বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জুলাইয়ের শেষে এমনটা হওয়া খুব বিচিত্র নয়। বরং অগস্টে এই পরিসংখ্যানের আরও অনেকটা অবনতি হতে পারে। কেননা ডেঙ্গির এটাই আসল মরশুম। যদিও চিকিৎসকদের চিন্তা বাড়িয়েছে পর পর দু’টি বছরের তুলনামূলক পরিসংখ্যান। গত বছর ৩০তম সপ্তাহের শেষে যেখানে রাজ্যজুড়ে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ২৪৫০ জন, সেখানে ওই একই সময়কালে এ বছর আক্রান্তের সংখ্যা ৩৩৬৯ জন। স্বাস্থ্যকর্তারা জানাচ্ছেন, এ বছর পর্যাপ্ত ভারী বৃষ্টি না হওয়ার কারণেই এমনটা হয়েছে। টানা ভারী বৃষ্টিতে ডেঙ্গির বাহক এডিস মশার লার্ভা ধুয়ে যায়। কিন্তু এ বছর বৃষ্টি হলেও পর্যাপ্ত বৃষ্টি হয়নি। ফলে জমা জল বড় মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে স্বাস্থ্য ও পুরকর্তাদের।
ডেঙ্গি বরাবরই শহুরে সংক্রমণ বলে পরিচিত। কিন্তু করোনা-পর্বের আগে থেকেই দেখা গিয়েছিল, শহর পেরিয়ে ডেঙ্গির সংক্রমণ ছড়িয়েছে গ্রামাঞ্চলেও। গত বছরেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। কিন্তু এ বছর দেখা যাচ্ছে, শহর হোক বা গ্রাম, দু’ক্ষেত্রেই ব্যাপক ভাবে ডেঙ্গি ছড়িয়েছে। শুধু তা-ই নয়, শহরকে পিছনে ফেলেছে গ্রাম। স্বাস্থ্য দপ্তরের ৩০তম সপ্তাহের হিসেব বলছে, ডেঙ্গির প্রকোপ ৭২% গ্রামাঞ্চলে ও মাত্র ২৮% শহরাঞ্চলে। সামগ্রিক ভাবে জেলা হোক বা পুর-এলাকা কিংবা ব্লক- সব ক্ষেত্রেই সংক্রমণের নিরিখে সবাইকে পিছনে ফেলেছে নদিয়া জেলা। আর তার পরেই রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা ও মুর্শিদাবাদ।
স্বাস্থ্যভবনের একটি সূত্র জানাচ্ছে, সামগ্রিক ভাবে জেলা হিসেবে চলতি বছরে নদিয়া (৭০৩) এখনও সংক্রমণের শীর্ষে সারা রাজ্যে। আবার পুর ও পঞ্চায়েত সমিতি এলাকার নিরিখেও পয়লা নম্বরে এই জেলার রানাঘাট পুরসভা (৫৭) এবং রানাঘাট ব্লক-১ (১৬)। যে পাঁচ-ছ’টি ব্লকে এ বছর ডেঙ্গি সবচেয়ে বেশি হানা দিয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে রানাঘাট-২, হাঁসখালি, হরিনঘাটা, শান্তিপুর, কৃষ্ণনগর-১। অর্থাৎ স্পষ্ট, শুধু পুর এলাকাই নয়, গ্রামীণ এলাকাতেও ডেঙ্গির প্রকোপ সবচেয়ে বেশি এবার নদিয়া জেলায়।