কা দিয়েছে সিপিএম। হাওড়ায় পঞ্চায়েত সমিতিতে সিপিএম ৭ জন প্রার্থী বেশি দিয়েছে বিজেপির থেকে।

এখন প্রশ্ন হল, এই সাত জেলায় সিপিএমের প্রার্থী সংখ্যা কী ভাবে বিজেপির থেকে বেড়ে গেল? সন্ত্রাসের যুক্তি এক্ষেত্রে টিকবে না। কারণ, তা হলে সিপিএমও প্রার্থী দিতে পারত না। তবে রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, গ্রাম-গঞ্জে সিপিএমের সক্রিয়তা ইদানীং বেড়েছে। কমেছে গেরুয়া নেতা-কর্মীদের তৎপরতা।

ফলে ২০১৮ পঞ্চায়েত ভোটের সময়কাল থেকে সিপিএম ছেড়ে বিজেপিতে নাম লেখানোর যে প্রবণতা শুরু হয়েছিল, এখন তার উলটপুরাণ শুরু হয়েছে। তৃণমূল বিরোধী লড়াইয়ে টিকে থাকার জন্য বিজেপিকে আর বিশ্বাসযোগ্য মঞ্চ মনে করছেন না তৃণমূল বিরোধী নিচুতলার রাজনৈতিক কর্মীরা।

WB Panchayat Election: ১৯-এর গেরুয়া গড়ে আঠারোর পুনরাবৃত্তি, অভিষেক আশ্বাসের বিপরীতে বাঁকুড়ায় ফের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়
যার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে সাত জেলায় বিরোধী প্রার্থীর পরিসংখ্যানে। তা ছাড়া বিভিন্ন জেলায় এতদিন যে সিপিএম কর্মীরা অন্য দলে না গিয়ে রাজনৈতিকভাবে নিষ্ক্রিয় ছিলেন, তাঁদেরও অনেককে এ বারের পঞ্চায়েত ভোটে সক্রিয় হতে দেখা গিয়েছে।

২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে ৩৮ শতাংশ ভোট পেয়ে বিজেপি সবার নজর কেড়েছিল। কিন্তু পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়নের পরিসংখ্যান জানান দিচ্ছে, বেশ কিছু জেলায় বিজেপির সেই ৩৮ শতাংশ ভোট ব্যাঙ্কে বামেরা ইতিমধ্যেই থাবা বসিয়ে দিয়েছে।

Panchayat Election 2023 : জমার পরে প্রত্যাহার, মনোনয়ন ঘিরে উত্তাপ
বিজেপির অন্দরে এনিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়লেও প্রকাশ্যে সাত জেলায় সিপিএমের শক্তিবৃদ্ধির কথা মানতে চাইছে না তারা। বিজেপির পাল্টা যুক্তি, তৃণমূলের মদতেই ওই জেলাগুলিতে বেশি প্রার্থী দিতে পেরেছে সিপিএম।

রাজ্য বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যর কথায়, “বিরোধী ভোট ভাগ করতেই তৃণমূল কৌশলে সিপিএমকে সাহায্য করছে। যে জেলাগুলিতে সিপিএম আমাদের থেকে বেশি প্রার্থী দিয়েছে, সেখানে বামেদের সংগঠনের ছিঁটেফোটাও নেই।”

এ প্রসঙ্গে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শমীক লাহিড়ির দাবি, “বিজেপির প্রার্থীর অধিকাংশই বিক্ষুব্ধ তৃণমূল। ভোটে জিতে গেলে ঘরের ছেলে আবার ঘরে ফিরে যাবে।”



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *